বিধিনিষেধ শিথিলের ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো করছে সরকার: পরামর্শক কমিটি
কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির মতে, বিধিনিষেধ শিথিলতার ক্ষেত্রে সরকার কিছুটা তাড়াহুড়ো করছে। এর ফলে সংক্রমণ আবার বৃদ্ধি পাওয়ার আশংকা বাড়তে পারে, তাতে অর্থনীতি আরও বেশি হুমকির মুখে পড়বে। লকডাউন আরও ১-২ সপ্তাহ চলমান রাখতে পারলে এর পুরোপুরি সুফল পাওয়া যেত।
এ অবস্থায় পরামর্শক কমিটি সরকারের গৃহীত সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার সুপারিশ করেছে।
এছাড়া সভা-সমাবেশ, সামাজিক অনুষ্ঠান, পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র, কমিউনিটি সেন্টার ইত্যাদি আরও কিছুদিন বন্ধ রাখতে, রেস্টুরেন্ট/ক্যাফেটেরিয়াতে বসে খাওয়ার ব্যবস্থা না রেখে কেবলমাত্র বিক্রি করার অনুমতি দিতে এবং সক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন চলাচলের সুপারিশ দিয়েছে কমিটি।
কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লার সভাপতিত্বে গত ১২ তারিখ রাতে অনুষ্ঠিত এক সভায় এসব সুপারিশ দেওয়া হয়।
কমিটির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৩শে জুলাই থেকে ১০ই আগস্ট এর লকডাউন কঠোরভাবে পালিত না হলেও জনসমাবেশ হওয়ার মত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থান বন্ধ থাকায় সংক্রমণ হারে উন্নতি পরিলক্ষিত হয়। তবে সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার কোনটিই স্বস্তিদায়ক অবস্থায় আসেনি। এমতাবস্থায় সাম্প্রতিককালে সরকারের দ্রুত বিধিনিষেধ শিথিলের সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করছে কমিটি।
তবে পরামর্শক কমিটির সভায় সদ্য সমাপ্ত টিকাদান ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে এক সপ্তাহে ৫০ লক্ষাধিক মানুষকে টিকা দেয়ায় স্বাস্থ্য বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিনন্দন জানানো হয়। বিভিন্ন মহল থেকে টিকা ক্যাম্পেইন বিষয়ে বিভিন্ন মতামত দেয়ায় জনমনে কিছুটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। কমিটি মনে করে, টিকা কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে সরাসরি গণমাধ্যমের সাথে কথা বললে এরকম পরিস্থিতির উদ্ভব হবে না।
তাছাড়া গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী নারীদের কোভিড-১৯ টিকা প্রদানের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানো হয় কমিটির সভায়। এসব নারীদের টিকা প্রদানের ব্যবস্থা আরো সহজ ও নিরাপদ করার জন্য পরামর্শ দিয়েছে কমিটি। প্রয়োজনে টিকা কেন্দ্র নির্দিষ্ট করা যেতে পারে এক্ষেত্রে।
সকল ক্ষেত্রে সঠিকভাবে মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের ওপর জোর দেয়ার পরামর্শ কমিটির।
এছাড়া বাজারে বিভিন্ন মানের মাস্ক পাওয়া গেলেও তিন স্তরের সঠিক মাস্ক উৎপাদন ও বিক্রি নিশ্চিত করার জন্য ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরকে পদক্ষেপ নিতে তাগিদ দিয়েছে কমিটি।