নিতিশ-রিঙ্কু ঝড়ে বাংলাদেশের সামনে বিশাল লক্ষ্য
মেহেদী হাসান মিরাজের করা ইনিংসের প্রথম ওভারটা খরুচে হলেও পরের ওভারে ভালোভাবেই সামাল দিলেন তাসকিন আহমেদ। ২ রান খরচা করার ওভারে তুলে নিলেন উইকেট। পরের কয়েক ওভারে তোপ তাগলেন তানজিম হাসান সাকিব, মুস্তাফিজুর রহমানরাও। তাতে ভালোভাবেই ভারতকে চেঢে ধরে বাংলাদেশ। কিন্তু পাওয়ার প্লে শেষে যে নিতিশ কুমার রেড্ডি ও রিঙ্কু সিংয়ের ঝড় শুরু হলো, মুহূর্তেই পাল্টে গেল ভারতের ইনিংসের চেহারা।
এই জুটির ব্যাটিং শো চললো ১৪তম ওভার পর্যন্ত, যেখানে নিতিশ থাকলেন খুনে চেহারায়। পরে শাসন করেন হার্দিক পান্ডিয়াও। এ কজনের দাপটে ধীর শুরুর পরও বিশাল সংগ্রহ গড়লো স্বাগতিকরা। বুধবার দিল্লির অরুন জেটলি স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে আগে ব্যাটিং করে ৯ উইকেটে ২২১ রান তুলেছে ভারত। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে কোনো দলের এটা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ দক্ষিণ আফ্রিকার, ২২৯। এতো রান করে কখনও জেতেনি বাংলাদেশ, তাদের সর্বোচ্চ রান তাড়া ২১৪।
তাসকিন ছাড়া বাংলাদেশের বেশিরভাগ বোলারদের ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে যায়। বাংলাদেশের দুই স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১৫'র বেশি ইকোনমিতে রান খরচা করেন। টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়া বাংলাদেশ স্পিন দিয়ে ইনিংস শুরু করে। কিন্তু মিরাজের করা প্রথম ওভারেই চলে তাণ্ডব, ১৫ রান তোলেন স্বাগতিক দলের দুই ওপেনার সঞ্জু স্যামসন ও অভিষেক শর্মা। পরের ওভারে ভারতের রোন তোলার গতি থামিয়ে স্যামসনকে ফেরান দারুণ বোলিং করা তাসকিন। ৭ বলে ২টি চারে ১০ রান করে আউট হন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।
তৃতীয় ওভারে তোপ দাগেন তানজিম। ১১ বলে ৩টি চারে ১৫ রান করা অভিষেককে বোল্ড করেন তিনি। যদিও ব্যাটে লেগে ভাঙে ভারতীয় ওপেনারের স্টাম্প। শুরুতেই ২ উইকেট হারিয়ে রান তোলায় পিছিয়ে পড়ে ভারত। অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব ও নিতিশ ঠাণ্ডা মেজাজে ব্যাটিং করতে থাকেন। পাওয়ার প্লে ৬ ওভার থেকে ৪৫ রান তোলে ভারত। ষষ্ঠ ওভারে মুস্তাফিজের বলে আউট হওয়ার আগে ১০ বলে ৮ রান করেন সূর্যকুমার।
সপ্তম ওভারটিও ধীর গতিতে রান তোলে। কিন্তু অষ্টম ওভার থেকে যে নিতিশ ও রিঙ্কুর ঝড় শুরু হয়, মুহূর্তেই ১০০ পূর্ণ হয়ে যায় ভারতের। এই চার ওভারে ৫৬ রান তোলে তারা। এরপর আরও কিছুক্ষণ চলে এ দুজনের ব্যাটিং দাপট। চতুর্থ উইকেটে ৪৯ বলে ১০৮ রানের জুটি গড়েন তারা। ১৪তম ওভারে মুস্তাফিজের বলে আউট হওয়ার আগে ৩৪ বলে ৪টি চার ও ৭টি ছক্কায় ৭৪ রানের খুনে ইনিংস খেলেন নিতিশ। ২৭ বলে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি।
এরপর দাপট জারি রাখা রিঙ্কু আরও দ্রুত গতিতে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন, ২৬ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরি। ২৯ বলে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৫৩ রান করে আউট হন রিঙ্কু। পরে হার্দিকের ব্যাটে এগোয় ভারত। ডানহাতি এই অলরাউন্ডার ১৯ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় ৩২ রান করেন। রিয়ান পারাগও দ্রুত রান তোলেন, ৬ বলে ২টি ছক্কায় ১৫ রান করেন তিনি।
ভারতের উইকেট নিলেও বাংলাদেশের বেশিরভাগ বোলার ছিলেন খরুচে। এই তালিকায় তাসকিন কেবল ব্যতিক্রম, ৪ ওভারে ১৬ রানে ২ উইকেট নেন তিনি। ৩ উইকেট নেওয়া রিশাদ ৪ ওভারে দেন ৫৫ রান। ৪ ওভারে ৩৬ রানে ২ উইকেট পান মুস্তাফিজ। তানজিমের শিকারও ২ উইকেট, ৪ ওভারে তার খরচা ৫০ রান।