যেভাবে ‘মাসুদ রানা’র লড়াইয়ে শেষ হাসি প্রয়াত হাকিমের!
চলতি বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর ৭৫ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন দেশের রহস্য রোমাঞ্চ উপন্যাসের অন্যতম জনপ্রিয় লেখক ও অনুবাদক শেখ আবদুল হাকিম। আর তার ঠিক ১০৭ দিনের মাথায়, আজ সোমবার, ১৩ ডিসেম্বর এক যুদ্ধে জয়ী হলেন তিনি।
হাইকোর্টের দেওয়া রায়ে সেবা প্রকাশনীর 'মাসুদ রানা' সিরিজের ২৬০টি এবং 'কুয়াশা' সিরিজের ৫০টি বইয়ের মালিকানা গেল সদ্যপ্রয়াত লেখকের দখলে। এর মাধ্যমে এক নতুন অধ্যায় যোগ হলো বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশিদিন ধরে চলমান সিরিজটিকে কেন্দ্র করে শেখ আবদুল হাকিম বনাম কাজী আনোয়ার হোসেনের লড়াইয়ের।
এই লড়াইয়ের ইতিহাস জানতে হলে আমাদের ফিরে যেতে হবে ২০০৮ সালে। কাজী আনোয়ার হোসেনের পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটায় সে বছর সেবা ত্যাগ করেন শেখ আবদুল হাকিম। এরপর তার পাওনা হিসেবে ২০১০ সালের জানুয়ারিতে ২ কোটি টাকা দাবি করেন সেবার কাছে।
কিন্তু দাবিকৃত সেই পাওনা টাকা আদায় করতে না পেরেই সে বছর 'মাসুদ রানা' সিরিজের ২৬০টি বইয়ের মালিকানাস্বত্ব দাবি কাজী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে কপিরাইট আইনের ৭১ ও ৮৯ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলেন তিনি। নয় বছরেও অভিযোগের কোনো সুরাহা না পাওয়ায় ২০১৯ সালের ২৯ জুলাই তিনি কপিরাইট অফিসে অভিযোগ দায়ের করেন।
২০১৯ সালের ১১ ও ৩০ সেপ্টেম্বর এবং ৪ নভেম্বর তিন দফা শুনানি, দুই পক্ষের যুক্তি-পাল্টা যুক্তি ও তৃতীয় পক্ষের বক্তব্যের আলোকে ২০২০ সালের ১৪ জুন কপিরাইট অফিস সেই মামলার রায় ঘোষণা করে। সেখানে কপিরাইট অফিস জানায়, আসলেই কাজী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে কপিরাইট আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তাই শেখ আবদুল হাকিমের দাবিকৃত বইগুলোর প্রকাশ বা বাণিজ্যিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য সেবা প্রকাশনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
রায়ে আরও বলা হয়, বিষয়টি বেশ জটিল এবং দেশের প্রকাশনা শিল্পের ক্ষেত্রে লেখক ও প্রকাশকের পারস্পরিক সম্পর্কের গুরুত্ব বিবেচনা করে, এর সন্তোষজনক ও সুষ্ঠু সমাধানের উদ্দেশ্যে উক্ত অভিযোগের বিষয়ে এদেশের বিখ্যাত ও প্রথিতযশা কয়েকজন লেখক ও প্রকাশক এবং সেবা প্রকাশনীর সাবেক ব্যবস্থাপকের লিখিত মতামত চাওয়া হয়। যাদের মধ্যে ছিলেন লেখক বুলবুল চৌধুরী ও শওকত হোসেন, প্রখ্যাত শিল্পী হাশেম খান এবং সেবা প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক ইসরাইল হোসেন খান। তাদের লিখিত মতামতের ওপর ভিত্তি করেই রায়টি দেওয়া হয়।
