পদত্যাগ করলেন মমতা ব্যানার্জির ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর
ভোটের ট্রেন্ডে সবদিক থেকে এগিয়ে থাকায় পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে আবারও তৃণমূল কংগ্রেসেরই জয় হতে যাচ্ছে বলেই মনে করা হচ্ছে। ২০০ টিরও বেশি আসন নিয়ে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির চাইতে এগিয়ে আছে মমতা ব্যানার্জির দল। কিন্তু আজ রবিবারই পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন মমতা ব্যানার্জির ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর।
এনডিটিভি-কে কিশোর বলেন, 'আমি আর এই কাজে যুক্ত থাকতে চাই না। যথেষ্ট হয়েছে। এখন আমার বিরতি নেওয়ার এবং জীবনে অন্যকিছু করার সময় এসেছে। আমি এই জায়গা ছাড়তে চাই। এই জয়ের মধ্যেই আমি জানাচ্ছি যে আমি পদত্যাগ করতে চাই।'
রাজনীতিতে আবার ফিরে আসবেন কিনা-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমি একজন ব্যর্থ রাজনীতিবিদ। আমাকে এখন এখান থেকে সরে গিয়ে দেখতে হবে যে কি করা যায়।'
ইন্ডিয়া টুডে-কে কিশোর আরও জানান, তিনি এই পদত্যাগের পর থেকে আর দলের কোনো নীতিনির্ধারণীর বিষয়ে থাকবেন না। তিনি নির্বাচন কমিশনকে 'বিজেপির শাখা' হিসেবে কাজ করছে বলে অভিযুক্ত করেন। 'ধর্মকে পুঁজি করে রাজনীতি করা ও ভোট হিসাব করা এবং নিয়মভঙ্গ করার সব রকম সুযোগ নির্বাচন কমিশন বিজেপিকে দিয়েছে', বলেন তিনি।
গত বছরের ডিসেম্বরে কিশোর বলেছিলেন যে নির্বাচনে বিজেপি দুই অংকের সংখ্যা পার করতে হিমশিম খাবে। যদি এমনটা না হয়, তাহলে তিনি পদত্যাগ করবেন বলে ঘোষণা দেন। সেসময় বিজেপির সিনিয়র নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয়া বিদ্রুপ করে বলেছিলেন, 'বাংলায় বিজেপির জনপ্রিয়তার যে সুনামি চলছে, তাতে করে সরকার গঠনের পর আমরা একজন ভোট কৌশলীকে হারাবো।'
রবিবার টুইটারে কিশোরের ট্রেন্ডিং টুইটগুলোর সাথে সাথে পুরনো টুইটও ঘুরে বেড়াচ্ছিলো যে বিজেপি ১০০ আসনও পাবেনা পশ্চিমবঙ্গে।
নির্বাচন কমিশন ২৭ মার্চ থেকে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, তামিলনাড়ু, কেরালা ও পুদুচেরীর ভোট শুরুর তারিখ ঘোষণা করার একদিন পরেই একটি টুইট বার্তায় কিশোর বলেন, 'ভারতে গণতন্ত্রকে জয়ী করার একটা মূল যুদ্ধ হবে পশ্চিমবঙ্গে। বাংলা শুধুমাত্র তার নিজের মেয়েকেই চায়।' পরে এর সাথে তিনি আরো সংযুক্ত করেন, 'বি. দ্র.- ২রা মে তে ই হবে আমার শেষ টুইট।'
এর আগে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-কে দেয়া এক সাক্ষাতকারে কিশোর বলেন, 'নভেম্বর ডিসেম্বরের দিকে খুব গুঞ্জন উঠেছিল যে বাংলায় বিজেপিই জিতবে, তারা ২০০ আসন পাবে ইত্যাদি ইত্যাদি। তাই এটা যে সত্যি নয় সেটা জনসম্মুখে বলা আমাদের প্রয়োজন ছিল। কারণ ডিসেম্বরের দিকে বিজেপির বাংলায় ২০০ আসন পাওয়ার কোন সম্ভাবনাই ছিলনা। আর আমাদের হিসাবমতে, তারা তিন অংকের সংখ্যার আসন পেতেই হিমশিম খাবে। আমি আমার কথায় অনঢ়। এই হিসাব যদি সত্যি না হয়, আমি রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াবো।'
সূত্র- দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস