দ্য গ্রেট কাবাব ফ্যাক্টরি: লখনৌয়ের নবাবি কাবাবের স্বাদ মিলবে যেখানে!
রান্নার জন্য ভারতীয় উপমহাদেশের সুনাম বহু আগে থেকেই। গোটা বিশ্বে যে অঞ্চলগুলো তাদের রন্ধণশৈলীর জন্য অনন্য- ভারতীয় উপমহাদেশ নিঃসন্দেহে তাদের উপরের সারিতেই। মশলার সঠিক সংমিশ্রণ যে এ উপমহাদেশের রান্নাকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে- সে তো বলাই বাহুল্য। এজন্য কৃতিত্ব মুঘল শাসক ও আউধের নবাবদের দিতেই হয়। পারসিক ও আরব বংশধররা শুধু এ উপমহাদেশে শাসনই করেননি, বরং ধর্ম থেকে শুরু করে স্থাপত্যকলা ও রন্ধনশৈলীর মাধ্যমে এ এলাকার মানুষের অস্থিমজ্জায় একেবারে মিশে গেছেন।
তৎকালীন বাংলায়ও (ভারতের বাংলাভাষাভাষি জনপদ ও বাংলাদেশ) তারা একইভাবে জায়গা করে নিয়েছে আপন মহিমায়। এরই রেশ ধরে মাছে-ভাতে বাঙালির পাতে উঠতে শুরু করলো টিক্কা-কাবাব। ভেতোবাঙালি সমাজের কাছে তুমুল জনপ্রিয়তা পেল পোলাও-বিরিয়ানি। নবাবি সেসব রান্নার ভেতর কিছুটা বাঙালিয়ানা ঢুকে পড়ায় প্রকৃত স্বাদে যে বেশ খানিকটা হেরফের যে হয়নি তা নয়, পুরাতন দিল্লি কিংবা লখনৌর অলিগলিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা খাবারগুলোর স্বাদ নিলেই মিলবে তার প্রমাণ।
জানা যায়, আউধের (বর্তমান লখনৌ) নবাবরা নাকি এতোটাই 'নবাব' ছিলেন যে কাবাব চিবিয়ে খেতেও তাদের ছিল রীতিমতো আপত্তি! তাই তাদের কাবাব হতে হতো মাখনের মতো নরম, আর খাবারের ভেতর থেকে গোটা গরম মশলা বের হলে তো সাড়ে সর্বনাশ। তবে নবাবি শাসনের অবসান হলেও রান্নায় নবাবিয়ানা কিন্তু বহাল তবিয়তে রয়েছে পুরো লখনৌজুড়েই। এখনও সেখানখার পথে-ঘাটে মিলবে নবাবদের রেখে যাওয়া সেই ঐতিহ্যের স্বাদ।
নবাবি আমলের সেই কাবাব বা টিক্কার স্বাদ যারা পরখ করতে চান, তাহলে বাংলাদেশে বসে কীভাবে সম্ভব? উপায় আছে। না, ইন্টারনেট ঘেঁটে বিস্তর চেষ্টা তদবির করে রেসিপি ফলো করে, নিজেই রান্নার চেষ্টা করতে হবে না। ঢাকাতেই আছে এর সন্ধান। ভারতের ইন্টারন্যাশনাল কাবাব চেইন 'দ্য গ্রেট কাবাব ফ্যাক্টরি'র গুলশান, ধানমন্ডি আউটলেটে যদি হাজির হতে পারেন। তাহলেই আপনার জিভের নাগালে চলে আসবে নবাবি খাবার, যার কথা উপরে বললাম।
সঠিক তাপমাত্রা এবং সঠিকভাবে খাওয়ার ওপর নাকি পুরোপুরি নির্ভর করে কাবাবের স্বাদ। সেজন্যই চেইন যে রেস্টুরেন্টের কথা বললাম তার মূল আকর্ষণ 'টেবিল বুফে'। অর্থাৎ আপনি বসবেন আর সামনে হাজির হবে এক এক করে ৬ পদের নরমে, গরমে অতুলনীয় সব কাবাব।
কাবাব পর্ব শেষ মানেই খাওয়া শেষ, তা কিন্তু নয়, বরং বলা যেতে পারে সবে তো শুরু। এবারের তালিকা আরও দীর্ঘ। নেহারি, মাটন কাচ্চি, পোলাও; আর মাঝে যদি চান তো আবারও হাজির একটু টক-মিষ্টি-ঝাল স্বাদের আলু খাস্তাচাট কিংবা দই পাপড়িচাট। শেষ পাতে আসবে সাবুদানা পায়েস, গাজরের হালুয়া, গোলাপজাম, তারপর সমাপ্তি ঘটবে কুলফি দিয়ে একটুখানি মিষ্টিমুখ করে!
