উজবেকিস্তানে ৫ গুণ রপ্তানি বৃদ্ধির সুযোগ দেখছেন ব্যবসায়ীরা
বাংলাদেশের সঙ্গে উজবেকিস্তানের বাণিজ্য বাড়ানোর উজ্জল সম্ভাবনা দেখছেন ব্যবসায়ীরা। সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারলে দেশটিতে রপ্তানির পরিমাণ ৫ গুণ বাড়ানো সম্ভব বলে মনে করছেন তারা।
উদ্যোক্তারা বলছেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ ওষুধ, চামড়াজাত পণ্য, বাইসাইকেল, সিরামিক পণ্য, হিমায়িত খাদ্য, ফার্নিচার, হস্তশিল্প, কাপড়, পর্যটন, আইটি, আইটিএস, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, প্লাস্টিক, মানব সম্পদসহ বিভিন্ন পণ্য ও সেবার ভালো বাজার হতে পারে উজবেকিস্তান।
একই সঙ্গে বাংলাদেশি কোম্পানিসমূহের বৈদেশিক বিনিয়োগের জন্য উজবেকিস্তান হতে পারে আদর্শ গন্তব্য। দেশটি বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য মধ্য এশিয়া তথা পূর্ব ইউরোপের প্রবেশদ্বার উন্মুক্ত করবে বলেও মন্তব্য করেন তারা।
এ লক্ষ্যে আগামী ২৬ ও ২৭ মে প্রথমবারের-মত উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দে দুই দেশের বেসরকারি পর্যায়ের যৌথ উদ্যোগে 'বাংলাদেশ-উজবেকিস্তান বিজনেস সামিট অ্যান্ড বিটুবি' আয়োজন করা হয়েছে; যেখানে দুই দেশের ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা তাদের নিজস্ব পণ্য ও সেবা তুলে ধরতে পারবেন।
মঙ্গলবার রাজধানীর পল্টনে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের অফিসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ-উজবেকিস্তানের মধ্যে মোট ৪৫.২৪ মিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়েছে; যা ২০২১-২২ অর্থবছরে কমে দাঁড়িয়েছে ৩৫.১৩ মিলিয়ন ডলারে।
২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ উজবেকিস্তানে রপ্তানি করেছে ২৬.৩৩ মিলিয়ন ডলারের পণ্য; এর বিপরীতে আমদানি করেছে ৮.৮০ মিলিয়ন ডলারের। আলোচ্য অর্থবছরে উদ্বৃত্ত বাণিজ্য ছিল ১৭.৬৩ মিলিয়ন ডলারের; এছাড়াও ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ট্রেড গ্যাপ ছিল ৪৬২.৩৭ মিলিয়ন ডলারের।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলাদেশ ট্রেড সেন্টারের (বিটিসি) সহযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা ৭ জন প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা এ সামিটের আয়োজন করছেন। উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দের উইনধাম হোটেলে এ সামিট হবে। সামিটের মূল উদ্দেশ্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানো।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে অবস্থিত উজবেকিস্তানের অনারারি কনসাল ড. ইঞ্জিনিয়ার মো. তাহের শাহ, বাংলাদেশ ট্রেড সেন্টারের (বিটিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জয়নাল আবেদীন এবং তুর্কি বিডি গ্রুপের প্রধান নির্বাহী সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
বর্তমানে উজবেকিস্তান থেকে বাংলাদেশ পোশাক খাতের কাঁচামাল আমদানি করে থাকে। আর উজবেকিস্তান বাংলাদেশ থেকে টেক্সটাইল ও ওষুধ আমদানি করে।
ড. ইঞ্জিনিয়ার মো. তাহের শাহ বলেন, উজবেকিস্তানের লোকজন যখন ইউরোপ-আমেরিকা থেকে পোশাক পণ্য কেনে তখন তারা দেখে ট্যাগ লাগানো থাকে 'মেইড ইন বাংলাদেশ'। তাই তাদের আগ্রহ বাড়ছে।
ওই দেশের সরকারও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছেন; প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ মাত্র ২ টাকা, গ্যাস প্রায় ফ্রি, এছাড়া জমিও দিচ্ছেন। এসব সুবিধা নিচ্ছে ভারতসহ বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা।
আমাদের দেশের উদ্যোক্তারাও এর সুযোগ নিতে পারেন। এজন্য আমাদের দুই দেশের যোগাযোগ বাড়ানো জরুরি। এমন সময় এ ধরনের সামিট ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে সহযোগিতা করবে।
বিটিসি-এর প্রধান নির্বাহী জানান, বর্তমানে উজবেকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি কোনো বিমান যোগাযোগ নেই। অন্য দেশ হয়ে যেতে হয়। এতে দুই লাখ টাকার বেশি বিমান ভাড়া লাগে। তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ উন্নতি করতে হলে সরাসরি বিমান ফ্লাইট জরুরি।