সিনহা হত্যায় রিমান্ডে থাকা আসামিরা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন: আশিক বিল্লাহ
''অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় রিমান্ডে থাকা আসামিরা চাঞ্চল্যকর ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। তাদের দেওয়া একজনের তথ্যের সঙ্গে অন্যজনের তথ্য এবং ঘটনা প্রবাহ যাচাই-বাছাই করে তদন্ত কার্যক্রম আরও এগিয়ে নেওয়া হবে। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের দেওয়া তথ্য আপাতত প্রকাশ করা যাবে না।'' মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার তদন্ত কার্যক্রম নিয়ে এমনটা জানান র্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল আশিক।
বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় র্যাব-১৫ এর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, সিনহা হত্যা মামলাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর, গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্য্যপূর্ণ। তাই সতকর্তা, পেশাদারিত্ব ও গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। যা ইতিবাচকভাবে এগুচ্ছে।
তিনি জানান, এই হত্যা মামলার অভিযুক্ত সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও নন্দদুলাল রক্ষিতসহ গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ, প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য, আলামতসহ সংশ্লিষ্ট সামগ্রিক বিষয় নিয়ে এই তদন্ত কার্যক্রম এগিয়ে চলছে।
সংবাদ সম্মেলনে লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, এই মামলার তদন্ত বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ হওয়ার জন্য অভিযুক্তদের বক্তব্য, ঘটনার আলামত, তথ্য-উপাত্ত, প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্যসহ যা যা দরকার সব নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে এসবের অধিকাংশই আমরা সম্পন্ন করেছি। সবশেষ বুধবার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে পুলিশ কর্তৃক জব্দ করা হার্ডডিস্কসহ ২৯টি ডিভাইস আমাদের কাছে হস্তান্তর করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
অন্যদিকে সিনহার বোনের দায়ের করা মামলার নয় অভিযুক্তের মধ্যে যে দুইজন এখনও গ্রেফতার হয়নি তাদের পরিচয় শনাক্তের জন্য পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আবেদন করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
টেকনাফ থানা থেকে সিসিটিভি ফুটেজ গায়েব প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে র্যাবের মিডিয়া প্রধান আরও বলেন, ''অঘটন ঘটলে যে কেউ এমন ঘটনা ঘটায়। সিসিটিভি ফুটেজ গায়েবও এমন ঘটনা। সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়ার জন্য আমরা আদালতের কাছে আবেদন করেছি। আশা করছি তাও পেয়ে যাবো।''
পুলিশ সুপারসহ বেশ কয়েকজনের ব্যাংক একাউন্ট জব্দ করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মামলার তদন্তে যাদের ব্যাংক হিসাবের তথ্য দরকার তাদের ব্যাংক হিসাব সম্পর্কে আমরা তথ্য নেব।
গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মারিশবুনিয়া পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ।
এ সময় পুলিশ সিনহার সঙ্গে থাকা সিফাতকে আটক করে কারাগারে পাঠায়। পরে রিসোর্ট থেকে শিপ্রাকে আটক করা হয়। দুজনই বর্তমানে জামিনে মুক্ত।
ওই ঘটনায় ওসি প্রদীপসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা এবং পুলিশের দায়ের করা মামলার তিন সাক্ষী প্রথমে কক্সবাজার জেলা কারাগার ও পরে আদালতের সাত দিনের রিমান্ড আদেশের প্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব হেফাজতে রয়েছে।
সর্বশেষ আর্মড পুলিশের (এপিবিএন) তিন সদস্যকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে তদন্তকারী সংস্থা র্যাব। কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তামান্না ফারাহ প্রত্যেকের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।