এর আগে কোন খাবার কোন সস দিয়ে খেতে হবে তাও জানিয়ে দেওয়া হবে। আবার কোনো খাবার বা কাবাব আবারও খেতে ইচ্ছা করলে তাও শুধু জানালেই হবে, পাতে পুনরায় হাজির হয়ে যাবে সেই কাবাব!
এমনভাবেই 'দ্য গ্রেট কাবাব ফ্যাক্টরির' নবাবি কাবাব ও টেবিল বুফে সম্পর্কে জানাচ্ছিলেন ধানমন্ডি শাখার ম্যানেজার রবিরাজ সিং রাথোর।
রবিরাজের মুখ থেকেই শুনলাম, ২০১৭ সালে ভারতীয় এ চেইন রেস্তোরাঁটি বাংলাদেশে পরিচালনার জন্য অনুমোদন পায় ব্যবসায়ী গ্রুপ এস.আর। একইবছর যমুনা ফিউচার পার্কে প্রথমবারের মতো চালু হয় `দ্য গ্রেট কাবাব ফ্যাক্টরি'। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে খোলা হয় গুলশান ও ধানমন্ডিতে কাবাব ফ্যাক্টরির আরও দুটি শাখা।
টেবিল বুফে প্রসঙ্গে রবিরাজ বলেন, তৈরি ও পরিবেশনের মধ্যেকার সময়ে খাবারের স্বাদে যাতে কোনো হেরফের বা তারতম্য না ঘটে- সেজন্য টেবিল বুফের এ পদ্ধতিটি অনুসরণ করা হয়। তার কথার সঙ্গে একমত পোষণ করলেন ফ্যাক্টরির প্রধান শেফ মোহাম্মদ হালিম। প্রায় মাস ছয়েক আগে বাংলাদেশে আসেন উত্তর প্রদেশের রাজধানী লখনৌয়ের এ বাসিন্দা। মোহাম্মদ হালিমসহ রেস্তোরাঁটিতে মোট ৮ জন বাবুর্চি রয়েছেন, তাদের সহকারী হিসেবে আছেন আরও ৩/৪ জন। তবে বাকি বাবুর্চিরা সবাই বাংলাদেশি।
এছাড়া খাবারের স্বাদ ঠিক আছে কিনা, তা পরীক্ষার জন্য রয়েছেন দুইজন। মূল শেফ বা হেড বাবুর্চিরাই বাকি বাবুর্চিদের রান্নাবিষয়ক প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন।
কথায় কথায় জানা গেল, লখনৌয়ের নবাবের জন্য রান্না করেছেন মোহাম্মদ হালিমের পূর্বপুরুষরা! তার দাবি, লখনৌয়ের কাবাব ও অন্যান্য খাবারের স্বাদ ভারতের অন্য যেকোনো এলাকার তুলনায় কিছুটা আলাদা। এর পেছনে তৎকালীন নবাবদের ভোজনবিলাস, সঙ্গে নবাবি মেজাজ যে অন্যতম কারণ, তাতো বলাই বাহুল্য।
নবাবদের নবাবিয়ানা কিংবা নবাবি মেজাজ দেখার সৌভাগ্য না হলেও নবাবি খাবারের সন্ধানেই যাওয়া 'দ্য গ্রেট কাবাব ফ্যাক্টরি'তে।
প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে শুরু করে রাত ১০ পর্যন্ত খোলা থাকে রেস্তোরাঁটি, রয়েছে টেবিল বুফের সুব্যবস্থা। তবে শুক্র-শনিবার এ সুযোগ থাকে দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৪টা এবং সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। বুফে প্রতি ১,৩৯৬ টাকা খরচ পড়বে, এছাড়া রয়েছে সেট মেনুর সুবিধাও।