ওই সময় কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার জাফর রাজা চৌধুরী জানান, 'মাসুদ রানা' সিরিজের প্রায় ৪৫০টি বইয়ের মধ্যে ২৬০টি বইয়ের লেখক হিসেবে শেখ আবদুল হাকিমের দেওয়া তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে দেখা গেছে তিনিই বইগুলোর লেখক। সেই সঙ্গে 'কুয়াশা' সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখকও তিনি।
তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, "সেগুলোর মধ্যে আগেই তার নামে ৬টি বইয়ের কপিরাইট করা ছিল। বাকি বইগুলোও নিজের নামে স্বত্বের জন্য কপিরাইট অফিসে আবেদন করতে পারেন।"
তবে এরপর সেবা প্রকাশনী তাদের আইনজীবীর মাধ্যমে ২০২০ সালের ২৭ জুলাই কপিরাইট অফিস বরাবর ১৪ জুন, ২০২০ তারিখের আদেশ বাতিল চেয়ে আইনী নোটিশ প্রেরণ করে।
কিন্তু কপিরাইট অফিস তাদের দেওয়া রায় বাতিল না করলে সেবা প্রকাশনী সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ২০২০ সালের ২৪ আগস্ট হাইকোর্টে একটি রীট মামলা দায়ের করে। ওই বছরেরই ১০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি মোহাম্মদ আশফাকুল ইসলাম ও মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বাধীন দ্বৈত বেঞ্চে মামলাটির শুনানি করেন। সেই শুনানি শেষে হাইকোর্টের বেঞ্চটি কপিরাইট অফিস কর্তৃক প্রদত্ত রায়টি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না সেই মর্মে একটি রুল ইস্যু করেন। পাশাপাশি সেই রায়টির উপর স্থগিতাদেশ প্রদান করেন।
আজ সেই রুল খারিজ করে এবং কপিরাইট অফিসের দেওয়া সিদ্ধান্তের ওপর থাকা স্থগিতাদেশ বাতিল করেই রায় দিয়েছেন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাই কোর্ট বেঞ্চ। ফলে মৃত্যুর পর 'মাসুদ রানা' ও 'কুয়াশা' সিরিজের জন্য নিজের লেখা বইগুলোর স্বত্বাধিকার পেলেন শেখ আবদুল হাকিম।
শেখ আবদুল হাকিম যা বলেছিলেন
২০২০ সালের ১৪ জুন প্রথম কপিরাইট অফিসের রায়ের পর প্রতিক্রিয়ায় শেখ আবদুল হাকিম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেছিলেন, "আমিই মাসুদ রানা সিরিজের ২৬০টি বইয়ের লেখক। এ রায়ের মাধ্যমে তারই স্বীকৃতি এল। দীর্ঘদিন মাসুদ রানা বিক্রিবাবদ আমাকে যে প্রচুর টাকা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে, এখন সেই পাওনা টাকা আদায়ের লড়াই শুরু হলো।"
