তাসকিনের রেকর্ড বোলিংয়ে নাগালেই থাকলো লক্ষ্য, সিরিজ জয়ের হাতছানি
শুরুটা করে দিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এরপর তাসকিন আহমেদ যে আগুন ঝরা বোলিং শুরু করলেন, তাতে দিশেহারা হয়ে উঠলো দক্ষিণ আফ্রিকা। ইয়ানেমান মালান, ডেভিড মিলার, ডোয়াইন প্রিটোরিয়াসরা প্রতিরোধের চেষ্টা করলেন ঠিকই, কিন্তু তাতে সংগ্রহ বড় করা গেল না। বিদেশের মাটিতে তাসকিনের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে অল্পতেই থেমে গেল স্বাগতিকদের ইনিংস।
বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা একটি করে ম্যাচ জেতায় তৃতীয় ম্যাচ হয়ে ওঠে সিরিজ নির্ধারণী। এই ম্যাচ বল হাতে স্বাগতিকদের কঠিন পরীক্ষা নিলেন তাসকিন, সাকিব আল হাসান, মুস্তাফিজুর রহমানরা। বুধবার তৃতীয় ওয়ানডেতে সেঞ্চুরিয়নের সুপারস্পোর্ট পার্কে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩৭ ওভারে ১৫৪ রানেই অলআউট করে দিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডেতে এটাই তাদের সর্বনিম্ন রানের ইনিংস।
দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস একাই ধসিয়ে দেন তাসকিন, ৯ ওভারে ৩৫ রান খরচায় নেন ৫ উইকেট। যা তার ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেরা বোলিং। এ ছাড়া বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকায় ওয়ানডেতে ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়লেন তাসকিন। বাংলাদেশের তৃতীয় পেসার হিসেবে ৫ উইকেট ঝুলিতে উঠলো তার। তাসকিনের আগে মাশরাফি বিন মুর্তজা ও জিয়াউর রহমানের এই কীর্তি ছিল।
দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে শেষ ১০ বছরে বিদেশিদের মধ্যে প্রথম বোলার হিসেবে ওয়ানডেতে ৫ উইকেট নিলেন তাসকিন। তার আগে ২০১২ সালে সর্বশেষ ৫ উইকেট নিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি পেসার লাসিথ মালিঙ্গা।
প্রোটিয়াদের ইনিংসের সপ্তম ওভারে প্রথম আঘাতটি হানেন মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রথম ওয়ানডে জয়ে দারুণ ভূমিকা রাখা ডানহাতি এই স্পিনার ১২ রান করা কুইন্টন ডি কককে ফিরিয়ে দেন। শুরুটা মন্দ না হলেও প্রথম উইকেট হারানোর পর দিক হারাতে হয় দক্ষিণ আফ্রিকাকে।
১৩তম ওভারে আঘাত হানেন তাসকিন আহমেদ। দারুণ ছন্দে থাকা বাংলাদেশের ডানহাতি এই পেসার বোল্ড করেন ৯ রান করা কাইল ভেরেইনাকে। দুই ওভার পর আবারও তোপ তাগেন আগুনে বোলিং করা তাসকিন। এবার তার শিকার ওপেনার ইয়ানেমান মালান। ডানহাতি এই ওপেনার ৫৬ বলে ৭টি চারে ৩৯ রান করে আউট হন।
দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে স্বাগতিকরা যখন বিপাকে, তখন স্পিন জাদুতে অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাকে সাজঘর দেখিয়ে দেন সাকিব আল হাসান। ২৫ রানের ব্যবধানে ৪ উইকেট হারিয়ে দিশেহারা হয়ে ওঠা দলকে আরও বিপদে ফেলেন শরিফুল ইসলাম। বাঁহাতি তরুণ এই পেসার প্রোটিয়াদের অন্যতম ব্যাটিং অস্ত্র রাসি ফন ডার ডুসেনের উইকেট তুলে নেন।
৮৩ রানে ৫ উইকেট হারানো দলকে পথ দেখাতে শুরু করেন ডেভিড মিলার ও ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস। যদিও এই জুটি ভাঙতে বেশি সময় নেননি তাসকিন। ২০ রান করা প্রিটোরিয়াসকে নিজের তৃতীয় শিকারে পরিণত করেন। এরপর কেবল তারই দাপট। ১৬ রান করা ডেভিড মিলার ও কাগিসো রাবাদাকে ফিরিয়ে প্রথমবারের মতো বিদেশের মাটিতে ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন বাংলাদেশের পেস আক্রমণের সেরা শক্তি হয়ে ওঠা এই পেসার।
এরপর লুঙ্গি এনগিডিকে রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় করেন সাকিব। তাবরাইজ শামসিকে সঙ্গে নিয়ে আরও কিছুটা পথ পাড়ি দেন কেশব মহারাজ। ৩৯ বলে ৪টি চারে ২৮ রান করেন তিনি। তাসকিন ছাড়াও আগুন ঝরানো বোলিং করেন সাকিব, মুস্তাফিজরা। ৯ ওভারে ২৪ রানে ২ উইকেট নেন সাকিব। ৭ ওভারে ২৩ রানে কোনো উইকেট পাননি মুস্তাফিজ। এক উইকেট নেওয়া শরিফুল ইসলাম ৭ ওভারে ৩৭ রান খরচা করেন।