উহানে যেন ফিরে এসেছে মহামারি শুরুর অবস্থা, আতঙ্কিত হয়ে লোকজনের কেনাকাটা এবং পরিবহন লকডাউন আরোপ
অতি সংক্রামক ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণে চীনের উহান শহরে অভ্যন্তরীণ এবং বহির্গামী ফ্লাইট ও ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ করা হয়েছে। উহানের এই চিত্র প্রায় ১৯ মাস আগে চীনে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার শুরুর দিককার কথা মনে করিয়ে দেয়।
১১ মিলিয়ন মানুষের বাস শহরটিতে গণ পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় উহানের উদ্বিগ্ন নাগরিকেরা বাজারে হুলস্থূলভাবে কেনাকাটা শুরু করলে নতুন করে পরিবহন লকডাউন জারি করা হয়েছে।
২০১৯ এবং ২০২০ এর শুরুতে করোনার কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছিলো উহান; এ শহরেই ভাইরাসটি সর্বপ্রথম ধরা পড়ে। তখন থেকে চীন বিভিন্ন শহরে ভাইরাসটির দ্রুত বিস্তার রোধের জন্য লকডাউন এবং গণ পরীক্ষা পরিচালনা করে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে তারা ইতোমধ্যে চীনের তৈরি ভ্যাকসিনের ১.৬ বিলিয়নেরও বেশি ডোজ দিয়েছে।
অতি সংক্রামক ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণে গতমাসে চীনে নতুন করে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এছাড়াও, যুক্তরাষ্ট্রে এই ভ্যারিয়েন্ট ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় মাস্ক পরিধান এবং টিকা দেয়ার নতুন তাগিদ দেখা যাওয়ার পাশাপাশি গত দু সপ্তাহে সেখানে করোনা সংক্রান্ত কেস প্রায় ১৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
চীনের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত পিপলস ডেইলি-র রিপোর্ট অনুযায়ী, গতমাসে শুরু হওয়া প্রাদুর্ভাবের পর থেকে স্থানীয়ভাবে ৩২৮টি নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছে। দেশটির অর্ধেক সংখ্যক প্রদেশ এবং অঞ্চলগুলোতে অবস্থিত ৩৫টিরও বেশি শহরে নতুন করে ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে বলে জানায় দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস।
মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে উহান শহরের কর্মকর্তা লি তাও, গণ পরীক্ষাকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে উল্লেখ করেন। তবে সাম্প্রতিক এই প্রাদুর্ভাব বেশ গুরুতর না হলেও, ভাইরাসটি যাতে দেশটিতে পুনরায় তাণ্ডব না চালাতে পারে তার জন্য কাজ করছে চীনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও, করোনার সাম্প্রতিক বিস্তার রোধে ক্ষতিগ্রস্ত শহরগুলো অবিলম্বে ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানায় পিপলস ডেইলি।
এদিকে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট অনুসারে, জিয়াংসু প্রদেশের পূর্বাঞ্চলীয় শহর ইয়াংজুতে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ইয়াংজু এবং এর পার্শ্ববর্তী শহর নানজিংয়ে গত সোমবার ৪০টি নতুন কেস ধরা পড়ে।
গ্লোবাল টাইম জানায়, আনুষ্ঠানিকভাবে মাত্র ১২টির বেশি কেস ধরা পড়া হুনান প্রদেশের ঝাংজিয়াজি শহরের বাসিন্দা এবং পর্যটকদের শহরটি ত্যাগ না করে করোনা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় সহযোগিতার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ঝাংজিয়াজির সরকারি কর্মচারী এবং পাবলিক স্কুলের শিক্ষকদের স্থানীয় মহামারি নিয়ন্ত্রণ দলে যোগ দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয় বলে জানা গেছে সরকারি এক বিজ্ঞপ্তিতে। গ্লোবাল টাইমের রিপোর্ট অনুযায়ী, "এই কাজ তাদের ক্যারিয়ার পর্যালোচনায় একটি অংশ হিসেবে থাকবে।"
- সূত্র- এনপিআর