এছাড়া অন্যান্য গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শেখ আবদুল হাকিম 'মাসুদ রানা' সিরিজের তার লেখা বইগুলোর ব্যাপারে নিজের পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছিলেন। মাসুদ রানা সিরিজের অল্প কিছু চরিত্র ছাড়া বাকি সবই তার সৃষ্টি উল্লেখ করে তিনি বলেছিলেন, "মাসুদ রানা, রাহাত খান, সোহেল রানা, সোহানাসহ এমন সাত-আটটা চরিত্র তার (কাজী আনোয়ার হোসেনের)।"
আবদুল হাকিম বলেছিলেন, কপিরাইট নেওয়ার পর সেবা প্রকাশনী যদি তাকে তার ন্যায্যমূল্য হিসেবে চার কোটি টাকা পরিশোধ করে দেয়, তাহলে বইগুলো তিনি তাদেরকেই দিয়ে দেবেন। কিন্তু বইগুলো আর কাজী আনোয়ার হোসেনের নামে নয়, তার নিজের নামেই ছাপা হবে। কাজী আনোয়াড় হোসেনের সৃষ্ট চরিত্রগুলো তিনি রাখবেন না, অন্য নাম দেবেন।
যেভাবে মাসুদ রানার 'গোস্ট রাইটার' হলেন হাকিম
কাজী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে শেখ আবদুল হাকিমের পরিচয় তার ভাই শেখ আবদুর রহমানের মাধ্যমে। সেটি ১৯৬৬ বা '৬৭ সালের কথা। কাজী আনোয়ার হোসেনের বলে দেওয়া কাহিনিকে নিজের মতো করে সাজিয়ে এক রাতের মধ্যেই একটি গল্প লিখে ফেলেন হাকিম। পেয়ে যান নগদ ১০০ টাকা। এরপর তিনি নিজে থেকেও কাহিনি বানান। এর আগে তিনি একটি উপন্যাস লিখেছিলেন, সেটিও সেবার স্বত্বাধিকারীকে দেখালে পেয়ে যান প্রকাশের প্রস্তাব।
তবে মজার ব্যাপার হলো, হাকিমের লেখা অধিকাংশ লেখাই ছাপা হচ্ছিল কাজী আনোয়ার হোসেনের নামে। শুধু ভেতরে থাকত হাকিমের নাম। এতে শুরুর দিকে তিনি কোনো আপত্তিও করেননি। কিন্তু এরপর যখন বুঝতে পারলেন তার লেখার চাহিদা অনেক, তখন পারিশ্রমিক এক ধাক্কায় বাড়িয়ে নেন ৩০০ টাকা পর্যন্ত।
এ প্রসঙ্গে শেখ আবদুল হাকিম বলেছিলেন, "আমি আর্থিক কারণে এসব বই তাকে (কাজী আনোয়ার হোসেন) নামে লেখার অনুমতি দিয়েছি। কারণ তখন আমার টাকার দরকার ছিল।"
এভাবে একে একে 'মাসুদ রানা' সিরিজেরই ২৬০টি বই লিখে ফেলেন তিনি। একসময় দুই হাজার করে প্রতি মুদ্রনে ছাপা হওয়া বইগুলো হাকিমের আমলেই ১৮ হাজারে পৌঁছে যায়। এক-একটা বই লাখ কপি করেও বিক্রি হয়।
হাকিমের মনে হয়েছিল 'তাকে ঠকানো হচ্ছে'
শেখ আবদুল হাকিম দাবি করেছিলেন, বই বেশি ছাপানো হলেও সেই সংখ্যা কম দেখিয়ে তাকে প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করা হতো। "একটা বইয়ের পাণ্ডুলিপি জমা দিলে ১০ হাজার টাকা আমাকে দিতেন কাজী সাহেব (কাজী আনোয়ার হোসেন)। এক মাস পর যখন বইটা বের হতো, তখন আরও কিছু টাকা পেতাম। পরে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে রয়ালিটি দিতেন। কিন্তু গোলমাল লাগছে, আমার বই তাঁরা ছাপছেন, সেটা কিন্তু খাতায় তুলছেন না। এটা তো সিরিয়াস একটা সমস্যা। একটা বই তাঁরা ছাপলেন ৬০ হাজার কপি। কিন্তু আমাকে দেখাচ্ছেন সাত হাজার। আমি তো ৫৩ হাজার বইয়ের পয়সা পাচ্ছি না।"
