রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির অস্তিত্ব সন্দেহজনক: প্রধানমন্ত্রী
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2021/11/08/pm.jpg)
অতীতে অবৈধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িত বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের সাজা হওয়ায় রাজনৈতিক দল হিসেবে ভবিষ্যতে দলটির অস্তিত্ব টিকে থাকার বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি প্রশ্ন করেন, "অস্ত্র চোরাচালান, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা এবং এতিমদের অর্থ আত্মসাৎ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামীর নেতৃত্বে একটি রাজনৈতিক দল কীভাবে টিকে থাকবে?"
যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সময় অনুযায়ী রোববার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীকে নাগরিক সংবর্ধনা দেন যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিরা। কুইন এলিজাবেথ সেন্টারে আয়োজিত এই সংবর্ধনায় বিএনপির অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
লন্ডনে তার বাসস্থান থেকে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, অস্ত্র চোরাচালান ও দুর্নীতির পাশাপাশি হত্যা মামলায়ও সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন এ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
এমনকি, বাংলাদেশ সরকারের তদন্তের পাশাপাশি আমেরিকার এফবিআইর করা তদন্তে উঠে এসেছে বেগম খালেদা জিয়ার ছেলেদের এসকল দুর্নীতি।
তিনি আরও বলেন, "আমরা (বাংলাদেশ সরকার) বিদেশ থেকে তাদের পাচারকৃত কিছু অর্থ দেশে ফেরত আনতে সক্ষম হয়েছি।"
শেখ হাসিনা বলেন, তাদের (খালেদা জিয়া ও তার ছেলেদের) মধ্যে কোনো দেশপ্রেম ছিলনা, বরং তাদের চিন্তা ছিল ক্ষমতা ভোগ এবং লুঠপাট করা।
শেখ হাসিনা লন্ডনে তাদের (তারেক রহমান) বিলাসবহুল জীবন যাপন ও আয়ের উৎস নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি (খালেদা জিয়া) ক্ষমতায় এসে হাওয়া ভবন চালুর মাধ্যমে লুঠপাটের রাজত্ব কায়েম করেন। দেশের জনগণের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেন তিনি। ঐ সময় বাংলাদেশ দুর্নীতিতে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়।
তিনি আরও বলেন, "স্বাভাবিকভাবে, জনগণ সামনের দিকে অগ্রসর হতে চায়। আমি কখনো জনগণকে পেছনের দিকে যেতে দেখিনি। কিন্তু তারা সেটাই করেছে।"
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যার পর বাংলাদেশ অন্ধকার যুগে নিমজ্জিত হয়। তিনি বলেন, "আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশের জনগণ সরকারের সেবা পেতে শুরু করে।"
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করায় দেশের ভাগ্যের চাকা সামনের দিকে অগ্রসর হতে শুরু করে। তিনি আরো বলেন, "আওয়ামী লীগ সর্বদা দেশের জনগণের পাশে থাকে এবং জনগণের কল্যাণ চিন্তা করে।" তিনি বলেন, "বাংলাদেশ এখন আর ভিক্ষাবত্তি করে চলে না, আজকের বাংলাদেশ তাদের নিজের পায়ে দাঁড়াতে শিখেছে। আমাদের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের ৯০ শতাংশ অর্থায়ন আমাদের নিজস্ব সম্পদ থেকে আসে এবং আমরা সক্ষমতা অর্জন করেছি।"
পদ্মা সেতুর ব্যাপারে শেখ হাসিনা বলেন, একটি কুচক্রীমহল এ সরকারকে, বিশেষকরে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর পরিবারকে দুর্নীতির অভিযোগ এনে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করেছিল। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে "আমি বিশ্ব ব্যাংককে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেও তারা তা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। পদ্মা সেতুতে কোনো দুর্নীতি হয়নি।"
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ দুর্নীতি করে নিজের ভাগ্য গড়তে ক্ষমতায় আসেনি। তিনি বলেন, "আমরা জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে ক্ষমতায় এসেছি। এটিই আমাদের লক্ষ্য। আর এই লক্ষ্য অর্জনে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।" তিনি ১০০ টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানান। সারা দেশে অর্থনৈতিক জোন গড়ে তোলা হচ্ছে। তিনি বলেন, "আপনারা (প্রবাসীরা) বিনিয়োগ করতে চাইলে, বিশেষ সুযোগ-সুবিধা পাবেন। আমরা তা করবো।"
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তার সরকার প্রবাসীদের সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশিরা যাতে অন্য দেশেও বিনিয়োগ করতে পারে সরকার সেটিরও পথ সুগম করবে।
তিনি বলেন, "আমার পিতা পাকিস্তানিদের কাছ থেকে এই দেশ স্বাধীন করেছেন এবং আমি জানি কীভাবে বাংলাদেশের উন্নতি করতে হয়।"
৭ নভেম্বরের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেন এবং ১৯৭৫ সালের পর ১৯ বার সামরিক অভ্যুত্থান ঘটানো হয়। তিনি বলেন, প্রতিবার অভ্যূত্থানকালে জিয়াউর রহমান সশস্ত্র বাহিনী, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর হাজার হাজার কর্মকর্তা ও সৈন্যকে নির্মমভাবে হত্যা করেন।
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরিফ এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।