রাজউক প্লট জালিয়াতি: শেখ হাসিনা ও জয়ের বিরুদ্ধে মামলা অনুমোদন দুদকের
ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজউক থেকে পূর্বাচলে প্লট গ্রহণের অভিযোগে এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আক্তার হোসেন জানান, রাজউক থেকে প্লট পাওয়ার আবেদনের জন্য যে শর্তাবলী রয়েছে, সেখানে তারা তথ্য গোপন করেছেন।
দুদক দুটি পৃথক মামলায় সজীব ওয়াজেদ জয় ও শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সজীব ওয়াজেদ জয়ের মামলায় সহায়তা প্রদানকারী হিসেবে আসামি করা হয়েছে শেখ হাসিনাকে।
এছাড়া, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় গৃহায়ন ও রাজউক কর্মকর্তাসহ মোট ৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। অপরদিকে, জয়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় শেখ হাসিনা, গৃহায়ন ও রাজউকের কর্মকর্তাসহ মোট ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
তিন মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ভাগ্নি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিককে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া পৃথকভাবে শেখ রেহানা, রিজওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক রুপন্তীকে আসামি করা হয়। আর প্লটগুলো বরাদ্দ দেয়ায় আসামি করা হয়েছে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজউকের সংশ্লিষ্ট ১৪ কর্মকর্তাকে ।
গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর দুদক শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা, রেহানার ছেলে ববি, মেয়ে আজমিনা এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ৬০ কাঠা সরকারি জমি বেআইনিভাবে দখলের অভিযোগে তদন্ত শুরু করে।
সেই সময় দুদকের মহাপরিচালক সাংবাদিকদের জানান, শেখ পরিবারের সদস্যরা গোপনে এবং বেআইনিভাবে সেক্টর ২৭-এর রোড ২০৩-এ প্রস্তাবিত কূটনৈতিক অঞ্চলের ১০ কাঠা করে ৬টি প্লট দখল করেন। তারা ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম এবং রাজউকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশের মাধ্যমে এই প্লটগুলো বরাদ্দ নেন।
উচ্চ আদালত পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দে অনিয়ম তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছেন।
শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা ২০২২ সালে এই প্লটগুলো গ্রহণ করেন। বিষয়টি তখন উচ্চ গোপনীয়তার আওতায় রাখা হয়।
রাজউকের ডেপুটি ডিরেক্টর (এস্টেট অ্যান্ড ল্যান্ড-৩) নায়েব আলী শরীফের সই করা চূড়ান্ত বরাদ্দপত্র অনুসারে, প্রতি কাঠার মূল্য ধরা হয় ৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ ১০ কাঠার প্রতিটি প্লটের মূল্য নির্ধারিত হয় ৩০ লাখ টাকা।
শেখ হাসিনার জন্য সেক্টর ২৭-এর রোড ২০৩-এর প্লট ৯ বরাদ্দ করা হয়। বরাদ্দপত্রটি তার নামে ইস্যু হয় ২০২২ সালের ৩ আগস্ট।