ছাত্রলীগের সনজিত-সাদ্দামসহ ৩৭ জনের বিরুদ্ধে ভিপি নূরের মামলা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র-সংসদের ভিপি নুরুল হক নুর ও তার সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনসহ ৩৭ জনকে আসামি করে শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেছেন নূর নিজেই।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভিপি নূরের পক্ষে ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন শাহবাগ থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান সাংবাদিকদের বলেছেন, পুলিশের করা মামলার এজাহারের সঙ্গে নুরুলের অভিযোগটি সমন্বয় করার জন্য বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হবে৷
মামলার এজাহারে নূর বলেছেন, ওই দিন বেলা ১২টার দিকে হঠাৎ করে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ অতির্কিতে ডাকসু ভবনে ঢুকে লাঠিসোঁটা নিয়ে তাদের উপর প্রথম দফা হামলা চালায়। তখন তারা ডাকসুর কর্মচারীদের সহায়তায় ভবনের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দিয়েছিলেন।
“কিছুক্ষণ পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ দাস এবং সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসাইনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মূল ফটকের তালা খুলে হত্যার উদ্দ্যেশে হামলা চালায়।”
হামলাকারীরা কক্ষের বাতি নিভিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ হামলা চালিয়েছিল বলে নূরের অভিযোগে বলা হয়।
মামলায় যাদেরকে আসামি করা হয়েছে তারা হলেন- সনজিত চন্দ্র দাস, সাদ্দাম হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একাংশের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত তূর্য, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন বিন সাত্তার, মাস্টারদা' সূর্যসেন হল সংসদের ভিপি মারিয়াম জাহান খান, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ তুনান, স্যার এ এফ রহমান হল সংসদের ভিপি আবদুল আলীম খান, জিএস আব্দুর রহিম সরকার ও সাহিত্য সম্পাদক তানজিল ইমরান তালাশ, বিজয় একাত্তর হল সংসদের এজিএস আবু ইউনূস, ডাকসুর সদস্য রকিবুল ইসলাম ঐতিহ্য ও মাহমুদুল হাসান, ডাকসুর স্বাধীনতাসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী, বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি রবিউল হাসান রানা, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের শিক্ষা ও পাঠচক্রবিষয়ক উপসম্পাদক নিয়ামত উল্লাহ তপন, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) হাসিবুল হোসেন শান্ত, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক সিফাতুজ্জামান খান, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল সংসদের জিএস মেহেদী হাসান মিজান, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফেরদৌস আলম, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুল হাসান বাবু, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, ছাত্রলীগ নেতা ইবনুল হাসান উজ্জ্বল ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক স্কুলছাত্রবিষয়ক উপসম্পাদক খাজা খায়ের সুজন।
এছাড়াও আসামি করা হয়েছে সলিমুল্লাহ মুসলিম হল (এসএম হল) শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিলন খান, কবি জসীমউদদীন হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমরান আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক হৃদয় হাসান সোহাগ, ছাত্রলীগ নেতা মো. উজ্জ্বল, আরিফুল ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেত্রী ফাতিমা রিপা, মঞ্চের একাংশের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ও আইনুল ইসলাম মাহবুব, নেতা মেহেদী হাসান নিবিড়, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল সংসদের জিএস মেহেদী হাসান শান্ত এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি জীবন রায়কে।
তবে নূর মামলা করার আগেই সোমবার মধ্যরাতে পুলিশের পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হয়। নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির এসআই রইচ হোসেনের করা ওই মামলায় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে নূরকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়।
ওই মামলার আসামিরা হলেন- মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এএসএম আল সনেট, সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন আরাফাত তূর্য, এফ রহমান হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ইমরান সরকার, কবি জসীম উদ্দীন হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ইয়াদ আল রিয়াদ, কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুব হাসান নিলয় এবং জিয়া হল শাখার সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম মাহিম।
এই আটজনের পাশাপাশি অজ্ঞাতপরিচয়ের আরও ৩৫ জনকে মামলার এজাহারে আসামি করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।