কৃষ্ণাঙ্গ যুবক হত্যার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবল বিক্ষোভ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে জর্জ ফ্লয়েড (৪৬) নামের কৃষ্ণাঙ্গ যুবক নির্মমভাবে খুনের ঘটনার জেরে পুরো যুক্তরাষ্ট্রে চলছে প্রবল বিক্ষোভ ও আন্দোলন।
আর বিক্ষোভকারীদের চাপে পড়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলবেন। মিনেসোটায় বিক্ষোভ তিনি মেনে নেবেন না।
দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এই খবর জানা গেল।
শুক্রবার (২৯ মে) জর্জ ফ্লয়েডকে হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভের সময় মিনেসোটা, নিউইয়র্ক এবং আটলান্টায় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে।
লস অ্যাঞ্জেলস থেকে শুরু করে নিউইয়র্কেও শুরুর দিকে বিক্ষোভকারীরা শান্তিপূর্ণভাবে নিজেদের দাবি তুলে ধরেন। তবে সিএনএন-এর প্রধান কার্যালয়ের সামনে পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষোভকারীরা।
এদিকে বিক্ষোভকারীরা জমায়েত হতেই হোয়াইট হাউস লকডাউন করে দেয়া হয়। পরিস্থিতি বিবেচনা করে মিনেসোটার গভর্নর টিম ওয়ালেজ কারফিউ জারি করেন।
সে অনুসারে কেউ রাত ৮ টার পর রাস্তায় বের হলে কিংবা জনপরিসরে থাকলে জেল এবং এক হাজার ডলার জরিমানা করা হতে পারে বলে জানান গভর্নর।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপের জেরে পুলিশ স্টেশনে পেট্রোল ঢেলে দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, পুলিশ এভাবে কারো সঙ্গে নির্মম আচরণ করতে পারে না। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত সকল কৃষ্ণাঙ্গের ওপর এ ধরনের নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে।
এদিকে, জর্জ ফ্লয়েড নামের কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত ডেরেক শভিন নামে ওই পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতারের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার (২৯ মে) দেশটির ওই অঙ্গরাজ্যের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান।
মিনেসোটার ডিপার্টমেন্ট অব পাবলিক সেফটির কমিশনার জন হ্যারিংটন বলেন, গত সোমবার (২৫ মে) হ্যান্ডকাফ পরা ফ্লয়েডের ঘাড়ে হাঁটু দিয়ে কমপক্ষে পাঁচ মিনিট চেপে ধরে থাকেন ডেরেক শভিন নামের শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই কৃষ্ণাঙ্গকে পুলিশ যে অত্যাচার করেছে তা পথচারীরা মোবাইল ফোনে রেকর্ড করেন।
সেই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে জনগণ বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। বিক্ষোভকারীরা ফ্লয়েডের নামে শ্লোগান দিচ্ছে এবং বলছে 'আমি শ্বাস নিতে পারছি না'।
এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট চার পুলিশ সদস্যকে তাত্ক্ষণিকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে গতকালের আগ পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা করা হয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিক্ষোভকারীরা বরখাস্ত পুলিশ সদস্যদেরকে বিচারের মুখোমুখি করার দাবিতে তিন দিন ধরে বিক্ষোভ করছে।
ফ্লয়েডের পরিবার জড়িত চার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়েরের দাবি জানিয়েছে। ফ্লয়েডের ভাই ফিলোনাইস সিএনএনকে বলেছেন, আমার ভাই আর ফিরবে না। আমরা ন্যায় বিচার চাই।
প্রাথমিক ভাষ্যে পুলিশ জানায়, ফ্লয়েডের গাড়িতে জাল নোট থাকার খবর পেয়ে সোমবার কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। তারা ফ্লয়েডকে গাড়ি থেকে নেমে সরে যেতে বললে তিনি কর্মকর্তাদেরকে বাধা দেন এবং গ্রেফতার এড়ানোর চেষ্টা করেন।
যদিও ভিডিওতে এমন কিছু দেখা যায়নি। এ ঘটনার তদন্ত করছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন- এফবিআই।