টেবিল বুফে কিংবা যে মেনু নেওয়া হোক শুরুতেই সিগনেচার আইটেম 'মাটন গালোটি কাবাব'। ময়দা আর দুধ সঙ্গে কিছুটা সুজির মিশ্রণে তৈরি ছোট ছোট সাইজের পরোটার সঙ্গে মাটন গালোটি কাবাব, সঙ্গে এক স্লাইস পেঁয়াজ আর পুদিনার সস। আহ! মুখে দিতেই যেন গলে গলে ছড়িয়ে পড়লো, সঙ্গে সব মশলার একটা হালকা সুবাস।
গালোটি অর্থ গলে গলে পড়া। আর নামই যার গালোটি, মুখের ভেতর যে সে গলে গলে ছড়িয়ে পড়বেই, তা বলাই বাহুল্য।
এর নরম, মুখের ভেতর গলে যাওয়া স্বাদ নিয়ে কথায় কথায় ম্যানেজার রবিরাজের কাছ থেকে বেরিয়ে এলো চমকপ্রদ এক তথ্য। তারমতে, আউধের নবাব আসাফ উদ দৌলা ছিলেন বিরাটদেহী। এতোটাই মোটা ছিলেন তিনি ঘোড়ায় চড়তে পারতেন না। খুব সম্ভবত অতিরিক্ত মেদবহুল হওয়ায় তার দাঁত পড়ে গেছিল অনেক আগেই। কিন্তু তাতে তো আর তার কাবাব খাওয়ার শখ চলে যেতে পারে না। এ কারণেই হুকুম দিলেন এমন এক কাবাবের, যা তিনি খেতে পারবেন সহজেই অর্থাৎ চিবানোর ঝামেলা থাকবে না মোটেও। নবাবী মেজাজ বলে কথা, যা হুকুম তাই সই, নবাব যাতে খেতে পারে তেমন উপযুক্ত করতে গিয়েই প্রথববারের মতো তৈরি করা হয় মাটন গালোটি কাবাব। এ কাবাব তৈরি করতে নাকি একই মাংস তিনবার কিমা করেছিলেন নবাবের বাবুর্চি!
এরপর জিভের চনমনে স্বাদটা আরেকটু বাড়িয়ে তুলতে এলো দই পাপড়ি চাট। একে তো টক-ঝাল-মিষ্টি মুচমুচে পাপড়িচাট, তার ওপর আবার দই, সবমিলে বেশ একটা আরামদায়ক অনুভূতি।
পাপড়িচাট মুখে না পুরতেই হাজির চিকেন তন্দুরী। মুখে দিতেই লেবুর টাটকা একটা ঘ্রাণ। কারি পাতা দেওয়া চিকেনের টুকরোগুলো দেখতে যতটা আকর্ষণীয়, তেমনি এর মোলায়েম অনবদ্য স্বাদ মনকে বেশ চনমনে করে তুলবে মুহূর্তেই।
জানা যায়, ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান ভাগের সময় পাঞ্জাবের পাকিস্তান অংশ থেকে দিল্লিতে গিয়ে তন্দুরি চিকেনের প্রচলন ঘটান কুন্দন লাল গুজরাল নামে এক ব্যক্তি। এরপর খুব দ্রুতই উপমহাদেশে দারুণ জনপ্রিয়তা পায়, সুদূর মধ্যপ্রাচ্য এমনকি ইউরোপেও ছড়িয়ে পড়েছে এর মুগ্ধতা এরকম বলা হয়।
