মেসির বিদায়ে ১৩৬৬ কোটি টাকা লোকসানের মুখে বার্সা
বিশ্লেষকরা বলছেন, আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি লিওনেল মেসির বিদায়ের পর বার্সেলোনার ব্র্যান্ডভ্যালু প্রায় ১৩.৭ কোটি ইউরোর (১৩৬৬ কোটি টাকা) দরপতন দেখতে যাচ্ছে।
পরামর্শক সংস্থা ব্র্যান্ড ফিনান্সের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, রিয়াল মাদ্রিদের পর বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দামী ক্লাবটির নাম বার্সেলোনা, যার মূল্যমান প্রায় ১২ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা। তবে মেসির বিদায়ের পর বার্সার এই মূল্যমান ১১ শতাংশ কমে যাবে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।
ছয়বারের ব্যালন ডি'অর জয়ীর বিদায়ের পর কাতালান ক্লাবটির ভবিষ্যতে স্পন্সরশিপ, জার্সিসহ অন্যান্য পণ্যের বিক্রি এবং মাঠের দর্শকদের কাছ থেকে আসা আয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে যাবে।
এছাড়া, মেসির বিদায়ের পর বিশ্বব্যাপী বার্সার ভক্তকুলের সংখ্যাও কমবে, যার ফলে বার্সার ব্র্যান্ডমূল্য আগের তুলনায় বেশ দুর্বল হয়ে পড়বে।
ব্র্যান্ড ফিনান্সের ক্রীড়া পরিসেবার প্রধান হুগো হেন্সলি বলেন, 'মেসি আসলে বার্সেলোনা ব্র্যান্ডের সমার্থক শব্দ। ১৫ বছর ধরে সে এই ক্লাবের মূল তারকা। নিঃসন্দেহে শুধু তার উপস্থিতিই বার্সাকে বাড়তি ভক্ত, ভালো ফুটবলার, ম্যানেজার, বাণিজ্যিক চুক্তি ও শিরোপা এনে দিয়েছে। এবং স্বাভাবিকভাবেই তার অনুপস্থিতিতে এগুলো হারিয়ে বসতে পারে ক্লাব। যার ফলে ক্লাবের মূল্যমানও কমে যেতে পারে ভয়ানকভাবে।'
ব্র্যান্ড ফিনান্সের তথ্য অনুযায়ী, ১৬ বছর বয়সে অভিষিক্ত হওয়া মেসি অর্থনৈতিকভাবে যেসব খাতে বার্সেলোনাকে সাহায্য করতেন ও তার বিদায়ে ক্লাবটি সেসব খাতে লোকসান দেখতে যাচ্ছে-
বাণিজ্যিক উপার্জন:
সামাজিক মাধ্যম ইন্সটাগ্রামে মেসির অনুসারী ২৪ কোটির চেয়েও বেশি, যেখানে বার্সার অনুসারী তার অর্ধেকেরও কম, বা ৯.৯ কোটি।
বৈশ্বিক গ্রহণযোগ্যতার জন্য কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বস্তুগুলোর মধ্যে একটি মেসি। তার উপস্থিতির জন্য তাই স্বাভাবিকভাবেই সব ধরনের স্পন্সরশিপ চুক্তিতে লাভবান হয়ে এসেছে বার্সা।
মেসির বিদায়ের পর বাণিজ্যিক উপার্জনে প্রায় ৭৬৮ কোটি টাকার লোকসান দেখতে যাচ্ছে ক্লাবটি।
মাঠের খেলা ও টিকিট থেকে আয়:
২০০৮-০৯ মৌসুম থেকে প্রতিটি মৌসুমেই ত্রিশোর্ধ গোল করে গেছেন মেসি। এই সময়ে দলের প্রতিটি শিরোপা জয়েই মূল ভূমিকা পালন করেছেন এই আর্জেন্টাইন।
তার অনুপস্থিতি যে দলের পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলবে, সেটাও বলার অপেক্ষা রাখে না । মাঠে তার অনুপস্থিতি বার্সাকে প্রায় ১৬৯ কোটি টাকার মতো লোকসান দেখাতে পারে।
জার্সি ও পণ্য বিক্রি:
শুধু মেসির জার্সি বিক্রি থেকেই বছরে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার মতো উঠত। সেখান থেকে সিংহভাগ লভ্যাংশ জার্সি প্রস্তুতকারী সংস্থা- নাইকি পেলেও, লভ্যাংশ থেকে বার্সা পেতো ১০-১৫ শতাংশ বা প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। মেসির ১০ নাম্বার জার্সির অনুপস্থিতিতে বার্সাকে প্রায় ৪২৮ কোটি টাকার লোকসান দেখতে হতে পারে।
- সূত্র: ডেইলি বিজনেস