'নীল সীমানার বাইরে গেলেই দেখতে পাবেন কেবল অন্ধকার', অবতরণের পর শ্যাটনার
বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক নভোচারী হিসেবে ৯০ বছর বয়সে মহাকাশ ভ্রমণ করলেন 'স্টার ট্রেক' তারকা উইলিয়াম শ্যাটনার। বুধবার পশ্চিম টেক্সাস মরুভূমি থেকে মহাকাশে পাড়ি জমান ক্যাপ্টেন কার্কের চরিত্রে অভিনয় করা এই তারকা। ব্লু অরিজিনের নিউ শেপার্ড রকেটে তার সাথে ছিলেন আরও ৩ জন।
ভ্রমণ শেষে অবতরণের পর তাদেরকে অভিনন্দন জানানোর জন্য ল্যান্ডিং প্ল্যাটফর্মে ছিলেন ব্লু অরিজিনের সিইও জেফ বেজোস নিজেই। ছোটবেলায় নিজের ভাইবোনের সাথে খেলার সময় ক্যাপ্টেন কার্ক হওয়ার ভান করতেন বেজোস। অবশেষে সত্যিকারের ক্যাপ্টেন কার্ককে শুভেচ্ছা জানালেন তিনি।
অবতরণের পর কান্নায় ভেঙে পড়েন শ্যাটনার। তিনি বলেন, "মাত্র যা ঘটলো তা নিয়ে বেশ আবেগাপ্লুত আমি। এ অভিজ্ঞতা অসাধারণ। এটি আমি এবং আমার জীবনের চেয়ে অনেক বড়। বিশালতা, দ্রুততা এবং জীবন-মৃত্যুর আকস্মিকতার সাথে সম্পর্কিত এটি।"
"নীল সীমানার বাইরে গেলেই আপনি দেখতে পাবেন কেবল অন্ধকার...পৃথিবীর প্রত্যেকেরই এটি দেখা দরকার," যোগ করেন তিনি।
ভবিষ্যতে মহাকাশ ভ্রমণের জন্য ইতোমধ্যেই ১০০ মিলিয়ন ডলার সমমূল্যের টিকিট বিক্রি করেছেন জেফ বেজোস। এর মাধ্যমে মহাকাশ পর্যটন শিল্পে আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে এগিয়ে গেলেন তিনি। তবে, গতকাল বিনামূল্যে ভ্রমণ করেন শ্যাটনার।
মিশন এনএস-১৮ নামক এ অভিযানটি নিউ শেপার্ড রকেটের ১৮তম যাত্রা। ১৯৬১ সালে প্রথম আমেরিকান হিসেবে মহাকাশে গমনকারী অ্যালান শেপার্ডের নামানুসারে নামকরণ হয়েছে এই রকেটের।
ব্লু অরিজিন অভিযানের ভাষ্যকার জ্যাকি কর্টেস লিফটঅফের আগে বলেছিলেন, "ক্যাপ্টেন জেমস টাইবেরিয়াস কার্ককে মহাকাশে যেতে দেখার এ ঘটনা আমাদের জন্য বহুল প্রতীক্ষিত এক মুহূর্ত।"
এদিকে, এই অভিযানের পর, মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসাও টুইটারে শ্যাটনারকে শুভকামনা জানিয়েছে। "মহাকাশে উড্ডয়নের জন্য আপনাকে জানাচ্ছি শুভকামনা। আপনি সব সময় আমাদের বন্ধু হয়ে থাকবেন", লিখে পোস্ট করে তারা।
মঙ্গলবার এ অভিযানের কথা থাকলেও প্রবল বাতাস এবং রকেটের কিছু সমস্যার কারণে গতকাল যাত্রা করেন নভোচারীরা। বুস্টার রকেট থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর সর্বোচ্চ ৬৬.৫ মাইল উচ্চতায় পৌঁছে নিউ শেপার্ড। পৃথিবীর ৬২ মাইল উপরে অবস্থিত মহাকাশের সর্বাধিক স্বীকৃত সীমানা, কারমান লাইন অতিক্রম করেন তারা। লাইন অতিক্রমের পর, তিন থেকে চার মিনিটের জন্য ওজনহীনতা অনুভব করেন রকেটের ক্রুরা। ১০ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের এ অভিযান শেষে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে পুনরায় প্রবেশ করে তাদের ক্যাপসুল।
শ্যাটনারের তিন সহযাত্রী ছিলেন ব্লু অরিজিন এক্সিকিউটিভ অড্রে পাওয়ারস, নাসার সাবেক প্রকৌশলী এবং স্যাটেলাইট আর্থ ইমেজিং কোম্পানি প্ল্যানেট ল্যাবসের প্রতিষ্ঠাতা ক্রিস বসুইজেন এবং ক্লিনিকাল রিসার্চ ফার্ম মেডিডাটা সলিউশনের প্রধান নির্বাহী গ্লেন ডি ভ্রিস।
- সূত্র- দ্য গার্ডিয়ান