এবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আসিফের স্ত্রীকে ‘নজরবন্দি’ করার অভিযোগ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদের স্ত্রী মেহেরুন্নিসাকে সাদা পোষাকধারী লোকজন দিয়ে 'নজরবন্দি' করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। রোববার (২৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মেহেরুন্নিসা সাংবাদিকদের কাছে নিজেই এ অভিযোগ করেন। এছাড়া গত শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) রাত থেকে আসিফকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা। তবে এ বিষয়ে এপর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি।
আবু আসিফ আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় তাকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। বিএনপির দলছুট নেতা আব্দুস সাত্তারের বিপরীতে আসিফকেই শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা। তাছাড়া ভোটের প্রচারণায়ও এগিয়ে আছেন আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক এই চেয়ারম্যান। তবে সাত্তারের জন্য প্রকাশ্যে মাঠে নেমেছেন, আওয়ামী লীগের এমপিসহ কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় নেতাকর্মীরা। সরাইল ও আশুগঞ্জে সাত্তারের প্রচারণায় অংশ নিয়ে ভোট চাইছেন তারা।
মেহেরুন্নিসা রোববার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে বলেন, 'আমাকে নজরবন্দি করে রাখা হয়েছে। বাসার সামনে সাদা পোষাকধারী লোকজন আমার বাসায় সামনে যেই আসে ভিডিও করে রাখছে। আমার কোনো কর্মী আসতে পারছে না। আমার কাজের লোক পর্যন্ত আসতে পারছে না'।
তিনি আরও বলেন, 'আমাদের কোনো এজেন্ট দেওয়া যাবে না। তাদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে তল্লাশি করে হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় আমরা কীভাবে নির্বাচন করব, তাহলে এ নির্বাচনের কী প্রয়োজন ছিল? মানুষ ভোট দেয় উৎসবমুখর পরিবেশে, আর এখানে আমরা আতংকের মধ্যে আছি। আমার কাছে কেউ আসতে পারছে না, আমি কোথাও যেতে পারছি না। এভাবে নজরবন্দি আছি'।
এদিকে, গত ২৫ জানুয়ারি দিবাগত রাত থেকে আসিফের শ্যালক ও তার নির্বাচন পরিচালকারী কমিটির প্রধান সমন্বয়ক শাফায়েত হোসেন (৩৮) 'নিখোঁজ' রয়েছেন। এখনও পর্যন্ত তার কোনো সন্ধান মেলেনি। এছাড়া, গত ২৫ জানুয়ারি দিবাগত মধ্যরাতে পুলিশ আসিফের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট মুসা মিয়াকে (৮০) একটি মারামারির মামলায় গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায়।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, 'পুলিশ কখনোই তার (আবু আসিফ) বাড়িতে যায়নি। এখনও নেই। তিনি নিখোঁজ আছেন কিনা- সে বিষয়েও আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি'।
উল্লেখ্য, বিগত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া। তবে গেল বছরের ডিসেম্বরে দলের সিদ্ধান্তে সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। পরবর্তীতে দলের চেয়ারপাসনের উপদেষ্টা পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে নিজের ছেড়ে দেওয়া আসনের উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র পদে লড়তে মনোনয়ন ফরম কেনেন সাত্তার। এর প্রেক্ষিতে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় বিএনপি।