দুনিয়ার সবচেয়ে নিঃসঙ্গ বাড়ি
মহাসমুদ্রের বিচ্ছিন্ন দ্বীপে সবুজ পাহাড়ের বুকে সাদা একটা বাড়ি। আশে-পাশে কোনো লোকালয় নেই। যতদূর চোখ যায়, অবিরাম প্রাকৃতিক লীলাভূমি। এই বাড়ির ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই এটিকে 'পৃথিবীর নিঃসঙ্গতম বাড়ি' হিসেবে অভিহিত করেছেন।
আইসল্যান্ডের দক্ষিণ উপকূলের ছোট ছোট দ্বীপে গড়ে ওঠেছে ভেস্টম্যানেয়ার অঞ্চল। এইসব দ্বীপের মধ্যে সবচেয়ে উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে অবস্থান এলিরে দ্বিপটির। সেই দ্বীপের ঘাসের ওপর একা দাঁড়িয়ে রয়েছে ওই বাড়ি।
১৯৩০-এর দশকের পর ওই অঞ্চলে কোনো মানুষ বসবাস করে না।
বছরের পর বছর ধরে এলিরে দ্বীপের ওই নিঃসঙ্গ বাড়ি ঘিরে রয়েছে নানা গুজব ও তত্ত্ব। কেউ কেউ বলছেন, কোনো এক ছিটগ্রস্ত ব্যবসায়ী প্রকৃতির রোষানল থেকে বাঁচতে এটি বানিয়েছেন। আবার, কারও কারও ধারণা, এটি কোনো ধর্মীয় অন্ধবিশ্বাসের ফসল। এমনকি, আইসল্যান্ডিক গায়ক বিয়োর্কই এ বাড়ির মালিক, এমন গুজবও অনলাইনে বেশ জোরেশোরে ছড়িয়েছে।
অবশ্য, এসব গুজবের কোনোটিই সত্য নয়। আসল ঘটনা হলো, পৃথিবীর এই নিঃসঙ্গতম বাড়ির সঙ্গে এইসব ষড়যন্ত্র তত্ত্বের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং ১৯৫০-এর দশকে স্রেফ একটি শিকার কুটির হিসেবে ব্যবহারের জন্য এটি বানিয়েছে এলিরে হান্টিং অ্যাসোসিয়েশন। বিচ্ছিন্ন ওই দ্বীপে পাফিন পাখি শিকার করতে এলে বাড়িটি ব্যবহার করেন সংগঠনটির সদস্যরা।
অবশ্য, ওই দ্বীপে কোনো মানুষের স্থায়ী বসবাস কিংবা এই বাড়ি ছাড়া অন্য কোনো বাড়ি না থাকলেও কী করে সেখানে একটি হান্টিং অ্যাসোসিয়েশন গড়ে ওঠতে পারে, সেটি পরিষ্কার নয়।
মজার ব্যাপার হলো, ১৯৩০-এর দশকের আগ পর্যন্ত এলিরে দ্বীপে বেশ কিছু পরিবার বাস করত। এরপর তারা জনবহুল এলাকায় চলে গেলে দ্বীপটি সেই থেকে জনশূন্যই পড়ে রয়েছে। তবে অ্যাটলান্টিক পাফিন ও মাছ বেশ ভালো পাওয়া যায় বলে তারা সময় পেলেই শিকারের উদ্দেশ্যে ক্ষণকালের জন্য এখানে পাড়ি জমান।
- সূত্র: অডিটি সেন্ট্রাল