স্টাম্পে সাকিবের লাথি, তুলে আছাড়ও মারলেন
বিতর্ক থেকে যেন দূরে থাকতেই পারেন না সাকিব আল হাসান। কয়েকদিন আগে অনুশীলনে জৈব সুরক্ষা বলয় ভেঙে শাস্তির মুখে পড়তে যাচ্ছিলন বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার। শেষ পর্যন্ত শাস্তি না হলেও কারণ দর্শানোসহ দুঃখ প্রকাশ করতে হয় তাকে। এবার সাকিব মাঠেই যে আচরণ করলেন তা, ক্রিকেটীয় কোনো সংস্কৃতির মধ্যেই পড়ে না। এমন কি এই দৃশ্য ক্রিকেটে দেখা গিয়েছে কিনা, তা নিয়েও আছে সন্দেহ।
শুক্রবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টির ম্যাচে খেলা চলাকালীন আম্পায়ারের সামনেই স্টাম্প তুলে আছাড় মারেন সাকিব। এরআগেই অবশ্য মেজাজ হারান মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের অধিনায়ক। একটি আবেদনে আম্পায়ার সাড়া না দেওয়ায় তেড়ে যান সাকিব। লাথি মেরে ভেঙে দেন তিনি। আম্পায়ারের সঙ্গে অশালীন ভাষা ও অশোভন আচরণ করতে থাকেন তিনি।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে শুক্রবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেডের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে নামে মোহামেডান। সাকিবের ওদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের প্রথম ঘটনাটি পঞ্চম ওভারের শেষ বলে। আবাহনী অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের বিপক্ষে এলবিডব্লিউর আবেদন করেন সাকিব।
তার আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দেননি। আবেদনও শেষ করেননি বাঁহাতি এই স্পিনার। সঙ্গে সঙ্গে আম্পায়ারের দিকে তেড়ে যান। মেজাজ হারানো সাকিব লাথি মেরে ভেঙে দেন স্টাম্প। এটা ছিল সাকিবের করা দ্বিতীয় ওভার। এই ওভারের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে তাকে চার ও ছক্কা মারেন মুশফিক। এতেই যেন মেজাজ হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি!
সাকিবের করা শেষ ডেলিভারিটি মুশফিকের পায়ে লাগলে আবেদন করেন সাকিব। আম্পায়ারকে সিদ্ধান্ত জানানোর সময়ও দেননি বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার। দুই সেকেন্ডের ব্যবধানে আম্পায়ারকে আক্রমণ করে বসেন সাকিব। লাথি মেরে স্টাম্প ভেঙে আম্পায়ার ইমরান পারভেজ রিপনের সঙ্গে তর্কে জড়ান তিনি। এসময় আম্পায়ারকে গালি-গালাজ করেন মোহামেডান অধিনায়ক। তার সতীর্থরা এগিয়ে এসে পরিস্থিতি সামলে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
যদিও এখানেই থামেনি সব। পরের ওভারে আরও ওদ্ধত্বপূর্ণ আচরণ করেন সাকিব। এই ওভারটি করতে আসেন মোহামেডানের অফ স্পিনার শুভাগত হোম। প্রথম দুই বলে দুটি চার হজম করতে হয় তাকে। ওভারের পঞ্চম বলের পর বৃষ্টি শুরু হয়, উইকেট ঢাকার নির্দেশ দেন আম্পায়ার। এ সময় এক্সট্রা কভার থেকে দৌড়ে এসে দুই হাতে দুই স্টাম্প তুলে আছাড় মারেন সাকিব।
এরপরও সাকিবকে থামানো যাচ্ছিল না। গালি-গালাজ করতে করতে মাঠ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। মাঠের বাইরে গিয়ে আরেকটি অঘটনের জন্ম দেন তিনি। আঙুল তুলে কিছু একটা বলে যাচ্ছিলেন তিনি, তেড়ে যাচ্ছিলেন আবাহনীর ড্রেসিং রুমের দিকে। এ সময় আবাহনীর কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনকেও সাকিবের দিকে তেড়ে যেতে দেখা যায়। দুই দলের ক্রিকেটার, কর্মকর্তারা মিলে দুজনকে দুই দিকে নিয়ে যান।