খরচ ওঠানোর জন্য বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালানো হবে মেট্রোরেল স্টেশনে
শুধু ভাড়া আদায় করে মেট্রোরেলের পরিচালন খরচ মেটানো সম্ভব হবে না। তাই ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) স্টেশনগুলোতে একটি ট্রানজিট ওরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্ট (টিওডি) হাব এবং চারটি প্লাজা তৈরি করতে চায়।
ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিক মঙ্গলবার মাসিক ব্রিফিংয়ে বলেন, 'প্রতিটি স্টেশনে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে, যার লক্ষ্য হবে ভাড়া-বহির্ভূত কার্যক্রম থেকে আয়ের ৩০ শতাংশ উঠিয়ে আনা।'
উত্তরা, আগারগাঁও ও মতিঝিলে তিনটি প্লাজা নির্মাণ করা হবে। ফার্মগেটে একটা প্লাজা স্থাপনের জন্য সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে।
এমএএন সিদ্দিক আরও বলেন, 'বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর এবং নতুনবাজার থেকে পূর্বাচল রুটে মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন-১ নির্মাণের ভৌত কাজ আগামী বছরের জুলাইয়ের মধ্যে শুরু হবে। এজন্য জমি অধিগ্রহণের পর ডিপো এলাকা তৈরি করা হবে।'
তিনি আরও বলেন, '৩১.২৪১ কিলোমিটার দীর্ঘ এই লাইনের জন্য গবেষণা, জরিপ ও মৌলিক নকশা প্রণয়নের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আর পূর্ণাঙ্গ ডিজাইনের কাজ ৭৭ শতাংশ এগিয়েছে।'
এমএএন সিদ্দিক আরও বলেন যে, ডিপোর জন্য জমি অধিগ্রহণ, পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ এবং প্রকল্পের তিনটি প্যাকেজের জন্য দরপত্র সংক্রান্ত কিছু প্রস্তাব জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, বিচারাধীন বিষয়গুলোর ব্যাপারে জাইকা ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেবে এবং ২০২২ সালের জুলাইয়ের মধ্যে নির্মাণকাজ শুরু হবে।
এমএএন সিদ্দিক জানান, মেট্রোরেলের উত্তরা-মতিঝিল অংশের নির্মাণকাজের অগ্রগতি ৬৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ। আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ার কথা আছে উত্তরা-আগারগাঁও অংশে। এ অংশের নির্মাণকাজের অগ্রগতি ৮৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ।
তিনি বলেন, মেট্রোরেলের কাজ সন্তোষজনক গতিতে এগোচ্ছে। কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলে আগামী বছরের মধ্যে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব।
এমএএন সিদ্দিক আরও বলেন, 'বিদ্যমান প্যাকেজে এমআরটি লাইন-৬ প্রকল্পের খরচ বাড়বে না। তবে মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত অতিরিক্ত ১.১৬ কিলোমিটারের জন্য খরচ বাড়বে।'
ডিএমটিসিএল এমডি বলেছেন, নির্মাণ ও পরিচালন খরচ এবং যাত্রীদের আর্থিক সংগতি বিবেচনা করেই মেট্রোরেলের ভাড়া নির্ধারণ করা হচ্ছে।
২০১৯ সালের অক্টোবরে আনুমানিক ৫২ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা ব্যয়ের এমআরটি লাইন-১ প্রকল্পের অনুমোদন দেয় একনেক। এ প্রকল্পের আওতায় বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১৯.৮৯ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ মেট্রোরেল এবং নতুনবাজার থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত ১১.৩৭ কিলোমিটার এলিভেটেড মেট্রোরেল লাইন স্থাপন করা হবে।
কোভিড-১৯-এর বিরূপ প্রভাবে বেশ কয়েকটি গ্রাউন্ডওয়ার্ক ও গবেষণায় বিলম্ব হয়। এ কারণে অনুমোদনের প্রায় ৩ বছর পর এ প্রকল্পের ভৌত কাজ শুরু হবে।
প্রথম ভূগর্ভস্থ মেট্রোরেল লাইনের কাজ ২০২৬ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। চলমান এমআরটি লাইন-৬-এর পর এটিই হবে মেট্রো রেলের দ্বিতীয় রেললাইন।