ফ্লেচার-মেহেদি তাণ্ডবে প্লে-অফে মুশফিকরা, মাহমুদউল্লাহদের বিদায়
প্লে-অফ নিশ্চিত হয় আগেই। প্রথম কোয়ালিফায়ারে খেলার টিকেটও কদিন আগে মিলেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের। রাউন্ড রবিন লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে তাই অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কুমিল্লা। অধিনায়ক ইমরুল কায়েস, লিটন দাস, মুস্তাফিজুর রহমানদের দেওয়া হয় বিশ্রাম। তবু রান পাহাড়ে চড়লো তারা। সেঞ্চুরি করে দলের রান 'বিশাল' করলেন নেতৃত্ব পাওয়া ফাফ ডু প্লেসি। তবু তা যথেষ্ট হলো না। ভুবন ভোলানো ব্যাটিংয়ে খলুনা টাইগার্সকে বিশাল জয় এনে দিলেন ম্যাচসেরা আন্দ্রে ফ্লেচার ও শেখ মেহেদি হাসান।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) শনিবার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে মুশফিকুর রহিমের দল খুলনা টাইগার্স। এই জয়ে চতুর্থ দল হিসেবে প্লে-অফ নিশ্চিত হলো খুলনার। প্লে-অফে যেতে এই ম্যাচটি জিততেই হতো তাদের। বাঁচা-মরার লড়াইয়ে প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দিল তারা।
১০ ম্যাচে ৫ জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার চার নম্বর দল খুলনা। এলিমিনেটর ম্যাচে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি দুপুর সাড়ে ১২টায় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের মুখোমুখি হবে খুলনা। ৯ পয়েন্ট নিয়ে অপেক্ষায় থাকা মিনিস্টার ঢাকার বিদায় হয়ে গেল। এই ম্যাচে খুলনা হারলে চতুর্থ দল হিসেবে প্লে-অফ খেলতো মাহমুদউল্লাহ, তামিম, মাশরাফিদের দল।
শনিবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নামে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। মাহমুদুল হাসান জয়ের মাঝারি ইনিংস ও অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসির দারুণ সেঞ্চুরিতে ৫ উইকেটে ১৮২ রান তোলে বিপিএলের দুইবারের চ্যাম্পিয়নরা। জবাবে ব্যাটকে তরবারিতে পরিণত করা ফ্লেচারের সেঞ্চুরি ও শেখ মেহেদির ঝলমলে ব্যাটিংয়ে ৮ বল হাতে রেখে ১ উইকেট হারিয়েই জয় তুলে নেয় খুলনা টাইগার্স।
বিশাল লক্ষ্যে বাটিং করতে নেমে শুরু থেকেই দাপুটে ব্যাটিং করতে থাকেন খুলনার দুই ওপেনার আন্দ্রে ফ্লেচার ও শেখ মেহেদি হাসান। মেহেদি ধীর-স্থির থাকলেও তাণ্ডব চালান ফ্লেচার। ২৪ বলে ৪ চার ও ৪ ছক্কায় হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করে নেন ক্যারিবীয় এই ওপেনার। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে বিনা উইকেটেই ৬৯ রান পায় খুলনা।
উড়ন্ত সূচনার পর একই ধারায় চার-ছক্কার পসরা সাজাতে থাকেন প্লেচার। সময় বাড়ার সাথে সাথে শেখ মেহেদিও মারকুটে ব্যাটিং শুরু করেন। তাদের ধুন্ধুমার ব্যাটিংয়ে ৯.১ ওভারেই দলীয় ১০০ রান পূর্ণ হয় কুমিল্লা। এরপরও থামেনি তাদের ব্যাটিং ঝড়। দাপুটে ব্যাটিংয়ে জয়ের পথে এগিয়ে যেতে থাকেন তারা। জয়ের জয়ের এক রান বাকি থাকতে থামেন মেহেদি হাসান।
এরআগে ফ্লেচারের সঙ্গে ১৮২ রানের জুটি গড়েন তিনি। যা বিপিএলে উদ্বোধনী জুটিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ও যেকোনো উইকেটে চতুর্থ সর্বোচ্চ। ৪৯ বলে ৬ চার ও ৪ ছক্কায় ৭৪ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন মেহেদি। দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন বিপিএল ও টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করা ফ্লেচার। ডানহাতি এই ক্যারিবীয় ওপেনার ৬২ বলে ৬টি করে চার ও ছক্কায় ১০১ রানে অপরাজিত থাকেন। ২০১৯ বিপিএলে প্রথম সেঞ্চুরি করেন তিনি। সেবার খুলনার বিপক্ষে ঝড় তোলা ফ্লেচার এবার খুলনার হয়েই ছুঁলেন ১০০।
এর আগে ব্যাটিং করতে নামা কমিল্লার শুরুটা ভালো ছিল না। ৩১ রানের মধ্যেই ফিরে যান প্রথমবারের মতো সুযোগ পাওয়া ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন ও মুনিমুল হক। দুজনই ৭ রান করে করেন। এরপর জয়ের সঙ্গে যোগ দিয়ে ৪৯ রানের জুটি গড়েন ডু প্লেসি। ২৭ বলে ৩টি চারে ৩১ রান করা জয়ের বিদায়ে ভাঙে এই জুটি।
এরপর ডু প্লেসির ব্যাটিং শো চলে মিরপুরে। ১৯তম ওভারে আউট হওয়ার আগে খুলনার বোলারদের ওপর দিয়ে ঝড় বইয়ে দেন প্রোটিয়া এই ব্যাটসম্যান। চোখ ধাঁধানো ব্যাটিংয়ে ৫৪ বলে ১২ চার ও ৩ ছক্কায় ১০১ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন ডু প্লেসি। আগের ম্যাচে ঝড় তোলা মঈন আলী এদিন ৮ রান করে বিদায় নেন। মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ১১ বলে ২ চারে অপরাজিত ২০ রান করেন। খুলনার নাভিন-উল-হক, শেখ মেহেদি হাসান ও ফরহাদ রেজা একটি করে উইকেট নেন।