মহামন্দার সময়কালীন বেকারত্বের রেকর্ড স্পর্শ করতে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র
১৯৩০ এর দশকের মহামন্দার দুঃসহ স্মৃতি আরও একবার বাস্তব হয়ে উঠতে পারে যুক্তরাষ্ট্রে। সাম্প্রতিক করোনাভাইরাস পরিস্থিতি অন্তত সেদিকেই ইঙ্গিত করছে।
এর ধারাবাহিকতায় একদিকে যেমন বিশ্বের মাঝে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে দেশটিতে, ঠিক তেমনি চাকরির বাজারও সংকুচিত হচ্ছে ক্রমাগত।
শুধুমাত্র গত এপ্রিলেই এর ধারাবাহিকতায় চাকরিহারা হয়েছেন ২ কোটি ৫ লাখ মার্কিনী। আর সার্বিক বেকারত্বের হার উন্নীত হয়েছে ১৪ দশমিক ৭ শতাংশে।
মহামারি আঘাত হানার পর থেকেই প্রবৃদ্ধির হার স্তিমিত হয়ে পড়েছে পৃথিবীর শীর্ষ অর্থনীতিটিতে। বিগত কয়েক দশকের মাঝে যা সবচেয়ে কম। প্রবৃদ্ধির বদলে বরং সংকোচনের জন্ম নিচ্ছে এখন।
মোট দেশজ উৎপাদন ও সেবা যার ধারাবাহিকতায় এপ্রিলে সমাপ্ত তিন মাসের প্রান্তিকে নেতিবাচক ৪ দশমিক ৮ শতাংশ সংকোচনের মুখে পড়ে। খবর বিবিসি ও ফোর্বসের।
অর্থনীতি সংকোচনের প্রভাবও দৃশ্যমান। মাত্র দুই মাস আগেও বেকারত্বের হার ছিল মাত্র সাড়ে ৩ শতাংশ, বা গত অর্ধ-শতকের মাঝে সবচেয়ে কম। সেটাই এখন ১৯৩০ এর মহামন্দাকালীন সময়ের রেকর্ড স্পর্শ করতে চলেছে। ওই সময়ে বেকারত্বের হার ছিল ২০ শতাংশ।
মার্কিন শ্রম পরিসংখ্যান অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান এরিকা গ্রোশ্যেন বলেন, ঐতিহাসিকভাবেই এটা (বেকারত্ব হার) নজিরবিহীন। মহামারি থেকে রক্ষা পেতে আমরা অর্থনীতিকে ইচ্ছে করে কোমায় পাঠিয়েছি। এর প্রভাবে বিগত কয়েক যুগের তথ্যাবলীতে লক্ষ্য করা যায়নি এমন গতিতে চাকরি হারানোর ঘটনা দেখা যাচ্ছে।
মার্কিন শ্রম মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে অর্থনীতির সকলখাতে নিম্নগতির চিত্র তুলে ধরা হয়।
চাকরির বাজার সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয়েছে আতিথেয়তা এবং অবসরকেন্দ্রিক বিনোদন সেবাখাতে। এ খাতে বেতনভোগী কর্মীর সংখ্যা কমেছে ৭৭ লাখ, যা মোট কর্মরতদের ৪৭ শতাংশ।
শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কিত খাত আছে তার পড়েই। এদুটিতে মোট ২৫ লাখ পদ খালি করেছে নিয়োগদাতারা। অন্যদিকে খুচরা ব্যবসায়ীরা ছাঁটাই করেছেন ২১ লাখ কর্মী।
মার্কিন শ্রম মন্ত্রণালয় জানায়, চাকরি হারানোদের তিন-চতুর্থাংশ সাময়িকভাবে বরখাস্ত হয়েছেন। অর্থনীতি পুনরায় সচল হলে এসব কর্মী পুনরায় চাকরি ফিরে পাওয়ার আশা করছেন।