মসজিদে আগুন ধরিয়ে ‘যত বেশি সম্ভব’ মুসলিমকে হত্যা করতে চেয়েছিল ক্রাইস্টচার্চে হামলাকারী
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে ২০১৯ সালে দুটি মসজিদে ব্রেন্টন ট্যারান্ট নামে এক শেতাঙ্গ ব্যক্তির ভয়াবহ বন্দুক হামলায় নিহত হন ৫১ জন। মসজিদে নামাজরত মুসল্লিদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি চালানো ব্রেন্টনের সাজা ঘোষণার শুনানি শুরু হয়েছে সোমবার।
বিবিসির এক খবরে বলা হয়, মসজিদে হামলা করে ৫১ জনকে হত্যায় অভিযুক্ত ব্রেন্টন টারান্টের যে আরো মসজিদে হামলার উদ্দেশ্য ছিল সেই তথ্য বেরিয়ে এলো চলমান শুনানিতে। চারদিন ধরে এই শুনানি চলবে। মসজিদে আগুন ধরিয়ে দিয়ে 'যত বেশি সম্ভব মানুষকে হতাহত' করার পরিকল্পনাও ছিল তার।
বার্তা সংস্থা এপির বরাত দিয়ে ইউএনবির এক খবরে বলা হয়েছে, ক্রাইস্টচার্চ হাইকোর্টে ব্রেন্টনের সাজা ঘোষণার চার দিনের শুনানির প্রথম দিনেই ওই হামলার বিষয়ে নতুন বিবরণ তুলে ধরা হয়। এ সময় আদালতের এক প্রসিকিউটর জানান, মুসল্লিদের হত্যার পরে মসজিদগুলো পুড়িয়ে ফেলার ইচ্ছা ছিল বন্দুকধারীর। কারণ তিনি আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন।
শুনানির সময় এ প্রথমবারের মতো ওই হামলায় নিহতদের মধ্যে কয়েকজনের পরিবার এবং বেঁচে যাওয়াদের বন্দুকধারীর মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ দেয়া হয়।
হামলায় নিহত ৩৩ বছর বয়সী আতা এলায়ান নামে একজনের মা হামলাকারীকে উদ্দেশ করে বলেন, 'আপনি নিজের মানবতাকে হত্যা করেছেন এবং আমি মনে করি না যে পৃথিবী আপনাকে ভয়াবহ এ অপরাধের জন্য ক্ষমা করবে।'
এর আগে ৫১টি হত্যা, ৪০টি হত্যাচেষ্টা এবং সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন ২৯ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ান ব্রেন্টন হ্যারিসন ট্যারান্ট। এটি ছিল নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসে প্রথম সন্ত্রাসবাদের ঘটনা।
উনত্রিশ বছরের ব্রেন্টন টারান্টকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হতে পারে, যেখানে কোনরকম প্যারোলের সুযোগ থাকবে না। নিউজিল্যান্ডে এর কাউকে এরকম সাজা দেয়া হয়নি।
প্রসঙ্গত, জুমার নামাজের সময় মুসল্লিদের ওপর বন্দুক হামলার ঘটনা সেদিন সরাসরি অনলাইনে সম্প্রচার করেছিলেন বন্দুকধারী ট্যারান্ট। মর্মান্তিক ওই হামলায় স্তম্ভিত হয়ে পড়েছিল পুরো বিশ্ব।
করোনা পরিস্থিতির কারণে সোমবার আদালতের শুনানির সময় মূল কক্ষ প্রায় জনশূন্য ছিল। তবে ভার্চুয়ালি এতে সংযুক্ত ছিলেন হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া অনেক ব্যক্তি ও নিহতের স্বজনরা। তাদের মধ্যে অনেকেই শুনানির এ চার দিনে আদালতে নিজেদের বক্তব্য উপস্থাপন করার সুযোগ পাবেন।