প্রস্তুতি ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হেরে গেল বাংলাদেশ
ব্যাটিং হলো না মন মতো। প্রায় সব ব্যাটসম্যান শুরু পেলেও ইনিংস বড় করতে পারলেন না কেউই। গড়ে উঠলো না তেমন কোনো জুটি। তবুও ভদ্রস্ত একটা স্কোর হলো মিলিত চেষ্টায়। বোলিংয়ে শুরুটা হলো দারুণ, কিন্তু সপ্তম উইকেটে শ্রীলঙ্কার জমে যাওয়া জুটি আর ভাঙতে পারল না বাংলাদেশ। তাতে হার দিয়েই আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বকাপ প্রস্তুতি শুরু হলো বাংলাদেশের।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম অফিসিয়াল প্রস্তুতি ম্যাচে ৪ উইকেটে হেরে গেছে বাংলাদেশ। দেড়শর আগে তাদের থামিয়ে দেওয়া শ্রীলঙ্কা লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে ১ ওভার বাকি থাকতে।
আবুধাবির টলারেন্স ওভালে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ উইকেট হারায় নিয়মিত বিরতিতে। সৌম্য ছাড়া আর কেউ দলকে সেভাবে এগিয়ে নিতে পারেননি। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান বড় ইনিংসের আশা জাগিয়েও থামেন ৩৪ রানে। তার ২৬ বলের ইনিংস গড়া একটি চার ও দুটি ছক্কায়।
আগের ম্যাচে ফিফটি পাওয়া লিটন দাস শুরুতেই চড়াও হয়েছিলেন। তবে যেতে পারেননি বেশিদূর। তিন চারে ১৬ রান করে বোল্ড হয়ে যান তিনি। ভাঙে ৩১ রানের শুরুর জুটি, ম্যাচে এটাই বাংলাদেশের সেরা জুটি।
আগের ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরির পর স্বেচ্ছায় মাঠ ছাড়া আরেক ওপেনার নাঈম শেখ এই ম্যাচে বেশ ভুগছিলেন। ১৯ বলে করেন কেবল ১১ রান। মারতে পারেননি কোনো বাউন্ডারি। মিস করেন ফ্রি হিটও।
ওমান 'এ' দলের বিপক্ষে গোল্ডেন ডাকের দুঃখ ভুলে রান পেয়েছেন মুশফিকুর রহিম। তবে তিনিও যেতে পারেননি বেশিদূর। ১৩ বলে ১৩ রান করেন অভিজ্ঞ এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। ছক্কার পরই আফিফ হোসেনের বিদায়ে বিপদ বাড়ে বাংলাদেশের।
নুরুল হাসান সোহান ও শামীম হোসেনও পারেননি শেষের দাবি মেটাতে। শেষ দিকে মেহেদি হাসানের ছক্কা ও চারে ৭ উইকেটে ১৪৭ রানের সংগ্রহ গড়ে বাংলাদেশ।
মাঝারি পূঁজি নিয়ে বোলিংয়ে নেমে বাংলাদেশ দ্রুতই পায় সাফল্য। তৃতীয় ওভারে বিস্ফোরক কুশল জেনিথ পেরেরাকে বিদায় করেন তাসকিন আহমেদ। বোলিংয়ে এসে প্রথম বলেই মেহেদি পান উইকেট। নাসুম আহমেদকে দুই ছক্কা মারা পাথুম নিশানকাকে বিদায় করে দেন এই অফ স্পিনার।
দিনেশ চান্দিমালকে বেশি দূর যেতে দেননি সৌম্য। রান আউট হয়ে দ্রুত ফিরেন ভানিন্দু হাসারাঙ্গা। ভানুকা রাজাপাকসেকে বিদায় করে নিজের দ্বিতীয় উইকেট নেন সৌম্য। দাসুন শানাকাকে এলবিডব্লিউ করে দেন শরিফুল ইসলাম।
৭৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া শ্রীলঙ্কার ত্রাতা আভিশকা ফার্নান্দো ও চামিকা করুনারত্নে। তারা যখন জুটি বাঁধেন ৯.১ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৭৩ রান। তারা সেই রান তুলে ফেলেন ৮.১ ওভারে।
এর মধ্যে ১৮তম ওভারে তাসকিনের ওভার থেকে যায় ২১ রান। ম্যাচের সবচেয়ে খরুচে ওভার সেটি। আভিশকা তিন ছক্কা ও দুই চারে ৪২ বলে করেন অপরাজিত ৫৮ রান। একটি করে চার-ছক্কায় চামিকা ২৫ বলে অপরাজিত থাকেন ২৯ রানে।
এই ম্যাচে বাংলাদেশ দলে ছিলেন না চার গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাকিব আল হাসান, মুস্তাফিজুর রহমান ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৪৭/৭ (নাঈম ১১, লিটন ১৬, সৌম্য ৩৪, মুশফিক ১৩, আফিফ ১১, সোহান ১৫, শামীম ৫, মেহেদি ১৬*, তাসকিন ৪*; চামিকা ২-০-১১-০, চামিরা ৩/২৭, কুমারা ১/২৪, মাহিশ ১/৩১, হাসারাঙ্গা ১/২৪, শানাকা ১/১৭)।
শ্রীলঙ্কা: ১৯ ওভারে ১৪৮/৬ (কুশল পেরেরা ৪, নিশানকা ১৫, চান্দিমাল ১৩, আভিশকা ৬২*, হাসারাঙ্গা ৭, রাজাপাকসে ০, শানাকা ৭, চামিকা ২৯*; তাসকিন ৪-০-২৫-১, নাসুম ০/৩৪, মেহেদি ১/২২, শরিফুল ১/৪১, সৌম্য ২/১২)।