কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের পৃথিবীর সর্ববৃহৎ পরীক্ষা শুরু
মডের্না ইঙ্ক এবং মার্কিন সরকারের বিজ্ঞানীদের যৌথ প্রচেষ্টায় উদ্ভাবিত একটি প্রার্থী কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। প্রায় ৩০ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর অংশগ্রহণে এটি বিশ্বের সর্ববৃহৎ ভ্যাকসিন সুরক্ষা পরীক্ষার উদ্যোগ।
তৃতীয় ধাপের এ পরীক্ষা শুরু হয়েছে আজ সোমবার থেকে। দেশটির ৮৯টি স্বাস্থ্য কেন্দ্র ভ্যাকসিন পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। অংশগ্রহণকারীদের অর্ধেককে ২৮ দিনের ব্যবধানে ভ্যাকসিনের দুই ডোজ দেওয়া হবে। বাকি অর্ধেককে এর পরিবর্তে দেওয়া হবে, লবণপানির একটি মিশ্রণ। তবে স্বেচ্ছাসেবী বা তাদের ইঞ্জেকশন দেওয়া স্বাস্থ্য কর্মীরা কেউই জানবেন না, আসলে পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিনটি কারা পাচ্ছেন।
পরীক্ষার ফলাফল স্বচ্ছ রাখতেই এমন নিয়ম ।
এরপর বিজ্ঞানীরা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জন্য স্বেচ্ছাসেবীদের স্বাস্থ্য নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করবেন। বিশেষ করে, যাদের দেহে টিকা দেওয়া হয়নি তারা কোভিড-১৯ আক্রান্ত হন কিনা- তা দেখতে চান বিজ্ঞানীরা। সেই তুলনায় ভ্যাকসিন গ্রহণকারীদের মাঝে এর হার কম দেখা দিলে, প্রতিষেধকটি সফল বলে প্রমাণিত হবে।
মডের্না ইঙ্কের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষায় বহুবিধ লক্ষ্যমাত্রা থাকায়, একে বিশ্বের সবচেয়ে বিস্তৃত কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক গবেষণাও বলা হচ্ছে।
প্রার্থী ভ্যাকসিনটি গুরুতর কোভিড-১৯ সংক্রমণ এবং মৃত্যু ঠেকাতে পারে কিনা, তাও পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। গবেষণাগারে যেভাবে সফল হয়েছে, কোভিড আক্রান্ত রোগীদের দেহেও যদি সেভাবে সফল হয়; তাহলে চতুর্থ বা শেষ ধাপের পরীক্ষার জন্য- সেটা হবে এক বিশাল অগ্রগতি।
ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বা মানবদেহে প্রয়োগের প্রথম দুই স্তরে সার্স কোভ-২ বা নতুন করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালীভাবে উদ্দীপ্ত করতে সমর্থ হয় মডের্নার ভ্যাকসিন।
অবশ্য, এটি নেওয়া স্বেচ্ছাসেবীদের দেহে ক্লান্তি, বাহুতে ব্যথা এবং জ্বরের মতো মৃদু উপসর্গ লক্ষ্য করা গেছে। কোভিড-১৯ প্রতিরোধে মানবদেহের কোন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা উদ্দীপ্ত করা বেশি প্রয়োজন, তা এখনও অজানা। তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা- এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে সহায়তা করবে, আশা মার্কিন বিজ্ঞানীদের।
মডের্নার গবেষণায় অংশ নিয়েছেন মার্কিন সরকারি সংস্থা- ন্যাশনাল ইনস্টিটিউড অব হেলথের (এনআইএইচ) বিজ্ঞানীরা।
সংস্থাটির পরিচালক ডক্টর ফ্রান্সিস কলিন্স এক বিবৃতিতে জানান, ''২০২০ সালের শেষ নাগাদ একটি নিরাপদ এবং কার্যকর ভ্যাকসিন সরবরাহ করাটা আমাদের সর্বোচ্চ লক্ষ্য। মার্কিন জনগণের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করায় যার কোনো বিকল্প নেই।''
পরীক্ষা কার্যক্রমের দ্রুততা সম্পর্কে তিনি বলেন, ''কঠোর সুরক্ষাবিধি অনুসরণ করেই এর প্রতিটি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।''