'১২ অক্টোবর দ্বিপাক্ষিক বৈঠক' চীন-ভারত সীমান্ত উত্তেজনার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
লে. জেনারেল এইচ এস পানাগ (অব.) ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ৪০ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় কম্যান্ডের সি সেক্টর এবং কেন্দ্রীয় কম্যান্ডের জিওসি- পদে নিয়োজিত ছিলেন। অবসর গ্রহণের পর তিনি ভারতীয় সেনা ট্রাইব্যুনালের একজন সদস্য রূপে কাজ করছেন। দেশটির গণমাধ্যম দ্য প্রিন্টে লেখা এক বিশ্লেষণী নিবন্ধে তিনি প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় চীন ও ভারতের মুখোমুখি অবস্থানের বাস্তবতা রাজনৈতিক এবং জাতীয়তাবাদী ভাবধারার অনেকটা বাইরে গিয়েই তুলে ধরেন। ওই আলোচনার পরিমার্জিত রুপ এখানে তুলে ধরা হলো;
গত মে থেকেই অনুপ্রবেশের মাধ্যমে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণকে সেই ১৯৫৯ সালে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে চীন। পার্থক্য শুধু ঘটনার আকারে। ১৯৫৯ সালে উভয়পক্ষের বিচ্ছিন্ন কিছু সেনা টহল দল সংঘর্ষে জড়ায়। আজ সেই জায়গায় মুখোমুখি চোখ রাঙাচ্ছে তিন-চার ডিভিশন সশস্ত্র সেনা। সীমান্তের অগ্রভাগে মোতায়েন আছে রিজার্ভ অনেক ডিভিশন।
পুরোনো সেই সীমান্ত রেখা জুড়েই চলছে এমন উত্তেজনা। এ অবস্থায় ১৯৫৯ সালে চীন যে সীমান্ত রেখা দাবি করেছিল, সেখান থেকে তারা আর ফিরে আসবে না। কোনো সন্দেহ নেই তারা সম্প্রতি যেসব স্থান দখল করেছে- আগামীদিনে আলোচনার মাধ্যমে সেসব স্থানের অধিকার ছেড়ে দেওয়ার কোনো অভিপ্রায় নেই তাদের।
টানা সাড়ে চার মাস ধরে সংঘাতের পর মস্কোতে স্বাক্ষরিত পাঁচ দফা সমঝোতার আলোকে ভারত ও চীনের মধ্যে তাদের সুবিশাল যৌথ সীমানায় বিরোধ নিরসনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিস্থিতি আবারও মনে করিয়ে দেয়, আমরা সেই ১৯৫৯ সালের পরিস্থিতির মধ্যেই পড়েছি।
ওই সময় লাদাখ নিয়ে বিরোধ তাদের দাবীকৃত সীমান্ত রেখা অনুসারে সমাধানের প্রস্তাব দিয়েছিল চীন। আর উত্তর-পূর্বে ম্যাকমোহন লাইন মেনে নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। চলতি ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে চীনা গণমুক্তি ফৌজ তাদের সাম্প্রতিক পদক্ষেপের মাধ্যমে দেপসাং এবং প্যানগং-সো এলাকায় ১৯৫৯ সালের সেই দাবীকৃত সীমান্ত রেখা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। বাকি রয়েছে শুধু দেমচক।
এই প্রেক্ষিতেই সপ্তমবারের ন্যায় কর্পস কম্যান্ডার পর্যায়ের আলোচনা শুরু হবে আগামী ১২ অক্টোবর। সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তিতে মস্কোতে হওয়া ডব্লিউএমসিসি বা ওয়ার্কিং মেকানিজম ফর কনসালটেশন অ্যান্ড কো-অর্ডিনেশন চুক্তির আওতায় অনুষ্ঠিত হবে এ বৈঠকে ।