শুধুই মাংসেরই কাবাব নয়। মাছে-ভাতে বাঙালি বলে কথা, পাতে একটু মাছ তো দরকার! তন্দুরি চিকেনের স্বাদ মুখে থাকা অবস্থাতেই এলো 'অমৃতসারি মাছই'। ভাজা মাছ ভেবে খেতে অতিউৎসাহী হয়ে খেতে গিয়ে মিলল বেশ ভিন্ন এক স্বাদ। কাবাব আর মাছ ভাজার এক অনন্য সংমিশ্রণ। ভারতের পাঞ্জাবের অমৃতসরে মাছভাজায় যে মশলা ব্যবহৃত হয়, সেই মশলায় মাছ ভাজা বা কাবাবটি তৈরি হয় বলেই এ নামকরণ, এমনটিই জানালেন ম্যানেজার।
খেতে খেতে হাঁপিয়ে পড়ার কিন্তু সুযোগ নেই। স্বাদের কিছুটা পরিবর্তন আনতে এবারের সংযোজন খাস্তা আলুচাট। টক-মিষ্টি স্বাদের আলু খাস্তা, একে ঠিক দমও বলা যায় না, আবার ছোট ছোট আলুর একটু মচমচেভাব, আলুপ্রেমী তো বটেই রসকসহীন যে কারো মন জয় করে নেবে নিমিষেই।
মুরগির টিক্কা, তার আবার ওপরে একটু মালাইয়ের সংযোজনের নাম মুর্গ মালাই টিক্কা। রেশমি কাবাব হিসেবে বাংলাদেশে পরিচিত এ কাবাবটির তাৎক্ষণিক পরিবেশনা, মুখে দিতেই মিলিয়ে যাওয়ায় মুগ্ধ না হয়ে উপায় কোথায়।
মুগ্ধতার রেশ না কাটতেই এবারে হাজির শিককাবাব। শিক কাবাবের ধরনটাও বাংলাদেশের তুলনায় অনেকটা ভিন্ন। শিক কাবাব বলতে বাংলাদেশে লম্বা লম্বা শিকের ভেতর চাক চাক করা মাংসের টুকরোকে বুঝলেও লখনৌর নবাবি কাবাব কিন্তু তেমন নয়। দেখতেও যেমন আলাদা, স্বাদও তেমনি, এতোটাই নরম যে মুখে দিতেই মিলিয়ে যেতে বাধ্য।
গালোটি কাবাব যেমন নরম, এই কাবাবও তেমনি, তবে লেবু, পুদিনা আর এলাচের দুর্দান্ত সংমিশ্রণ, সঙ্গে মাংসের কিমার ভরভরাট একটা ভাব ভোজনরসিকদের জন্য নিঃসন্দেহে বেশ জিভে আবার জল এনে দেবে।
এরপর শামি কাবাবের পালা। কাবাব খেতে ভালোবাসেন না, এমন মানুষ সংখ্যায় কমই আছে। মেহমান আপ্যায়ন বা বিয়ে বাড়িতে সবচেয়ে অহরহ দেখা যায় এ কাবাব।
দেখতে সাধারণ শামি কাবাবের তুলনায় কিছুটা চ্যাপ্টা, এছাড়া চোখের দেখায় বোঝার উপায় না থাকলেও গলধকরণ করতে গিয়ে স্পষ্টই বোঝা যাবে কী পার্থক্য! বিশেষ করে এর নরম আর টাটকা স্বাদ, নিমিষেই মুখের ভেতর গলে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে কাবাব ভক্ষণের ক্ষেত্রে সঠিক সময় কতটা গুরুত্বপূর্ণ তাও জানালেন ম্যানেজার।
আবারও স্বাদ বদল। এলো নেহারি!
