মানসিক অত্যাচারে ক্রিকেটকে বিদায় বললেন আমির
মানসিক অত্যাচার আর সহ্য হচ্ছিল না মোহাম্মদ আমিরের। উপায় না দেখে তাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিলেন পাকিস্তানের বাঁহাতি এই পেসার। সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের সফর দীর্ঘ করতে গত বছর টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেন আমির। কিন্তু প্রিয় এই দুই ফরম্যাটেও পাকিস্তানের জার্সি গায়ে তাকে আর দেখা যাবে না।
যদিও আমিরের অবসর নিয়ে বিতর্ক আছে। নিজ মুখে পাকিস্তানের এই পেসার অবসরের ঘোষণা দেননি। পাকিস্তান ক্রিকেটে বোর্ডের (পিসিবি) এই প্রশাসনের অধীনে আর খেলা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছিলেন তিনি। মানসিক অত্যাচারের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন আমির। এই কারণে অবসর নিচ্ছেন বলে জানিয়েছিলেন তিনি।
পিসিবি অবশ্য আমিরের অবসরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এক বিবৃতিতে পিসিবি জানিয়েছে, 'মোহাম্মদ আমির আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন, এমন এক খবর পাওয়ার পর বোর্ডের প্রধান নির্বাহী ওয়াসিম খান আজ বিকেলে এই পেসারের সঙ্গে কথা বলেছেন। ২৯ বছর বয়সী এই খেলোয়াড় পিসিবির প্রধান নির্বাহীকে বলেছেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার কোনো আগ্রহ বা ইচ্ছা নেই তার। ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক ম্যাচের জন্য যেন তাকে বিবেচনা করা না হয়।'
পাকিস্তান ক্রিকেট দলে ব্রাত্য হয়ে পড়েছেন আমির। নিউজিল্যান্ড সফরের দলে তার জায়গা হয়নি। আমির গিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কান প্রিমিয়ার লিগ (এলপিএল) খেলতে। এই টুর্নামেন্ট শেষে দেশে ফেরার আগেই সবাইকে অবাক করে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন আমির।
একটি ভিডিও বার্তার আমির বলেছেন, 'সত্যি বলতে এই প্রশাসনের অধীনে আমি ক্রিকেট খেলতে পারব বলে আমার মনে হয় না। ক্রিকেট থেকে আমি বিদায় নিচ্ছি। আমাকে মানসিকভাবে অত্যাচার করা হচ্ছে, আমি আর নিতে পারছি না। ২০১০-২০১৫ সময়ে আমি যথেষ্ট দেখেছি। বারবার বলা হয়েছে বোর্ড আমার ওপর অনেক বিনিয়োগ করেছে। শহীদ আফ্রিদির কাছে আমি কৃতজ্ঞ। নিষেধাজ্ঞার পর তিনিই আমাকে সুযোগ দিয়েছিলেন।'
অবসরের কারণও ব্যাখ্যা করেছিলেন বাঁহাতি এই পেসার। আমির বলেন, 'সবাই দেশের হয়ে খেলতে চায়। তারা বলেই যাচ্ছিল, আমি টেস্ট ক্রিকেট ছেড়েছি বিশ্বজুড়ে টি-টোয়েন্টি লিগে খেলার জন্য। আমি কিন্তু বিপিএল দিয়ে ফেরত এসেছিলাম। যদি লিগে খেলার জন্য এতটা মরিয়া থাকতাম, তখনই বলতাম পাকিস্তানের হয়ে খেলব না। প্রতি মাসেই কেউ না কেউ বলছে, আমির আমাদের বিপদে ফেলে গেছে। দুই দিনের মধ্যে আমি পাকিস্তানে ফিরব এবং আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেব।'
স্পট ফিক্সিংয়ের কারণে ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হওয়া আমির ২০১৬ সালে ক্রিকেটে ফেরেন। কিন্তু পরের এই পর্ব খুব একটা মনে রাখার মতো হলো না তার। বাঁহাতি এই পেসার পাকিস্তানের হয়ে ৩৬টি টেস্ট খেলেছেন, উইকেট নিয়েছেন ১১৯টি। ৬১টি ওয়ানডেতে আমিরের শিকার ৮১ উইকেট। ২০০৯ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখা আমির ৫০ টি-টোয়েন্টিতে নিয়েছেন ৫৯ উইকেট।