ইরানের ১৮টি বৃহৎ ব্যাংকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ যুক্তরাষ্ট্রের
ইরানের ব্যাংকিংখাতে বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) নতুন একদফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশটির অর্থনীতিকে আরও পর্যদুস্ত করার অংশ হিসেবে এ উদ্যোগ নেওয়া হলো।
মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, তারা ইরানের ১৮টি প্রধান ব্যাংককে লক্ষ্য করে এ নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে। ৮ কোটি জনসংখ্যার দেশ ইরান এরফলে বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারে।
মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে ইরান যখন আপ্রাণ চেষ্টা করছে, তার মধ্যেই এমন পদক্ষেপের কথা জানানো হলো।
সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞাগুলো দেওয়ার সময় ইরানি ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ আনেনি ট্রাম্প প্রশাসন। তবে দেশটির সামগ্রিক আর্থিকখাত সরকারের পরমাণু কর্মসূচিতে অর্থায়ন করছে এবং আঞ্চলিক পর্যায়ে অশুভ প্রভাব বিস্তারে সহায়তা করছে, এমন ঢালাও অভিযোগ করা হয়। খবর আরব নিউজের।
এব্যাপারে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মানুচিন বলেন, 'এ পদক্ষেপ ইরানকে মার্কিন ডলার ব্যবহারের সুযোগ বঞ্চিত করবে।'
এক বিবৃতিতে তিনি জানান, ''যতদিন না ইরান তার পরমাণু প্রকল্পসমূহ এবং সন্ত্রাসী কার্যকালাপ বন্ধ না করছে, ততদিন আমাদের নিষেধাজ্ঞা কর্মসূচির অব্যাহত থাকবে।''
ইতোপূর্বে, খাদ্য এবং ওষুধের মতো মানবিক পণ্য আমদানিতে তারা ইরানের আর্থিক লেনদেন নিষেধাজ্ঞার বাইরে রেখেছিল, বলেও দাবি করে মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়।
ইউরোপীয় কূটনীতিকরা অবশ্য এর বিরোধিতা করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুনতম নিষেধাজ্ঞার কারণে মহামারির মধ্যে ইরানের মানবিক সঙ্কট ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি আর ইরানে খাদ্য এবং ওষুধের মতো পণ্য বিক্রয় করে কোনো দেশই মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়তে চাইবে না, বলে তারা জানিয়েছেন।
মার্কিন অর্থমন্ত্রণালয় জানায়, আগামী ৪৫ দিন পর থেকে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। ইরানের সঙ্গে ব্যবসায় জড়িত নানা কোম্পানি যেন দেশটির সঙ্গে তাদের চলমান লেনদেন শেষ করতে পারে, সেজন্যই এই সময়সীমা।
এই ৪৫ দিনের আগেই অবশ্য আগামী ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে। নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেট দলের জো বাইডেন। প্রাক-নির্বাচনী জরিপে জন-সমর্থনে এগিয়ে থাকা বাইডেন ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক সচল করার পক্ষে।
অন্যদিকে ট্রাম্প সৌদি আরব এবং ইসরায়েলের 'চরম শত্রু' বলে পরিচিত ইরানের উপর সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতি গ্রহণ করেছেন, তার মেয়াদের শুরু থেকেই।
ইতোপূর্বে, ইরানের জ্বালানি তেল রপ্তানি বন্ধের উদ্যোগ নেয় মার্কিন সরকার। একইসঙ্গে, সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে স্বাক্ষরিত ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে শর্তসাপেক্ষে ছাড় দেওয়ার চুক্তি থেকেও বেড়িয়ে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র।