মস্কোতে সমঝোতার পর ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়, ''প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) বরাবর দু'পক্ষের সেনাদের মুখোমুখি অবস্থা বিদ্যমান চুক্তি এবং নীতিমালার আলোকে; দ্রুত ও সম্পূর্ণ নিরসনে চীন সম্মতি দিয়েছে। শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষার স্বার্থে এ প্রক্রিয়ায় রাজি হয়েছে উভয়পক্ষ।''
তবে চীনের দেওয়া বিবৃতিতে সপ্তম দফার বৈঠকে তাদের অংশ নেওয়ার বিষয়টি কোনো রকমে শুধু উল্লেখ করা হয়।
''সামরিক নেতৃত্ব পর্যায়ের সপ্তম দফার আলোচনা প্রাথমিকভাবে শুরু করার মাধ্যমে সীমান্তে উদ্ভূত সমস্যা সমাধান এবং শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে আমরা সম্মতি জানিয়েছি।''
উভয় দেশের আলোচ্যসূচির পার্থক্য সীমান্তের ব্যাপারে চীনের অনমনীয় মনোভাব প্রকাশ করে।
সীমান্ত বিরোধ নিয়ে গত ২৫ সেপ্টেম্বর দৈনিক হিন্দুস্তান টাইমস চীনের আনুষ্ঠানিক অবস্থান জানতে চেয়েছিল।
জবাবে চীন জানিয়েছে, ''১৯৫৯ সালের ৭ নভেম্বর নাগাদ উভয় দেশের মধ্যে যে সীমান্ত অবস্থান ছিল সেটাকেই তারা এলএসি' রূপে গণ্য করে। ১৯৫০ এর দশকেই নিজেদের সীমান্ত দাবি ঘোষণা করেছিল চীন। ভারত-সহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও বিষয়টি ভালো করেই জানে। চলতি বছর থেকেই ভারতীয় সেনাবাহিনী সমবেত হয়ে চীনের দাবীকৃত ওই সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ চালাতে থাকে- এ আশায় যে এর ফলে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারতীয় দাবীকৃত এলাকার পরিমাণ তারা বাড়াতে সক্ষম হবে। সংঘাতের সূচনা সেখান থেকেই। দুই সেনাবাহিনীর মধ্যে বিরোধ নিরসনের একমাত্র শর্ত ভারতকে সীমান্তে অনুপ্রবেশ করা তাদের সকল সেনা সদস্য এবং সরঞ্জাম প্রত্যাহার করতে হবে।''
গত ২৯ সেপ্টেম্বর চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, ''লাদাখকে কেন্দ্র নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার ভারতীয় অবৈধ পদক্ষেপ চীন কখনোই মেনে নেয়নি। তাছাড়া, বিতর্কিত সীমান্ত এলাকা জুড়ে ভারত সামরিক বাহিনীর ব্যবহারের জন্য যেসব অবকাঠামো নির্মাণ করছে, তারও তীব্র বিরোধিতা করে চীন।''
এই প্রেক্ষিতে স্পষ্ট বোঝা যায়, আগামীদিনের যেকোনো আলোচনায় চীন তাদের ১৯৫৯ সালে দাবীকৃত অঞ্চলের মালিকানার স্বীকৃতি চাইবে। সেই অনুসারেই তারা সীমান্তে উভয়পক্ষের মধ্যে মুখোমুখি অবস্থান নিরসনের দাবি জানাতে পারে।
চীনের ১৯৫৯ সালের দাবীকৃত সীমান্ত রেখা এবং নানা সেক্টরে তার কৌশলগত এবং সামরিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে যে গুরুত্ব- আমি তার ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতাও তুলে ধরছি। ভারত ও চীনের মধ্যে ওই দাবি অনুসারে বিরোধ নিরসন হবে কিনা- সেটা জানাটাও এর অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য।
১৯৫৯ সালের দাবীকৃত সীমান্ত রেখা:
ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর কাছে ১৯৫৯ সালের ৭ নভেম্বর পাঠানো এক চিঠিতে চীনা প্রধানমন্ত্রী ঝৌ এনলাই একটি প্রস্তাব দেন।
