বিশ্বের সর্ববৃহৎ ডিজিটাল ক্যামেরাটি ৩২০০ মেগাপিক্সেলের, দেখা যাবে মহাকাশের ত্রিমাত্রিক ছবি
বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্যামেরাটি তৈরির শেষ মুহূর্তের কাজ করছেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা। এ ক্যামেরার বিস্তারিত জানিয়েছে প্রযুক্তিবিষয়ক গণমাধ্যম সিনেট।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত এসএলএসি ন্যাশনাল অ্যাক্সিলারেটর ল্যাবরেটরি'র প্রকৌশলীরা গত সাত বছর ধরে এ ক্যামেরটি তৈরি করছেন। তারা এর নাম দিয়েছেন লিগ্যাসি সার্ভে অভ স্পেইস অ্যান্ড টাইম বা এলএসএসটি ক্যামেরা।
ক্যামেরাটির আকার ছোটখাটো একটি সেডান গাড়ির সমান। ভরের দিক থেকে এটি তিন টনের মতো। আর এটি বসানোর জন্য প্রয়োজন প্রায় পাঁচ ফুটের মতো জায়গা।
এ ক্যামেরার বিশালাকৃতির লেন্সটি ইতোমধ্যে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে জায়গা করে নিয়েছে।
৩,২০০ মেগাপিক্সেলের এ ক্যামেরাটি এতই শক্তিশালী যে এটি ১৫ মাইল দূর থেকেও একটি গলফ বলের ছবি তুলতে পারে। মহাকাশ গবেষণার জন্য তৈরি করা হয়েছে এলএসএসটি।
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ চিলিতে নির্মীয়মাণ ভেরা সি. রুবিন মহাকাশ পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের একটি টেলিস্কোপের ভেতরে স্থাপন করা হবে এ ক্যামেরা। আগামী এক দশক ধরে দক্ষিণ আকাশের (সাউদার্ন স্কাই) ছবি তুলবে এটি।
বিজ্ঞানীদের প্রত্যাশা, নতুন এ মহাশক্তিশালী ক্যামেরাটির সহায়তায় তারা মহাকাশের আরও ১,৭০০ কোটি নক্ষত্র আবিষ্কার করতে পারবেন। এর বাইরে আমাদের সৌরজগৎ থেকেই আরও ৬০ লাখ নতুন বস্তু ধরা পড়বে এ ক্যামেরার লেন্সে।
মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা ইতোমধ্যে তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী টেলিস্কোপ জেমস ওয়েবকে ব্যবহার করতে শুরু করেছে। তাহলে আরেকটি শক্তিশালী ক্যামেরা কেন দরকার হবে মহাকাশ পর্যবেক্ষণের জন্য? জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ মহাকাশের গভীরে পর্যবেক্ষণ চালাচ্ছে। কিন্তু এলএসএসটি আকাশের বিস্তৃত দৃশ্যপট অবলোকন করবে।
কাজ শুরু হলে এ ক্যামেরা প্রতি ১৫ সেকেন্ড অন্তর চাঁদের চেয়ে সাতগুণ বিস্তুৃত আকাশের বিভিন্ন অংশের ছবি তুলবে। এভাবে প্রতিরাতে আকাশের সম্পূর্ণ একটি প্যানোরামা ছবি তৈরি করবে এটি।
১০ বছর ধরে এভাবে ছবি তোলার পর এলএসএসটি ক্যামেরা পুরো দক্ষিণ আকাশের একটি ত্রিমাত্রিক মুভি তৈরি করবে। যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক রিসা ওয়েশলার ক্যামেরাটির কাজ সম্পর্কে বলেন, 'এটি আমাদেরকে মহাকাশের এমন সব বস্তু দেখতে দেবে যা আগে দেখার কোনো উপায় ছিল না।'
'এটি আমাদেরকে একটি বড় প্রশ্ন করতে সক্ষম করে তুলছে। এ মহাবিশ্ব কী দিয়ে তৈরি? ডার্ক ম্যাটার ও ডার্ক এনার্জির প্রকৃতি কী?'
আগামী কয়েক মাস ক্যামেরটি নিয়ে চূড়ান্ত পরীক্ষানিরীক্ষা চালাবেন এসএলএসি'র বিজ্ঞানীরা। ২০২৩ সালের মে মাসে এটি চিলিতে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।