রুশ বাহিনী এগোতে থাকায় শহর খালি করার নির্দেশ ইউক্রেনের
রাশিয়ান বাহিনীর অগ্রগতি অব্যাহত থাকায় ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ শহর পোকরভস্ক খালি করার নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। খবর বিবিসি'র।
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় ডনবাস অঞ্চল হয়ে রাশিয়ান বাহিনী এগোতে থাকায় পোকরভস্ক এবং আশপাশের গ্রামগুলোর পরিবারগুলোকে তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পোকরভস্ক শহরটি ইউক্রেনের প্রতিরক্ষার প্রধান কেন্দ্রগুলোর একটি এবং কিয়েভের পূর্ব ফ্রন্টে সেনাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ রসদকেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত। দোনেৎস্ক অঞ্চলের প্রধান ভাদিম ফিলাশকিন জানিয়েছেন, শহরটিতে এখনও প্রায় ৫৩ হাজার মানুষ বাস করছে, যার মধ্যে প্রায় ৪ হাজার শিশু রয়েছে।
শহরটির সামরিক সরকারের প্রধান সের্হি ডোবরিয়াক বলেছেন, রাশিয়ান বাহিনী পৌঁছানোর আগে বাসিন্দাদের পালানোর জন্য সর্বোচ্চ দুই সপ্তাহ সময় হাতে আছে। কর্তৃপক্ষ শিশু এবং তাদের অভিভাবকদের জোরপূর্বক সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ মানুষকে শহর থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনীয় বাহিনী অগ্রগতি অব্যাহত রেখেছে।
সোমবার তিনি জানান, ইউক্রেন কুরস্ক অঞ্চলের ১,২৫০ বর্গকিলোমিটার এলাকা এবং ৯২টি বসতি পুনর্দখল করেছে। তিনি বলেন, 'আমাদের সুমি অঞ্চলের বিপরীতে থাকা রাশিয়ার সীমান্ত এলাকা মূলত রুশ সামরিক উপস্থিতি থেকে মুক্ত হয়ে গেছে। এ অভিযানের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে ডনবাস অঞ্চলের ওপর থেকে রুশ বাহিনীর চাপ কমানো, যাতে ইউক্রেনীয় বাহিনী সেখানে স্বস্তিতে থাকতে পারে'।
রাশিয়ার সামরিক ব্লগাররা দাবি করেছেন, সোমবার ইউক্রেনীয় বাহিনী কুরস্ক অঞ্চলের সেম নদীর ওপরে তৃতীয় একটি সেতু ধ্বংস করেছে, যদিও কিয়েভ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে সেতু ধ্বংসের ফলে রাশিয়ার সামরিক সরবরাহ বিঘ্নিত হতে পারে এবং ইউক্রেন দখলকৃত এলাকা নিয়ে তাদের নিয়ন্ত্রণ আরও সুসংহত করতে পারে।
বিবিসি ভেরিফাই জানিয়েছে, স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে রুশ বাহিনী জভানোয়ের সেম নদীর ওপর নতুন অস্থায়ী পন্টুন সেতু তৈরি করেছে।
ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অফ ওয়ার (আইএসডব্লিউ) বলছে, রাশিয়া পূর্বাঞ্চলে ধীরগতিতে অগ্রসর হলেও, কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনের হঠাৎ অগ্রযাত্রা কিয়েভকে গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য পেতে সহায়তা করেছে।
আইএসডব্লিউ-এর মতে, ইউক্রেন প্রায় ৮০০ বর্গকিলোমিটার রুশ ভূখণ্ডে পৌঁছেছে, যদিও এটিই সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের ইঙ্গিত নয়। অন্যদিকে, রাশিয়া জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত প্রায় ১,১৭৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল করেছে।
অনুবাদ: সাকাব নাহিয়ান শ্রাবন