নগরায়নের কারণে বাড়ছে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি
দ্রুত নগরায়ন, দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করা, সপ্তাহে তিন বারের বেশি ফাস্টফুড খাওয়া, স্থুলতা এবং বেশী মাত্রায় প্রসাধনী সামগ্রী ব্যবহারের কারণে নারীদের মধ্যে বাড়ছে স্তন ক্যান্সার প্রবণতা।
এ সব বিষয়ে সচেতন হলে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকংশেই কমিয়ে আনা সম্ভব বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর বিএমএ ভবনের সভা কক্ষে 'স্তন ক্যান্সারে পেশাগত ঝুঁকি' বিষয়ক একটি সচেতনতামূলক গোলটেবিল বৈঠক হয়। সেখানে এসব কথা বলেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
বাংলাদেশ ক্যান্সার স্ট্যাডি গ্রুপ ও বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টস ফোরাম যৌথভাবে গোলটেবিল বৈঠকটির আয়োজন করেছে।
বৈঠকে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনিস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, "গত ৪০ বছরে সবচেয়ে বেশি নগরায়ন হয়েছে বাংলাদেশে। কর্মজীবীদের মধ্যে প্লাস্টিকের বোতলে পানি পানের প্রবণতা বেশি। তবে একবার ব্যবহৃত প্লাস্টিকের বোতলের মুখে মুখ লাগিয়ে পানি পানের ফলে মুখের লালার সঙ্গে প্লাস্টিকের স্পর্শে 'বিপিএ' নামের এক ধরনের বিষক্রিয় আমাদের শরীরে প্রবেশ করে, এর ফলে নারীদের স্তন ক্যান্সার ঝুকি ৩ শতাংশ বেড়ে যায়।"
তিনি বলেন, দেশে নারীদের মধ্যে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্তের হার ব্যাপক। ৮০ থেকে ৯০ ভাগ ক্যান্সার শনাক্ত হয় চতুর্থ স্তরে গিয়ে।
গোলটেবিল বৈঠকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিয়েশন অনকোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মামুনুর রশীদ বলেন, "দেশে ক্যান্সার চিকিৎসার বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন দরকার। কারণ দেশে প্রায় ৫০ বছর আগে ক্যান্সারের চিকিৎসা সেবা শুরু হলেও রোগীদের চাহিদা অনুযায়ী সেবার মান ও পরিধি বাড়েনি। দেশে প্রতি ১০ লাখ মানুষের জন্য একটা করে ক্যান্সার কেন্দ্র দরকার। সে হিসেবে ১৬০টি ক্যান্সার চিকিৎসা কেন্দ্র প্রয়োজন। অথচ বর্তমানে সচল ও বিকল মিলে আছে মাত্র ২০টি কেন্দ্র। যা চাহিদা অনুযায়ী খুবই কম।"
তিনি আরও বলেন, 'দেশে বর্তমানে প্রায় ১৬ লাখ ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী রয়েছে। এর সঙ্গে প্রতি বছর নতুন করে যোগ হয় দুই লাখ। এই রোগীদের ৭০ শতাংশই চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। ফলে প্রতিবছর ৫ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা জাতীয় রাজস্বের অপচয় হচ্ছে। যেটা জাতীয় স্বাস্থ্য বাজেটের ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ।"
বৈঠকে সভাপত্বি করেন হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সহ-সভাপতি জান্নাতুল বাকেয়া কেকা, সঞ্চালনা করেন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ রাব্বি।