নেহারি শব্দের উৎপত্তি আরবি শব্দ `নাহার' থেকে, যার অর্থ সকাল। রবিরাজ জানালেন, খাবারটি নাকি সাধারণ মানুষ ও সৈন্যদের ভেতর খুব জনপ্রিয় ছিল। মুঘল আমলে তৈরি বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণে কাজ করানোর জন্য শ্রমিকদের পারিশ্রমিকের বদলে গরু বা খাসির পায়া দিয়ে তৈরি নেহারি খাওয়ানো হতো। শক্তিবর্ধন ও দিল্লির শীত থেকে তাদের রক্ষা করতেই এ খাবার দেওয়া হতো।
মূলত রাজা-বাদশাদের সামনে মাংসের ভালো ভালো টুকরোগুলো তুলে দেওয়ার পর বাড়তি যে মাংস থাকত, পায়া ও অন্যান্য অংশের, সেটাই সারারাত জ্বাল দিয়ে শ্রমিকদের খাওয়ানো হতো। তবে একবার পরখ করার পরই এর স্বাদ এতোটাই ভালো লেগে যায় যে, ফজরের নামাজ শেষে সকালের নাশতায় এটিই খেতেন মুঘল শাসকরা।
১৭ থেকে ১৮শ' শতাব্দীতে প্রথম নেহারির উৎপত্তি হয়। ইতিহাসবিদদের দাবি, পুরাতন দিল্লিতে প্রথম এ খাবারটির উৎপত্তি ঘটে। যদিও অনেকের মতে, আউধের খানসামাদের হাত ধরে খাবারটির প্রচলন হয়, যদিও পুরাতন দিল্লিতে চিরচেনা নেহারির রূপ পায়।
আউধের সেই নিহারি ছিল কিছুটা হালকা, হলুদাভ। সেই তুলনায় দিল্লিতে এসে নেহারির রং কিছুটা পাল্টে কিছুটা লালচে ধরনের হয়ে ওঠে। আউধের সেই নিহারির স্বাদ কেমন ছিল, তা জানা নেই, তবে গ্রেট কাবাব ফ্যাক্টরির নিহারির রং এমন, যা অনায়াসেই ভোজনরসিকদের মনে বেশ একটা দারুণ অনুভূতির জন্ম দেবে। একই সঙ্গে ৬-৭ ঘণ্টা ঘরে জ্বাল হওয়া মাংস আর এলাচ, দারুচিনি, লবঙ্গের সঙ্গে অন্যান্য মশলার অনবদ্য মিশ্রণ খাদ্যপ্রেমীদের জন্য যথাপোযুক্ত। মুহূর্তেই শেষ পুরো বাটি। রবিরাজের দাবি, আউধের (বর্তমান লখনৌ) সেই নেহারির স্বাদই পাওয়া যাবে গ্রেট কাবাব ফ্যাক্টরির নেহারিতে।
এরপর এলো দম বিরিয়ানির পালা। দম বিরিয়ানি, শুনলেই যেন চোখে ভেসে ওঠে দমে রান্না অসাধারণ এক বিরিয়ানির ছবি। দেখতে বেশ ঝাল মনে হলেও আদতে তা নয়। বরং মশলার একটা সুন্দর গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে প্রতি পরতে।
এর পেছনের ইতিহাস জানালেন শেফ হালিম, তারমতে, ভারতের ২৮ রাজ্যে নাকি বিরিয়ানির স্বাদ ২৮ রকম। তবে লখনৌয়ের বিরিয়ানির স্বাদ অন্যসব জায়গার তুলনায় কিছুটা আলাদা। এখানেও নবাবদের অবদান অনস্বীকার্য। যেহেতু নবাবরা পাতে গোটা গরম মশলা বা অন্য যেকোনো অতিরিক্ত কিছু পড়লে খুবই বিরক্ত হতেন, তাই নবাবরা যাতে আয়েশ করে খেতে পারেন এজন্য সবধরনের মশলার গুঁড়া ব্যবহার করতে শুরু করেন তাদের খাস বাবুর্চিরা।
বিরিয়ানিতেই কি শেষ? কাশ্মীরি দম আলু, ডাল মাখানি দিয়ে একটু পোলাওয়ের স্বাদ তো নিতেই হয়। ঝরঝরে কিন্তু শুকনো নয়, এমন স্বাদের পোলাও শেষ না হতেই একে একে হাজির হওয়া নবাবি মালাই কুলফি, গোলাপজাম, সাবুদানার ক্ষীর, গাজরের হালুয়া পরখ শেষে বেশ একটা নবাবি তৃপ্তির ঢেঁকুর তো উঠতে বাধ্য।