ঢাকায় ফেরার যানবাহন না পেয়ে পোশাক শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ
রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানা খুলে দেওয়ার ঘোষণার পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পোশাকশ্রমিকরা দলে দলে ঢাকায় ফেরার চেষ্টা করছেন। রাজধানীতে ফেরার যানবাহন না পেয়ে রংপুরে সড়ক অবরোধ করেছেন পোশাকশ্রমিকরা। পরে যানবাহনের ব্যবস্থা করা হলে পুলিশের মধ্যস্থতায় অবরোধ তুলে নেন তারা।
মহামারির কারণে দেওয়া কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেই শনিবার ভোর থেকেই হাজার হাজার পোশাক শ্রমিক উত্তরাঞ্চলের জেলা কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় এবং দিনাজপুর থেকে বিভিন্ন ছোট ছোট যানবাহনে এসে ভিড় জমান রংপুর শহরের মডার্ন মোড়ে।
সেখান থেকে তারা পণ্যবাহী ও খালি ট্রাকে চড়ে রওনা দিলে পুলিশ বাধা দেয়। নগরীর মডার্ন মোড় থেকে ঢাকায় যাওয়ার কোনো যানবাহন না থাকায় তারা সকাল ১০টা থেকে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে অবরোধ গড়ে তোলে। ঢাকা যাওয়ার দাবিতে মুহূর্তেই বন্ধ হয়ে যায় মহাসড়কের সকল ধরনের যানবাহন চলাচল। শ্রমিকরা দাবি করেন, যেকোনোভাবে তাদের ঢাকায় যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে।
পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় কয়েক ঘন্টা পর বিআরটিসির দোতলা বাসে ঢাকায় যাওয়ার ব্যবস্থা করা হলে রংপুর মর্ডান মোড় থেকে অবরোধ তুলে নেন শ্রমিকরা।
শ্রমিকদের অভিযোগ,গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ তাদের জানিয়েছে নির্দিষ্ট সময়ে যোগদান করতে না পারলে চাকরি থাকবে না।এ কারণে তারা ঢাকা যাওয়ার জন্য বিভিন্ন জেলা থেকে রংপুর মর্ডান মোরে আসেন।সেখানে কোন যানবাহন না পেয়ে রাস্তায় নেমে পড়েন শ্রমিকরা।
পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুলিশ ঢাকা থেকে ঈদের আগে রংপুরে আসা দোতালা বিআরটিসি বাসে শ্রমিকদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করে দিলে বিকেল তারা অবরোধ তুলে নেন।
দুপুরে রংপুর নগরীর মডার্ন মোড় এলাকায় দেখা যায়, হাজার হাজার শ্রমিক গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছেন। প্রচণ্ড রোদের কারণে কেউ গাছের নিচে, কেউ দোকানের সামনে বসে আছেন। তাদের অধিকাংশই পোশাকশ্রমিক কর্মী।
কুড়িগ্রাম থেকে আসা শ্যামলী আক্তার জানান,সাভারে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন তিনি। আজকেই যেতে হবে, না যেতে পারলে চাকরি হারাবেন। এ কারণে ঢাকা যাওয়ার জন্য অনেক কষ্টে কুড়িগ্রাম থেকে মর্ডান মোড়ে এসেছেন। সেখানে এসেই বিপদে পড়ছেন তিনি।
রংপুর নগরীর মিস্ত্রিপাড়ার রফিকুল ইসলাম জানান, ঢাকার একেএস নামের একটি গ্রুপের পোশাক কারখানায় চাকরি করেন তিনি ও তার কয়েকজন বন্ধু। মালিকপক্ষ ঢাকায় যেতে বলেছে। তাই তারা যাচ্ছিলেন। রাস্তায় যানবাহন না চলায় কষ্ট করে যেতে হবে।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. আবু মারুফ হোসেন জানান, শ্রমিকরা ঢাকায় যাওয়ার জন্য নগরীর মর্ডান মোড়ে এসেছেন। গাড়ী না পেয়ে তারা কিছুক্ষণ মহাসড়কে বসে পড়েন। তাদের সাথে কথা বলে বিআরটিসির দোতলা বাসে ঢাকায় যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। এরপর মর্ডান মোড় থেকে অবরোধ তুলে নিয়েছে শ্রমিকরা।