শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় স্পিন জাদুকরকে শেষ বিদায়
গত ৪ মার্চ থেমে যায় বর্ণিল এক চরিত্রের পথচলা। না ফেরার দেশে পাড়ি জমান শেন ওয়ার্ন। ৫২ বছর বয়সেই অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি এই লেগ স্পিনারের মৃত্যু বিশ্বাস হয়নি কারও। মৃত্যুর ২৬ দিন পরও যেন সেই একই অনুভূতি! এর মাঝেই ওয়ার্নকে বুধবার চির বিদায় জানালো তার পরিবার, সতীর্থ, বন্ধু, শুভাকাঙ্খীরা।
মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে আবেগঘন এক অনুষ্ঠানে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় চির বিদায় জানানো হয় অনন্ত অসীমে পা বাড়ানো অজি স্পিন জাদুকরকে। কোটি মানুষের ভালবাসা, শ্রদ্ধাকে পাথেয় করে ওয়ার্নের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায়। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডের অনুষ্ঠানে ওয়ার্নের পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও কথা বলেন ক্রিকেটের কিংবদন্তিরা। উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী জন হাওয়ার্ড।
ওয়ার্নের জাতীয় দলের সতীর্থ, প্রতিপক্ষ থেকে শুরু করে রথী-মহারথীরা হাজির হয়েছিলেন মেলবোর্নে। বিখ্যাত মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডজুড়ে ছিল শোকের ছায়া। মাঠে ওয়ার্নের নামে একটি স্ট্যান্ডের উদ্বোধন করা হয়। ওয়ার্নের সন্তানরা 'শেন ওয়ার্ন স্ট্যান্ড' উদ্বোধন করেন। এই স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন ব্রায়ান লারা, নাসের হুসেন, অ্যালান বর্ডারদের মতো কিংবদন্তিরা। ভিডিও বার্তা পাঠান শচিন টেন্ডুলকার, ওয়াসিম আকরামরা।
অনুষ্ঠানের পুরোটাই টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। অনুষ্ঠানে ওয়ার্নের বাবা কিথ ওয়ার্ন বলেন 'শেন গর্ব করে বলত "আমি ধূমপান করেছি, সুরা পান করেছি আর অল্পবিস্তর ক্রিকেট খেলেছি।" তোমার মা এবং আমি তোমাকে ছাড়া জীবনের কথা ভাবতেই পারছি না। আমাদের জন্য তুমি যা যা করেছো, সব কিছুর জন্য ধন্যবাদ।' ওয়ার্নের তিন সন্তান ব্রুক, জ্যাকসন এবং সামার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
গত ৪ মার্চ থাইল্যান্ডের কোহ সামুইতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ওয়ার্ন। ১৯৬৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর মেলবোর্নে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৯২ সালে টেস্ট দিয়ে জাতীয় দলে অভিষেক হয় এই স্পিন জাদুকরের। অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে ১৫ বছরের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে ১৪৫ টেস্টে ৭০৮টি উইকেট নিয়েছেন ওয়ার্ন, যা টেস্ট ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ১৯৪ ওয়ানডেতে তার নামের পাশে আছে ২৯৩ উইকেট।