ড্রোনের মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ভ্যাকসিন পৌঁছে দিবে ভারত
দেশের টিকাদান প্রক্রিয়াকে দ্রুততর করার জন্য বাণিজ্যিক ড্রোনের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ভ্যাকসিন পৌঁছে দিতে শুরু করেছে ভারত। দেশটির একজন সিনিয়র বিজ্ঞানী সংবাদ মাধ্যম বিবিসিকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
বিজ্ঞানী ডা. সমীরণ পান্ডা জানান, ভারতের উত্তর-পূর্বের পাহাড়ি রাজ্যগুলোতে ড্রোনের মাধ্যমে ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হচ্ছে।
২০২১ সালের মধ্যে দেশের সকল প্রাপ্তবয়স্কদের টিকাদান নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়েছে ভারত। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই লক্ষ্য পূরণ করতে হলে দেশের সব জায়গায় একই গতিতে টিকাদান ক্যাম্পেইন চালাতে হবে।
সোমবার উত্তর-পূর্বের রাজ্য মণিপুরে প্রথম ড্রোন পরীক্ষা চালানো হয়। ভ্যাকসিনের দশটি ডোজ বহনকারী একটি ড্রোন বিষ্ণুপুর থেকে লোকটাক হ্রদের কারাং দ্বীপে অবস্থিত একটি প্রাইমারি হেলথ ক্লিনিকে উড়ে যায়। দ্বীপে ঘেরা ২৪০ বর্গ কিলোমিটারের এই হ্রদ পাড়ি দিয়ে ক্লিনিকে পৌঁছাতে ড্রোনটির ১২ মিনিট সময় লাগে।
মণিপুরের কারাং দ্বীপে ৩৫০০ মানুষের বসবাস। সাধারণত, নৌকা ও স্থলপথে এই দ্বীপে পৌঁছাতে চার ঘণ্টা সময় লেগে যায়।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) এর মহামারিবিদ্যা বিভাগের প্রধান ডা. পান্ডা জানান, পরীক্ষামূলকভাবে ড্রোন পরিচালনা সফল হয়েছে এবং সেদিন দ্বীপের ১০ জন মানুষ ভ্যাকসিন নিয়েছেন।
পান্ডা আরও জানান, পাহাড়ি পথ ও ঝরনা পাড়ি দিয়ে প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে পৌছাতে প্রায় ১২ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। তাই এই মুহূর্তে মণিপুর ও নাগাল্যান্ড রাজ্য সেসব গ্রামে ড্রোন দিয়ে ভ্যাকসিন পাঠানোর কথা ভাবছে।
এছাড়া, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জেও ড্রোনের মাধ্যমে ভ্যাকসিন ডোজ পাঠানো হবে।
ডা. পান্ডা বলেন, "আমরা এসব জনবিরল অঞ্চলের বাসিন্দাদের টিকা দেওয়ার মাধ্যমে ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে চাই। কারণ তারা যদি করোনায় আক্রান্ত হয় এবং জটিল রোগ বাধিয়ে বসে; তাদের পক্ষে দ্রুত অক্সিজেন বা ভেন্টিলেশন সুবিধা পাওয়া কঠিন।"
ভ্যাকসিন পরিবহনের কাজে ভারত যেসব ড্রোন ব্যবহার করছে, তা সর্বোচ্চ সাড়ে চার কেজি বা ৯০০ ভ্যাকসিন ডোজ বহন করতে সক্ষম। ভ্যাকসিন পৌঁছাতে ড্রোনগুলো অন্তত ৭০ কিলোমিটার পথ উড়ে যেতে পারে।
সরকারি ডেটা অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত ভারত অনুমোদিত তিনটি ভ্যাকসিনের মোট ৯২৫ মিলিয়ন ডোজ দিয়েছে দেশের জনগণকে। দেশের ৭০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ ইতোমধ্যে ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নিয়েছেন।
করোনাভাইরাস মহামারিতে যুক্তরাষ্ট্রের পর ভারতে সর্বোচ্চ ৩৩ মিলিয়ন মানুষ কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন; মারা গেছেন ৪ লাখ ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ।
- সূত্র: বিবিসি