ভারতের মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি, চারদিন আগে পদত্যাগ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/13/presidents_rule_imposed_in_manipur.jpg)
ভারতের মণিপুর রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হয়েছে। সরকারি সূত্র ও সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর বরাতে এ তথ্য জানা গেছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন. বীরেন সিং সম্প্রতি পদত্যাগ করায় পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা নিয়ে নানা জল্পনা চলছিল। এর মধ্যেই রাষ্ট্রপতি শাসন জারির খবর এসেছে।
হিন্দুস্তান টাইমসসহ বিভিন্ন ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রায় ২১ মাস ধরে মণিপুরে অস্থিরতা চলছে। সংঘর্ষ, সহিংসতা আর রাজনৈতিক অস্থিরতায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৫০ জন। সহিংসতার শিকার হয়েছেন আরও হাজারও মানুষ। বারবার রাজ্যের পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থতার অভিযোগ উঠছিল তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী এন. বীরেন সিংয়ের বিরুদ্ধে।
এই পরিস্থিতিতে গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাজ্যপালের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগপত্র জমা দেন বীরেন সিং। মণিপুর রাজ্য বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের ঠিক আগে তার এ পদত্যাগ রাজনৈতিক মহলে নানা গুঞ্জন তৈরি করে।
পদত্যাগপত্রে বীরেন সিং লেখেন, 'কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। তারা যথাসময়ে হস্তক্ষেপ করেছে এবং রাজ্যের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা করেছে।' তবে বিরোধীরা দাবি করেছে, সরকারের টিকে থাকার সম্ভাবনা নেই বুঝতে পেরেই বিজেপি নেতৃত্ব তাকে পদত্যাগে বাধ্য করেছে।
বীরেন সিংয়ের পদত্যাগের পর কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, 'প্রায় দুই বছর ধরে বিজেপির নেতৃত্বে থাকা এন. বীরেন সিং রাজ্যে বিভাজনের রাজনীতি উসকে দিয়েছেন। সহিংসতায় বহু মানুষের প্রাণ গেছে, মণিপুরের সামাজিক ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে। এত কিছুর পরও মোদী সরকার তাকে ক্ষমতায় থাকতে দিয়েছিল।'
রাহুল আরও বলেন, 'এন. বীরেন সিং জনতার চাপ, সুপ্রিম কোর্টের তদন্ত এবং কংগ্রেসের অনাস্থার কারণে পদত্যাগ করেছেন। তবে এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো রাজ্যে শান্তি ফেরানো এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানো। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উচিত মণিপুর সফর করা এবং ক্ষতিগ্রস্তদের কথা শোনা। পাশাপাশি, তিনি কীভাবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করবেন, সেই পরিকল্পনাও জানানো প্রয়োজন।'
এমন প্রেক্ষাপটে মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হলো। নতুন মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা নিয়ে এখনো নিশ্চিত কোনো ঘোষণা আসেনি। তবে রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, তা নিয়ে আলোচনা চলছে সর্বত্র।