টানা পাঁচে সাকিবের বিশ্ব রেকর্ড
সাকিব আল হাসান; ক্রিকেটের বিস্ময়। রেকর্ড ভাঙা-গড়া তার বাঁহাতের খেল। ২০০৬ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রেখে রাজত্ব করে আসছেন বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডার। ৩৪ বছর বয়সেও তিনি দুর্বার-অপ্রতিরোধ্য। ক্রিকেটের অনেক রেকর্ড পায়ে লুটানো সাকিব এবার আরও একটি রেকর্ডে নিজের নাম তুললেন, যেখানে তিনি একা। হ্যাঁ, বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন সাকিব।
চলতি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) ফরচুন বরিশালের হয়ে খেলছেন সাকিব। দলের নেতৃত্বভার তার ওপরই। একজন নেতার দায়িত্ব ভালো করেই জানা তার, ঠিক সেভাবেই তা পালন করে আসছেন সাকিব। দক্ষ হাতে দল সামলানো, সঙ্গে ব্যাটে-বলে বলে আলো ছড়ানো। এ পথে ধারাবাহিকভাবে তিনি যা করেছেন, ক্রিকেট দুনিয়ার আর কোনো ক্রিকেটার তা করতে পারেননি। একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে টানা পাঁচ টি-টোয়েন্টিতে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন সাকিব।
বরিশালের সাত জয়ের পাঁচটিতেই ম্যাচসেরা হয়েছেন সাকিব। বিপিএলের ইতিহাসে যা প্রথম। দেশের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি এই আসরে আর কোনো ক্রিকেটারের টানা তিন ম্যাচেও সেরা খেলোয়াড় হওয়ার নজির নেই। শুক্রবার মিনিস্টার ঢাকার বিপক্ষে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতে পুরো দুনিয়াকেই পেছনে ফেললেন তিনি।
বাংলাদেশ অলরাউন্ডার ছাড়িয়ে গেলেন মার্কাস ট্রেসকথিক, চার্ল ল্যাঙ্গাভেল্ট, শেন ওয়াটসন, ডেভিড ওয়ার্নার ও দিনেশ নকরানিকে। এই পাঁচ ক্রিকেটারেরই টানা চার ম্যাচে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতার কীর্তি ছিল। ব্যাটে-বলে দারুণ ছন্দে সময় পার করা সাকিব সেটাকে নিয়ে গেলেন পাঁচে, আবারও নিজেকে সেরা ও অনবদ্য প্রমাণ করলেন অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার।
বিপিএলে ফরচুন বরিশালের জয় মানেই সেখানে কাণ্ডারি সাকিব। চট্টগ্রাম পর্বে দলকে জয়ে ফেরানোর পর থেকে এই ধারাই জারি রেখেছেন বরিশালের অধিনায়ক। সাকিবের টানা ম্যাচসেরার জেতার রেকর্ড গড়ার শুরু ৩১ জানুয়ারি, চট্টগ্রামে। খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে সেই ম্যাচে ব্যাট হাতে ২৭ বলে ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪১ রান করেন বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার। পরে বল হাতে ৪ ওভারে মাত্র ১০ রান খরচায় নেন ২ উইকেট।
পরের ম্যাচে আরও ক্ষুরধার পারফরম্যান্স করেন সাকিব। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে আগে ব্যাটিং করে ৩১ বলে ৩টি করে চার ও ছক্কায় ৫০ রান করেন তিনি। বল হাতে ৪ ওভারে ২৩ রানে নেন ৩টি উইকেট। টানা তৃতীয় ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতার ম্যাচে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে ৫০ রানের ইনিংস খেলার পর বল হাতে ২টি উইকেট নেন বরিশালের অধিনায়ক।
এরপর মিরপুরে একটি ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়। পরের ম্যাচে সিলেট সানরাইজার্সের বিপক্ষে ৩৮ রান ও ২৩ রানে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন সাকিব। রাউন্ড রবিন লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে এসে আবারও সাকিব শো। এবার ২৯ বলে ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় অপরাজিত ৫১ রানের ইনিংস। এরপর বল হাতে শিকার একটি উইকেট, তাতে আবারও ম্যাচসেরা তিনি।
ব্যাটে-বলে দারুণ ছন্দে থাকা সাকিব ফরচুন বরিশালের হয়ে ৯ ম্যাচে ৩টি হাফ সেঞ্চুরিসহ ৩৪.৫০ গড় ও ১৪৬.৮০ স্ট্রাইক রেটে ২৭৬ রান করেছেন। যা এখন পর্যন্ত আসরের চতুর্থ সর্বোচ্চ। বল হাতেও চলছে তার স্পিন ভেল্কি। ৪.৯৫ ইকোনমিতে ৯ ম্যাচে সাকিবের শিকার ১৫ উইকেট, যা এখন পর্যন্ত আসরের তৃতীয় সর্বোচ্চ।