ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক চায় না সৌদি নাগরিকেরা: জরিপ
শতকরা ৯৬ ভাগ সৌদি নাগরিক মনে করে যে, গাজায় চলমান যুদ্ধের প্রতিবাদে আরব দেশগুলোর ইসরায়েলের সাথে সকল ধরণের সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত। একইসাথে জরিপে অংশ নেওয়া দেশটির শতকরা ৪০ ভাগ নাগরিক হামাসের প্রতি নিজেদের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছে।
যদিও যুদ্ধ শুরুর আগে শতকরা ১০ ভাগ সৌদি নাগরিক ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছিল। অন্যদিকে মাত্র ১৬ ভাগ নাগরিক সংঘাত সমাধানে ইসরায়েলের অস্তিত্ব স্বীকার করে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে মত দিয়েছেন।
জরিপটি পরিচালনা করেছে ওয়াশিংটন ইন্সটিটিউট ফর নেয়ার ইষ্ট পলিসি নামের একটি গবেষণা সংস্থা। এটি ইসরায়েলপন্থী সংগঠন হিসেবেই পরিচিত। জরিপটিতে ১ হাজার সৌদি নাগরিকদের গত ১৪ নভেম্বর থেকে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত অংশ নিয়েছিলেন।
যদিও গত ৮ বছর সৌদি প্রশাসন অনেকটা একচেটিয়াভাবেই নীতিগত বহু সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে বিশ্লেষকেরা মনে করেন যে, দেশটির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান গাজার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে জনমতকে কিছুটা হলেও বিবেচনায় আনবেন।
যদিও গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেন, "সৌদি ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সম্পর্ক 'প্রতিনিয়ত ঘনিষ্ঠ' হয়ে উঠছে। ফলে সৌদি আরব প্রথমবারের মতো ইসরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারে।" তবে গাজার যুদ্ধ শুরুর পর সেই অবস্থায় যেন বেশ পরিবর্তন এসেছে।
এদিকে ওয়াশিংটন ইন্সটিটিউটের এই জরিপে দেখা যায়, ৯৫ শতাংশ সৌদি নাগরিক বিশ্বাস করে না যে হামাস ইসরায়েলে হামলায় বেসামরিক লোকদের হত্যা করেছে। যদিও ঐ হামলায় নারী ও শিশুসহ প্রায় ১২০০ লোক মারা গেছে বলে তেল আবিবের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। তবে বহু ইসরায়েলি মনে করে এটি ইসরায়েলি প্রোপাগান্ডা হতে পারে।
বরং সৌদি ও আরব বিশ্বের বেশিরভাগ নাগরিকের দৃষ্টি মূলত গাজায় ইসরায়েলের চলমান হামলার দিকে। যার ফলে উপত্যকাটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের তথ্যমতে প্রায় ২০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
জরিপে শতকরা ৮৭ ভাগ সৌদি নাগরিক মনে করেন যে, সম্প্রতি চলমান যুদ্ধে ইসরায়েল যে কতটা দুর্বল ও অভ্যন্তরীণভাবে বিভক্ত সেটা প্রকাশ পেয়েছে। মাত্র ৫ ভাগ নাগরিক মনে করে যে, সৌদিদের বিশ্বের ইহুদি সম্প্রদায়ের প্রতি আরও বেশি সম্মান প্রদর্শন করা উচিত এবং সম্পর্ক উন্নয়ন করা উচিত।
তবে পোলে দেখা যায় যে, বেশিরভাগ সৌদি নাগরিকই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বের সামরিক নয় বরং রাজনৈতিক সমাধান প্রত্যাশা করে। অন্যদিকে তিন-চতুর্থাংশ সৌদি নাগরিক মনে করে যে, দুই পক্ষের মধ্যে শান্তি স্থাপনের জন্য আরব দেশগুলোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালানো উচিত।