'মাসদু রানা' লেখার পক্ষে হাকিমের ৬ যুক্তি
তিনিই যে 'মাসুড রানা' সিরিজের ২৬০টি এবং 'কুয়াশা' সিরিজের ৫০টি বই লিখেছেন, সেই দাবির স্বপক্ষে শেখ আবদুল হাকিম ছয়টি যুক্তি কপিরাইট বোর্ডের কাছে তুলে ধরেছিলেন।
১। কাজী আনোয়ার হোসেন নিজে গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেছেন, তিনি আর 'মাসুদ রানা' লেখেন না। হাকিমসহ কয়েকজন তা লেখেন। একই সঙ্গে 'মাসুদ রানা' সিরিজের 'অটল সিংহাসন' ও 'প্রমাণ কই' বইয়ের আলোচনা বিভাগে কাজী আনোয়ার হোসেন স্বীকার করেছেন, তিনি 'মাসুদ রানা' সিরিজ লেখেন না।
২। 'মাসুদ রানা' ও 'কুয়াশা' সিরিজের বইগুলো কোন বইয়ের ছায়া অবলম্বনে লেখা হয়েছে, তা সবই তিনি বলতে পারবেন।
৩। হাকিম যে 'মাসুদ রানা' সিরিজ লিখতেন, এর প্রমাণস্বরূপ রয়েছে কাজী আনোয়ার হোসেনের স্বহস্তে লেখা চিঠি।
৪। 'মাসুদ রানা' সিরিজের 'খুনে মাফিয়া' বইটির পাণ্ডুলিপি তাঁর কাছে রয়েছে।
৫। দুটি বিদেশি বই অবলম্বনে 'মাসুদ রানা' সিরিজের বই 'মিশন তেল আবিব' বইটি লেখা হয়।
৬। 'মাসুদ রানা' সিরিজের বই হাকিম যে লিখেছেন, এ বিষয়ে কয়েকজন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
কাজী আনোয়ার হোসেন যা বলেছেন
শেখ আবদুল হাকিম নিজেকে মাসুদ রানা সিরিজের অল্প কিছু ছাড়া বাকি সব চরিত্রের স্রষ্টা বলে দাবি করলেও, কাজী আনোয়ার হোসেন বলেছেন সম্পূর্ণ ভিন্ন কথা। তার দাবি, মাসুদ রানা সিরিজ ও প্রতিটি চরিত্রই তার সৃষ্টি।
তিনি বলেন, "মাসুদ রানা সিরিজের প্রতিটি বইয়ের গল্প-প্লট আমার তৈরি করে দেওয়া। এখানে কোনো সংশয় বা সন্দেহ নেই। কারণ, সিরিজটা আমার। মাসুদ রানা সিরিজটা আমি সৃষ্টি করেছি। এবং এর প্রত্যেকটা চরিত্র আমি তৈরি করেছি, প্রত্যেকটা ঘটনা আমার নির্দেশনায় হয়েছে। প্রখ্যাত সাংবাদিক রাহাত খান আমার বন্ধু। তাকে মাসুদ রানা সিরিজের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র বানিয়েছি। মাসুদ রানা সিরিজের সবগুলো বইয়ের সবগুলো চরিত্র আমি যেভাবে চেয়েছি, সেভাবে পরিচালিত হয়েছে। গোস্ট রাইটাররা কেউ কোনো চরিত্র সৃষ্টি করেননি। আমার দেওয়া প্লট অনুযায়ী তারা চরিত্রগুলো নিয়ে খসড়া গল্প তৈরি করে এনেছেন। শেষে বই যখন প্রকাশিত হয়েছে, তখন চরিত্রগুলো আমার ইচ্ছেমতো চলেছে। খসড়া লেখা বই প্রকাশের উপযোগী করেছি আমি।"
গোস্ট রাইটারদের লেখাকে সরাসরি 'রচনা' বলারও পক্ষপাতী নন তিনি। তার মতে, গোস্ট রাইটাররা নিজে থেকে কিছুই সৃষ্টি করেননি। তিনি যা সাজিয়ে দিয়েছেন, সেগুলোকেই 'লিপিবদ্ধ করে দিয়েছেন' মাত্র।
কেন 'গোস্ট রাইটার' প্রয়োজন পড়ল?
