ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বিশ্ব অর্থনীতি: জাতিসংঘের প্রতিবেদন
করোনার প্রকোপ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে দেশগুলো; বেশিরভাগ দেশ এখন ভাইরাসের পরিবর্তে ভ্যাকসিন সরবরাহ ও বিতরণ নিয়েই ব্যস্ত। ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিকে পুনরায় চাঙ্গা করে তুলতে দেশগুলো গ্রহণ করছে একাধিক আর্থিক ও মুদ্রানীতি। ফলে অর্থনীতির চাকা সচল হতে এবার আর সময় লাগবে না- এমনটাই প্রত্যাশা করা হয়েছে সম্প্রতি প্রকাশিত জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থার (আঙ্কটাড) একটি প্রতিবেদনে।
জেনেভা-ভিত্তিক সংস্থাটির ধারণা, ২০২১ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে মোট দেশজ উৎপাদনের পরিমাণ ৪.৭% বৃদ্ধি পাবে।
করোনার মন্দায় গত বছরের জিডিপিতে ৩.৯% সংকোচনের ফলে বিশ্বজুড়ে প্রায় ২৫ কোটি মানুষ চাকরিচ্যুত হয়েছে। সংস্থাটি বলে, 'এই দশা থেকে মুক্তি পায়নি পৃথিবীর কোন দেশ, কোন অঞ্চল'।
তবে দুর্যোগের শুরুতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর দ্রুত পদক্ষেপের ফলে আর্থিক ধাক্কা অনেকটাই কাটিয়ে উঠা সম্ভব হয় বলেও উল্লেখ করেছে প্রতিবেদনটি । জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থার (আঙ্কটাড) মতে, ঘোর করোনাকালে ব্যাংকগুলোর গৃহীত উদ্যোগ তারল্যের সীমা প্রশমন এবং উদ্বিগ্ন বিনিয়োগকারীদের অনেকটাই শান্ত রাখে।
গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, মার্চ-এপ্রিলে যে ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল, সেটি কাটিয়ে উঠে অনেক প্রতিষ্ঠানই যথেষ্ট পরিমাণ মুনাফা হাতে রেখে ২০২০ সাল শেষ করতে পেরেছে।
আঙ্কটাড-এর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, যে সকল দেশ আর্থিক নীতি, রাজস্ব নীতি এবং টিকাদান কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে কোভিড-১৯ মহামারীর লাগাম টেনে ধরতে সক্ষম হয়েছে, এ বছর তারা শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সম্মুখীন হবে।
উন্নয়নশীল এবং উন্নত উভয় অর্থনীতির দেশেই সুষম পুনরুদ্ধার সম্ভব বলে আশা করা হয়েছে।
বেইজিংয়ে টিকাদান কর্মসূচির অব্যাহত সাফল্যের ফলস্বরূপ চীনের অর্থনীতি ৮.১% প্রসারিত হবে। ভারত এবং দক্ষিণ কোরিয়াতেও অর্থনীতির পুনরুদ্ধার দেখবে সবাই; তবে অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় ব্রাজিলের প্রবৃদ্ধিতে দ্রুত ফিরে আসা্র সম্ভাবনা ক্ষীণ।
সরকারের ১.৯ ট্রিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা বিল স্বাক্ষরের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপিতে ৪.৫% বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার এবারও কম রাখবে। তবে কোভিডের ফলে মার্কিন শেয়ারবাজারে নিম্নমুখী দরপতনের আশঙ্কার ব্যাপারে সতর্ক করেছে আঙ্কটাড।
আঙ্কটাড জানায়, ২০২১ সালে ইউরো অঞ্চল ৪% জিডিপির প্রবৃদ্ধি দেখতে পাবে। তবে সে পথ কুসুমাস্তীর্ণ হবে না। রাজস্ব আদায় এবং বিলম্বিত টিকাদান কর্মসূচী জন্য ইউরোপের দেশগুলোকে আগের সেই অর্থনৈতিক দশায় প্রত্যাবর্তনে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে। সেদিক দিয়ে যুক্তরাজ্যের দ্রুত ভ্যাকসিনেশন শুরুর সুফল ভোগ করবে ব্রিটেন। ২০২০ সালে ১০% হ্রাসের পর এ বছর আবার ব্রিটেনের জিডিপি ৪.৪% প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে।
- ব্লুমবার্গ অবলম্বনে