৯৩ বছর বয়সী ক্যাথেরিন ডরোথি'র করোনা জয়
বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির কারণে সব বয়সী মানুষের মাঝে মরণভীতি ছড়িয়ে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসনহখ্যান অনুযায়ী, পৃথিবী জুড়ে বিভিন্ন বয়সের ৬ লাখ ১৫ হাজার ৪১২ জন মারা গেছেন। তবে সুস্থতার পরিমাণও অনেক, সুস্থ হয়ে ফিরেছেন অনেকেই। তাদেরই একজন দক্ষিণ আফ্রিকার ৯৩ বছর বয়সী আন্টি ডরোথি নামের এক নারী।
দক্ষিণ আফ্রিকায় চুড়ান্ত আঘাত হেনেছে করোনাভাইরাস, প্রতিদিন ছাড়িয়ে যাচ্ছে গতদিনের মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। দেশটিতে কোভিড-১৯ নিয়ে চরম হতাশার মধ্যেও আশা জাগিয়েছেন ৯৬ বছর বয়সী কেপটাউনের ক্যাথেরিন ডরোথি নিউম্যান। করোনা জয় করে ফিরে দক্ষিণ আফ্রিকাব্যাপী আলোচনার জন্ম দিয়েছেন এই বয়োবৃদ্ধ নারী।
কোভিড-১৯ নিয়ে চিকিৎসকরা বরাবরই সর্তক করে আসছেন বয়োবৃদ্ধদের চলাফেয়া ও যত্ন বিষয়ে। তারা এ-ও বলছেন, বয়স্ক ব্যক্তিদের করোনায় সংক্রমণ হলে মারা যাবার সম্ভবনা সবচেয়ে বেশি।
দক্ষিণ আফ্রিকার ওয়েস্টার্ন কেপ হেলথ ডিপার্টমেন্ট জানায়, ক্যাথেরিন ডরোথি প্রদেশের সিনিয়র সিটিজেনদের মধ্যে ১৯তম। শহরের মানুষজন তাকে ভালোবেসে ডরোথি, আন্টি ডরোথি বা মা নিউম্যান নামে ডাকে।
ছেলে উইলিয়াম নিউম্যান বলেছেন, তার মা দক্ষিণ আফ্রিকার ক্লেরেমন্টের এক গ্রামে ১৯২৬ সালের ১০ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন।
তবে তিনি গত নয় বছর ধরে, হুইস নুওল্যান্ডের বাসিন্দা। এখানে সবসময় তার যত্ন নেওয়া হচ্ছিল। কোভিড-১৯ মহামারি পরিস্থিতিতেও প্রত্যেকে যথেষ্ট চেষ্টা করেছে তাকে নিরাপদে রাখার।
কিন্তু গত ২ জুন, কর্মীরা আন্টি ডরোথির কাশি সম্পর্কে পরিবারকে জানায়। ডাক্তারের পরামর্শে ক্যাথেরিন ডরোথির কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় তার করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে।
উইলিয়াম বলেন, আমাদের মায়ের বয়সের বিষয়টা পরিবারের পক্ষে সত্যই উদ্বেগজনক ছিল। তবে এই পরিস্থিতির জন্য হুইস নুওল্যান্ডের কোভিড-১৯ প্রস্তুতি সম্পর্কে জেনে আমরা কিছুটা হলেও সান্ত্বনা পেয়েছি।
এই সময়ে, ক্যাথেরিন ডরোথিকে কঠোর প্রোটোকলের আওতায় যত্ন নেওয়া হচ্ছিল। তবে পরে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে, তাকে গ্রুয়েট শিউর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সেখানে প্রয়োজনীয় যত্ন এবং চিকিৎসা পেয়েছিলেন তিনি। এরপর তার শারিরীক অবস্থার উন্নতি হলে তাকে আশা সিটিআইসিসি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে, নিয়মিত যত্ন ও চিকিৎসা পাওয়ার পর অবশেষে কোভিড-১৯ উপসর্গগুলো থেকে মুক্তি পান তিনি। সুস্থ হবার পর হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে আসা হয় তাকে।
তাদের মাকে ফিরে পেয়ে স্বস্তিতে আছেন আন্টি ডরোথির পরিবার। তার ছেলে নিউম্যান জানান, কোভিড-১৯ অবস্থার বিষয়ে আর কোনও উদ্বেগ নেই। এবং তিনি আর সংক্রামক নন। আন্টি ডরোথি ফিরে এসেছেন তার হুইস নুওয়েল্যান্ড শহরে। তাকে পেয়ে শহরের সবাই খুশি।
সূত্র: দ্য সাউথ আফ্রিকান