মাসুদ রানা লেখানোর জন্য গোস্ট রাইটার নিয়োগের কারণ হিসেবে কাজী আনোয়ার হোসেন যুক্তি দেখিয়েছেন ব্যস্ততার। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারেই তিনি বলেছেন, 'মাসুদ রানা' সিরিজটি তুমুল জনপ্রিয়তা পাওয়ায় পাঠকরা প্রতি মাসেই একটি বা দুটি বই দাবি করত। এত বিপুল সংখ্যক রচনা তার একার পক্ষে লেখা সম্ভব ছিল না। তখনই তার মাথায় এই চিন্তা এলো যে, তিনি বিদেশি কাহিনি থেকে গল্প-প্লট সাজিয়ে দেবেন। অন্যরা খসড়া করে যা আনবে, সেগুলোকে তিনি নিজের মতো করে সাজিয়ে 'মাসুদ রানা' প্রকাশ করবেন।
অনেকেই বলে থাকে, কাজী আনোয়ার হোসেন নিজেই নাকি গোস্ট রাইটারদের নাম জানিয়েছেন। কিন্তু তার দাবি, তিনি নিজে কখনো কোথাও বলেননি। প্রথম আলোর এক সাক্ষাৎকারে আসজাদুল কিবরিয়া তার বক্তব্যে বলেছিলেন, এই এই লেখকরা সম্ভবত মাসুদ রানা সিরিজে লেখেন বা এমন কিছু। এটাকেই তারা ধরে নিয়েছেন কাজী আনোয়ার হোসেনের বক্তব্য হিসেবে।
কোনো লেখককে কখনো তিনি ঠকাননি বলেও মনে করেন কাজী আনোয়ার হোসেন।
কাজী আনোয়ার হোসেনের যে দাবি কপিরাইট অফিস মানেনি
মালিকের নির্দেশে কেউ যদি লেখেন, এই স্বত্বটা কর্মচারী দাবি করতে পারেন না -- এমন যুক্তিই দেখিয়েছিলেন কাজী আনোয়ার হোসেনের আইনজীবী। কিন্তু ২০২০ সালের জুন মাসে কপিরাইট অফিস শেখ আবদুল হাকিমের পক্ষে রায় দেওয়ার পর রেজিস্ট্রার জাফর রাজা চৌধুরী বলেছিলেন, "মালিকের নির্দেশে লেখেন আর আর যার নির্দেশে লেখেন, এতে কিছু আসে-যায় না। কারণ, মরাল রাইট প্রণেতারই থাকে, লেখকেরই থাকে। মালিক কখনো লেখক হতে পারেন না। এটাই হলো মূল বিষয়।"
স্বত্ব নিয়ে লড়াই চালাচ্ছেন আরেক লেখকেরও
'মাসুদ রানা' সিরিজের বইয়ের স্বত্ব নিয়ে সেবা প্রকাশনীর বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালাচ্ছেন আরেক লেখক ইফতেখার আমিনও। ১৯৯২ সাল থেকে সেবা প্রকাশনীতে লিখতে শুরু করেন তিনি।
ইফতেখার আমিনের সঙ্গে সেবা প্রকাশনীর সমস্যা শুরু হয় প্রথমবার তার লেখা বইগুলোর পুনর্মুদ্রণের রয়্যালটি দাবি করার পর। সেবা প্রকাশনী তার দাবিকে আমল না দিলে ২০১০ সালে কপিরাইট অফিসে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। অবশ্য সেই সময়ে মামলার কোনো রায় তার পাওয়া হয়নি।
তবে ২০১৯ সালের ১১ জুলাই পুনরায় তিনি প্রমাণের কাগজপত্রসহ কপিরাইট অফিসে একটি অভিযোগ পত্র জমা দিয়েছেন। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, মাসুদ রানা সিরিজে তার লেখা ৫৮টি বই কাজী আনোয়ার হোসেনের নামে ছাপা হয়েছে। ওই অভিযোগে তিনি নিজের লেখা বইগুলোর লেখক স্বত্ব এবং লভ্যাংশ দাবি করেছেন।