সেখানে তিনি বলেন, ''সংঘাত নিরসনে ভারত ও চীনের সামরিক বাহিনী পরস্পরের থেকে ম্যাকমোহন লাইনের ২০ কিলোমিটার পূর্বে এবং পশ্চিমে তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলো থেকে একই পরিমাণ পিছিয়ে আসতে পারে।'' ওই প্রস্তাবের ভিত্তিতেই ১৯৬০ সালে দুই দেশের কর্মকর্তা পর্যায়ের পাঁচদফা বৈঠকে নিজেদের দাবীকৃত সীমানার কথা বলে চীন।
আলোচনায় নিজ দাবি এবং সীমান্ত নিয়ে অবস্থান তুলে ধরার এটাই ছিল চীনের প্রথম আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ। এর আগের এক দশক দু'দেশই দূরতম সীমান্তে তাদের নিজ নিজ অবস্থান সুসংহত করার চেষ্টায় লিপ্ত ছিল। এব্যাপারে ১৯৫১ সালে উত্তরপূর্ব সীমান্তে প্রথম চীনকে পিছিয়ে আঞ্চলিক নিয়ন্ত্রণ বাড়ায় ভারত। বিচ্ছিন্ন কিছু জায়গা বাদে আসাম রাইফেলসের সহযোগীতায় সম্পূর্ণ ম্যাকমোহন লাইন বরাবর অঞ্চলে নিজ কর্তৃত্ব স্থাপন করে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
তবে লাদাখে চীন আমাদের পিছিয়ে ফেলে তিব্বত জিনজিয়াং (জি২১৯) মহাসড়ক নির্মাণ করে এবং চীনা গণমুক্তি ফৌজ সামনের দিকে এগোতে এগোতে আকসাই-চিন অঞ্চলের বড় কিছু অংশের নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয়। বাদবাকি অঞ্চলে আমরা কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স এবং গোয়েন্দা বিভাগের সহায়তায় তা আমাদের জাতীয় পতাকাতলে আনতে সক্ষম হই।
এই পর্যায়ে উভয় সেনাবাহিনীর মধ্যে মুখোমুখি টহল এবং চেকপোষ্ট স্থাপন অনিবার্য হয়ে পরে। ১৯৫৯ সালের ২৫ আগস্ট লোহিত ডিভিশনের লংঝু'তে চীনা গণমুক্তি ফৌজ আসাম রাইফেলসের এক জওয়ানকে যুদ্ধবন্দী হিসেবে আটক করে। আর প্রথম রক্তক্ষয়ী সংঘাতটি অনুষ্ঠিত হয় ওই বছরের ২১ অক্টোবর, লাদাখের কংকা-লা এলাকায়। ওই সংঘর্ষে নয়জন সিআরপিএফ সদস্য মারা যায়, আহত হয় তিনজন। এছাড়া, আরও সাতজনকে যুদ্ধবন্দী হিসেবে আটক করে নিয়ে যায় চীন।
একারণেই ক্ষুদ্ধ নেহেরু ১৯৫৯ সালের ১৬ নভেম্বর পাঠানো পাল্টা চিঠিতে ঝৌ এনলাই'য়ের প্রস্তাব নাকচ করে লেখেন; "চীন সরকারের দাবি অনুসারে সীমান্ত রেখা কোথায় নির্ধারিত করা হবে, সেই সম্পর্কে আমরা সুস্পষ্টভাবে জানি না। এ অবস্থায় নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে সমঝোতা অর্থহীন। কারণ, দাবির বিষয়গুলো বিতর্কিত বা নির্ভরযোগ্য নয়।''
এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে আরও সংঘাতের ঝুঁকি বাড়তে থাকে এবং চীন ১৯৬০ সালের আলোচনায় তাদের দাবীকৃত ১৭টি সীমান্ত পয়েন্টের দ্রাঘিমা এবং অক্ষাংশ উপস্থাপন করে। পয়েন্টগুলো একে-অপর থেকে বিশাল দূরত্বে অবস্থিত, তাই মাঝখানে থাকা অঞ্চলগুলোর মালিকানা কার হবে- তা অমীমাংসিত রয়ে যায়। চীন অবশ্য বরাবরই বলে আসছে ভূ-প্রাকৃতিক চিহ্নিতকরণের এ কো-অর্ডিনেটগুলো আনুমানিক। এই অসচ্ছতা সবচেয়ে বেশি ছিল দেপসাং সমভূমি এবং দেমচক সেক্টরে।
