কোভিড প্রতিরোধে মডের্নার টিকা ৯৪.৫% সফল
শেষ পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের মাধ্যমে নিজেদের তৈরি কোভিড-১৯ টিকা ৯৪.৫ শতাংশ সফল বলে জানিয়েছে মডের্না ইঙ্ক। আজ সোমবার (১৬ নভেম্বর) মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিতীয় মার্কিন কোম্পানি হিসেবে টিকা গবেষণায় বড় সাফল্যের দাবি করলো তারা।
এর আগে ফাইজারও তাদের টিকা ৯০ শতাংশের বেশি সফল বলে জানিয়েছিল। দুটি কোম্পানিই mRNA প্রযুক্তির মাধ্যমে তাদের টিকা তৈরি করে।
মডের্না এবং ফাইজার উভয়ই তাদের মধ্যবর্তী ফলাফল বিশ্লেষণের তথ্যে সফলতার কথা উল্লেখ করেছে, যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ামক সংস্থার অনুমোদন পেতে তাদের আরও বিস্তারিত তথ্য জমা দিতে হবে। ডিসেম্বরে স্থানীয় ওষুধ প্রশাসন সবুজ সংকেত দিলে একইসঙ্গে দুটি টিকা জরুরি প্রয়োগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পাওয়া যাবে, বলে আশা করা হচ্ছে। বছরের শেষ নাগাদ টিকা দুটির ৬ কোটি ডোজ বাজারে আসতে পারে।
আর আগামী বছর টিকা উৎপাদক দুটির কাছ থেকে শতকোটি ডোজ প্রতিষেধক কিনে নেবে মার্কিন সরকার। দেশটির ৩৩ কোটি জনসংখ্যার জন্য যা প্রয়োজনের চাইতেও অনেকটা বেশি।
মডের্না ও ফাইজারের টিকা তৈরিতে ব্যবহৃত mRNA হচ্ছে ম্যাসেঞ্জার আরএনএ যা আসলে; রাইবোনিউক্লিক এসিডের সংক্ষিপ্ত রূপ। শরীরের কোষকে এটি ভাইরাস শনাক্তে বিশেষ ধরনের জৈব-রাসায়নিক সংকেত পাঠায়। প্রযুক্তিটি বিশ্বব্যাপী সাড়ে ৬ কোটি মানুষকে আক্রান্ত করা এবং ১৩ লাখ ব্যক্তির প্রাণ কেড়ে নেওয়া কোভিড-১৯ মহামারি অবসানের হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে।
একই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হলেও ফাইজারের মতো মডের্নার টিকাটি অতি-হিমশীতল ব্যবস্থায় সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই। ফলে টিকাটি সহজে বিতরণ করা সম্ভব হবে।
মডের্না জানায়, তাদের টিকা ২ থেকে ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ৩০ দিন রাখা যাবে। আর মাইনাস ২০ ডিগ্রীতে প্রতিষেধকের কার্যকারিতা অক্ষুণ্ণ থাকবে ছয় মাস পর্যন্ত।
যুক্তরাষ্ট্রে যখন অব্যাহত গতিতে সংক্রমণ বাড়ছে এবং ইউরোপ লকডাইনের পথে ফিরছে ঠিক সেই মুহূর্তেই টিকা নিয়ে আশা জাগানিয়া সংবাদ জানা গেল।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে মডের্না ইঙ্কের প্রেসিডেন্ট স্টিফেন হোগে আশা প্রকাশ করে বলেন, 'অচিরেই কোভিড-১৯ রুখে দিতে সক্ষম একটি টিকা আমরা পেতে চলেছি।'
মডের্নার তৃতীয় বা শেষ পর্যায়ের ট্রায়ালে অংশ নেওয়া ৯৫ জন স্বেচ্ছাসেবী সংক্রমণের শিকার হন। এদের মধ্যে মাত্র পাঁচ জন প্রকৃত টিকাটি পান, বাকিদের প্লেসেবো হিসেবে অন্য ওষুধের নির্যাস দেওয়া হয়েছিল। ২৮ দিনের ব্যবধানে তাদের মোট দুই ডোজ করে প্রতিষেধকটির ইনজেকশন দেওয়া হয়।
ট্রায়াল শেষে দেখা যাচ্ছে, টিকাপ্রাপ্তরা সংক্রমণ মোকাবিলা করে সুস্থতা লাভ করেছেন। নেতিবাচক কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও তাদের মধ্যে দেখা যায়নি।
- সূত্র: রয়টার্স