যুদ্ধকালীন অর্থনীতি ফুলে ফেঁপে ওঠায় রাশিয়াকে ‘উচ্চ আয়ের দেশ’-এ উন্নীত করেছে বিশ্বব্যাংক
চলমান রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের দুই বছর অতিবাহিত হয়েছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর থেকে গত দুই বছরে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার প্রভাব কাটিয়ে নিজেদের অর্থনীতিকে আবারও চাঙ্গা করে তুলেছে রাশিয়া। দেশটির যুদ্ধকালীন অর্থনীতি এতটাই ভালো অবস্থানে আছে যে, বিশ্বব্যাংক রাশিয়াকে 'উচ্চ আয়ের দেশ'-এ উন্নীত করেছে।
বিশ্বব্যাংক-এর অর্থনীতিবিদদের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে সোমবার (১ জুলাই) রাশিয়াকে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ থেকে উচ্চ আয়ের দেশ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
বিশ্বব্যাংকের অর্থনীতিবিদরা তাদের প্রতিবেদনে লিখেছেন, '২০২৩ সালে রুশ সামরিক অভিযান বৃদ্ধির ফলে দেশটির অর্থনীতি ব্যাপক হারে প্রভাবিত হয়েছে।'
গত বছর রুশ নাগরিকরা মোট জাতীয় আয়ের ভিত্তিতে জনপ্রতি ১৪ হাজার ২৫০ ডলার উপার্জন করেছেন।
বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, যুদ্ধকালীন কর্মকাণ্ডের জন্য রুশ সামরিক পণ্য ও পরিষেবার চাহিদা বাড়ায় রাশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটেছে, যা দেশটির বেশ কয়েকটি খাতের উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটিয়েছে।
রাশিয়ার বাণিজ্য গত বছর প্রায় ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সাথে আর্থিক খাত এবং নির্মাণ খাতের বিভিন্ন কার্যক্রম যথাক্রমে ৬.৬ শতাংশ এবং ৩.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে রাশিয়ার প্রকৃত জিডিপি বেড়ে গিয়ে মুদ্রাস্ফীতির সাথে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সামঞ্জস্য তৈরি হয়েছে। এতে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ৩.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য অনেক দরিদ্র রুশ নাগরিকের আর্থিক অবস্থার উন্নতি ঘটায় চলমান যুদ্ধ শেষ করার উপায় খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্বব্যাংক এ বছর রাশিয়া, বুলগেরিয়া এবং পালাউকে মহামারি পরবর্তী সময়ে শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে উচ্চ আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ইউক্রেনও নিম্ন-মধ্যম থেকে উচ্চ-মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে কারণ যুদ্ধকালীন সময়ে দেশটির প্রকৃত জিডিপি ৫.৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, রুশ আগ্রাসন ইউক্রেনের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করলেও দেশটির চলমান পুনর্নির্মাণ উদ্যোগের জন্য নির্মাণ খাতে ২৪.৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এবং বিনিয়োগ খাতে ৫২.৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ইউক্রেনের অর্থনীতিকেও চাঙ্গা করেছে।
এই বছর বিশ্বব্যাংক সাতটি দেশের অর্থনীতিকে উন্নীত অর্থনীতি হিসেবে ঘোষণা দিলেও একমাত্র গাজা ও পশ্চিম তীরের অর্থনৈতিক পতনের ঘোষণা দিয়েছে সংস্থাটি।
বিশ্বব্যাংকের অর্থনীতিবিদদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিম তীর এবং গাজা উচ্চ-মধ্যম আয়ে পরিণত হয়েছে কারণ ইসরায়েলের সাথে সংঘাতের কারণে তাদের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে পশ্চিম তীর ও গাজার প্রকৃত জিডিপি ৫.৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।