উল্লেখ করা আবশ্যক, ১৯৬২ সালের যুদ্ধে জয়ের পরও চীনা গণমুক্তি ফৌজ তাদের ১৯৫৯ সালের দাবীকৃত সীমানা রেখা অতিক্রম করেনি। ভারতীয় সেনবাহিনী সীমান্ত থেকে একশ' কিলোমিটার সরে আসতে বাধ্য হওয়ার পরও চীন সংযম প্রদর্শন করে। লাদাখে গণমুক্তি ফৌজ শুধু প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার ১০-২০ কিলোমিটার পূর্বের সীমান্ত পোষ্ট দখল করে। ১৯৫৯ সালের ফরওয়ার্ড পলিসির আওতায় এমনটা করে তারা।
১৯৬২ সালের ১৯ নভেম্বর একতরফা যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেয় চীন। এবং তখন আবার আলোচনার পাদপ্রদীপে আসে তাদের দাবিকৃত সীমান্ত রেখা।
ঘোষণায় বলা হয়; ''আগামী ২১ নভেম্বর থেকে চীনের সীমান্ত রক্ষীরা সমগ্র চীন-ভারত সীমান্তে সংঘাত বন্ধ করবে এবং ১৯৬২ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে তারা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার ২০ কি.মি পেছনে অবস্থান নেবে। ১৯৫৯ সালের ভারত ও চীনের মধ্যে বিদ্যমান প্রকৃত সীমানা অনুসরণ করেই তাদের পিছিয়ে আসা বাস্তবায়ন করা হবে।''
তবে যুদ্ধে হারলেও নেহেরু একতরফা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নাকচ করে দেন।
১৯৬২ সালের ১ ডিসেম্বর লেখা এক চিঠিতে নেহেরু বলেন, ''১৯৫৯ সালের ৭ নভেম্বর পর্যন্ত পশ্চিম সেক্টরে আপনারা যাকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা হিসেবে উল্লেখ করছেন ,সেখানে ওই সময় ভারতের বিচ্ছিন্ন কিছু সেনা চৌকি ছিল। আপনারা ভালো করেই জানেন, ১৯৫৯ সালের ওই সময়ে কিজিলগা, শিংলুং, দেহরা, সামজাংলিং বা অন্যান্য স্থানের পশ্চিমে কোনো চীনা সেনা চৌকি ছিল না। এমনকি স্পাংগুর-এর দক্ষিণ বা পশ্চিমেও আপনাদের কোনো সেনা চৌকি ছিল না। ১৯৫৯ সালের ৭ নভেম্বর পর্যন্ত যে সীমান্তের দাবি আপনাদের প্রশাসন করছে, তা চলতি বছরের (১৯৬২) গত ২০ অক্টোবর আপনাদের সেনাবাহিনী আক্রমণ করে দখল করে নেয়। জবরদস্তিমূলক এ পদক্ষেপের মাধ্যমে নেওয়া যুদ্ধবিরতি আমরা মেনে নিতে পারি না। তাই আপনাদের দাবীকৃত সীমান্ত রেখাও আমাদের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।''
বিতর্কিত অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এভাবেই সংঘাতের উৎস সৃষ্টি হয়। দুই দেশই ওই অঞ্চলে নিজ নিজ অবস্থানকে প্রকৃত নির্দেশক বলে দাবি করছে। এবং চীনও সাম্প্রতিক সময়ে ১৯৫৯ সালের সীমান্ত রেখা অনুসারে তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় আগ্রহ দেখাচ্ছে।
সবচেয়ে বড় ঘটনা হচ্ছে; সামরিক উত্তেজনার রাজনীতিকরণ শান্তির সহযোগী হয় না। চীন যদি ১৯৫৯ সালের পরিস্থিতি তৈরি করে তাহলে বৃহত্তর সীমান্ত রক্ষার দায়ভার শুধু সমর নায়কদের ঘাড়ে চাপালে চলবে না। কথার জাদুতে জনতাকে আবেগী করে তুলে তার অন্যায় সুবিধা নেওয়া আদর্শ রাষ্ট্রনায়কের পরিচয় নয়। বরং নিজ জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে কঠিন বাস্তবতা জনগণকে বোঝানোটাই মূল লক্ষ্য হওয়া উচিৎ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তা এবং বাগ্মীতা'র গুণ দুই'ই আছে। কিন্তু, তিনি কী সত্যের গুলিটি জনসম্মুখে ছোড়ার সাহস রাখেন?