করোনা ঠেকাতে নিজের বিয়ে বাতিল করলেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী
করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের বিস্তার ঠেকাতে নিউজিল্যান্ডে জারি করা হয়েছে কঠোর বিধিনিষেধ। আর সেই বিধিনিষেধ মানতে গিয়ে নিজের বিয়ে পিছিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন।
মহামারি সামলাতে নিউজিল্যান্ডে যেকোনো ধরনের গণজমায়েত সীমিত করার পাশাপাশি মাস্ক পরাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নতুন এসব বিধিনিষেধ কার্যকর হবে আগামীকাল সোমবার থেকে। আর এ কারণেই অনেকটা বাধ্য হয়ে নিজের বিয়ে পিছিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা।
তবে তিনি নিশ্চিত করেছেন, কঠোর বিধিনিষেধ মানেই লকডাউন নয়; দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য খোলা থাকবে এবং জনসাধারণ নিজেদের পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে দেখাও করতে পারবেন। তবে এ সবকিছুই করতে হবে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে।
রোববার ওয়েলিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে জেসিন্ডা সাংবাদিকদের বলেন, "এর আগে ডেল্টার বিস্তার ঠেকাতে আমরা যে ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছিলাম, ওমিক্রন মোকাবেলায়ও প্রাথমিকভাবে আমাদের সে ধরণেরই পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা দ্রুত পরীক্ষা করব, কন্টাক্ট ট্রেস করব এবং বিস্তার রোধে আইসোলেশনের ব্যবস্থা করবো।"
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহান্তে নিজের বিয়ের পরিকল্পনা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু নতুন বিধিনিষেধের কারণে বিয়ের অনুষ্ঠানটি স্থগিত করা হয়েছে বলে তিনি নিজেই জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, "আমার বিয়েটা আর এগোচ্ছে না।"
তিনি আরও বলেন, আমি আলাদা কেউ নই। দেশের বাকি নাগরিকদের মতই একজন। নিউজিল্যান্ডের লাখ লাখ নাগরিক এখন বড় বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। আমার কষ্ট তাদের তুলনায় কিছুই নয়।
চলতি মাসের শুরুর দিকে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে অকল্যান্ডে আসা একই পরিবারের নয় সদস্যের মধ্যে করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়। এরপরেই দেশটিতে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
নেলসন-মার্লবোরো অঞ্চলে বসবাসকারী ওই পরিবারটি অকল্যান্ডে থাকাকালীন বিয়ের অনুষ্ঠানের পাশাপাশি আরও কয়েকটি আয়োজনে যোগ দিয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, এসব অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার সময় তারা ১০০ জনেরও বেশি মানুষের সংস্পর্শে এসেছিলেন।
জেসিন্ডা বলেন, "এর মানে হল, ওমিক্রন এখন অকল্যান্ডে এবং হয়তো নেলসন-মার্লবোরো অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে।"
বিয়ের তারিখ প্রকাশ না করলেও জনশ্রুতি ছিল, কয়েকদিনের মধ্যেই বিয়ে করতে যাচ্ছিলেন প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন।
দীর্ঘদিনের সঙ্গী ক্লার্ক গেফোর্ডের সঙ্গে নিজের বিয়ে পিছিয়ে যাওয়ার অনুভূতি জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, "জীবন এমনই।"
এ পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডে ১৫ হাজার ১০৪ জন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন এবং মৃত্যু হয়েছে মোট ৫২ জনের।
- সূত্র: আল জাজিরা