আমার পাত্রী খুঁজবেন বাবা-মা: সজল
লকডাউন শুরু হওয়ার আগে আবুল হায়াতের সঙ্গে একটা নাটকের শুটিং করছিলেন অভিনেতা আব্দুন নূর সজল। শুটিংয়ে আবুল হায়াত সবাইকে সর্তক হয়ে বারবার মাস্ক পরার অনুরোধ করছিলেন। ঠিক তার কয়েকদিনের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হন বর্ষিয়ান অভিনেতা। চিকিৎসা নিতে হয়েছে হাসপাতালে গিয়ে।
যদিও করোনাকে জয় করে বাসায় ফিরেছেন আবুল হায়াত, কিন্তু ভয়টা কাটেনি সজলের। তাই কথার শুরুতেই টেনে আনলেন এ প্রসঙ্গ। বললেন, 'মানুষ এখনো অসর্তক। ঠিকমতো মাস্ক পরে না। লকডাউন না মেনে বাইরে বের হচ্ছে। এতসব প্রিয়জন, পছন্দের মানুষ হারিয়ে যাচ্ছে, তবু সর্তক হচ্ছি না আমরা।'
'ব্যাচেলর' সজলের বাসায় বয়স্ক বাবা-মা। তাই একটু বাড়তি সর্তকতা তার। পারতপক্ষে বাইরে বের হন না। লকডাউনে সময় কাটছে বই পড়ে, সিনেমা দেখে আর ঘরের টুকটাক কাজ করে।
কয়েকদিন আগে সজল অভিনীত ওয়েব ফিল্ম 'ব্যাচ ২০০৩' মুক্তি পেয়েছে বিঞ্জে। সেটা নিয়ে আলোচনাও হচ্ছে বেশ। অবশ্য আলোচনার কারণ আছে। এই ছবিতেই সজল প্রথমবারের মতো ভিলেন চরিত্রে অভিনয় করেছেন। প্রশংসা, আলোচনা সবই পাচ্ছেন তিনি। এগুলো গ্রহণ করাও একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
'ব্যাচ ২০০৩' নির্মাণ করেছেন পার্থ সরকার। সজলের সঙ্গে আরও অভিনয় করেছেন তাসনুভা তিশা, নওশাবা, শিপন মিত্র প্রমুখ।
ছবিটিতে অভিনয় প্রসঙ্গে সজল বললেন, 'আমার জন্য একেবারেই নতুন অভিজ্ঞতা। ওটিটির জন্য প্রথম কাজ, তা-ও আবার খল চরিত্রে। তাই একটু বাড়তি চাপ অনুভব করছিলাম। চেষ্টা করেছি নিজের সেরাটা দেওয়ার ও পরিচালকের নির্দেশনা অনুযায়ী ঠিকঠাক কাজটা করার।'
ছবির গল্পে দেখা যায়, পুরোনো বন্ধুরা অনেকদিন পর একটা পুনর্মিলনীর পরিকল্পনা করে। সেটা আবার তাদের স্কুল মাঠে। সবাই অনেকদিন বাদে একত্র হয়। কিন্তু সেই রাতেই ঘটতে থাকে একেক পর এক খুনের ঘটনা। বন্ধুদের একেকজন খুন হতে থাকে স্কুলের পাশের জঙ্গলে। শুরুতে সবাই ভাবে অলৌকিক কিছু; কিন্তু পরে জানা যায়, স্কুল জীবনের এক ঘটনায় বহু বছর ধরে ট্রমার মধ্যে থাকা এক বন্ধু সবাইকে খুন করছে। সেই খুনির চরিত্রেই অভিনয় করেছেন সজল। শেষমেষ কী হয়, সেটা দেখতে হবে বিঞ্জে!
সজল জানালেন, অভিনয়ের ২০ বছর পার করছেন তিনি। এতদিন ধরে টানা অভিনয় করতে করতে কি ক্লান্ত সজল?
'মোটেও না। অভিনয়টা আমার নেশা ও পেশা। এটা করতেই ভালো লাগে। যতদিন বাঁচব, করে যাব,' বলেন তিনি।
জানতে চাই, নেশা বা পেশা হলেও এখন তাকে কম দেখা যাচ্ছে অভিনয়ে। কারণ কী? নিজে থেকেই দূরে আছেন? নাকি তার চাহিদা কমে গেছে?
অকপটে উত্তর দিলেন, "এ রকম কিছু নয়। আমি বেশ কিছুদিন ধরে একটু চিন্তা ভাবনা করে কাজ করছি। স্ক্রিপ্ট বা চরিত্র পছন্দ না হলে একেবারেই কাজ করছি না। এই যেমন 'ব্যাচ ২০০৩'। এটা যখন প্রথম আমার কাছে আসে, তখন গল্প ও চিত্রনাট্য পড়ে ভালো লেগেছে বলেই করোনার সময়ে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেই শুটিং করেছি। চাইলে তো প্রতিদিনই শুটিং করতে পারি; কিন্তু সেটা চাই না। অভিনয়ে অনেক দিন হলো। এখন যদি একটু নিজের চাওয়াকে প্রাধান্য না দিই, তাহলে কীভাবে হবে?"
নিজের চাওয়াকে প্রাধান্য দিতেই বেশকিছু কাজের পরিকল্পনা করেছেন সজল। এরমধ্যে আছে চলচ্চিত্রও। সবকিছু ঠিক হলে আসবে সেসব। আপাতত ব্যস্ত তিনি ঈদের কাজ নিয়ে। পরিস্থিতি অনুকূল হলে ঈদে বেশ কয়েকটি নাটক ও টেলিফিল্মে দেখা যাবে সজলকে।
শুরুতেই বলা হয়েছিল, ব্যাচেলর সজল বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকেন। জানতে চাই, বিয়ে হচ্ছে কবে নাগাদ? সজল হেসে বলেন, 'সেটাও লকডাউন ও করোনার কারণে আটকে আছে! এগুলো বিদায় নিক, ধুমধাম করে আয়োজন করে বিয়ে হবে।' তবে পাত্রী কে, সেটা এখনো জানেন না সজল। দায়িত্বটা বাবা-মার ওপরেই দিয়ে রেখেছেন তিনি।