হামলার শিকার পরিবারের পাশে মাশরাফি, দিলেন নিরাপত্তার আশ্বাস
ধর্মীয় অবমাননামূলক মন্তব্যের অভিযোগে নড়াইলের লোহাগড়া থানার দিঘলিয়া গ্রামে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় এলাকা পরিদর্শন করেছেন ক্রিকেটার ও সংসদ সদস্য (এমপি) মাশরাফি বিন মুর্তজা।
শনিবার (১৬ জুলাই) বিকেল ৫টায় তিনি ওই গ্রামে পরিদর্শনে যান। পরে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের সহায়তা ও নিরাপত্তার আশ্বাস দেন।
এর পর তিনি স্থানীয়দের উদ্দেশ্য বলেন, 'এখানে পুলিশ সব সময় থাকবে। আপনারা সবাই সহোযোগিতা করবেন। নড়াইলে আগে কখনো এই ধরনের ঘটনা ঘটেনি। আপনাদের লজ্জা থাকা উচিত। নড়াইলে এই ধরনের ঘটনা শুরু হয়েছে, আপনারদের মাধ্যমে। এটা কেউ চাই না। একবার ভেবে দেখেন, আপনার পরিবারের কেউকে যদি এভাবে আঘাত করা হয়, আপনার কেমন লাগবে?'
এসময় মাশরাফি বলেন, 'যদি কেউ ভুল করে তবে আইন আছে, থানায় জানালে প্রশাসন সেটার পদক্ষেপ নিবে। আমি বা আপনি কে? আপনাদের পা দুটি ধরি, এই ধরনের ঘটনা আর ঘটাবেন না। আপনাদের কাছে বিনীত অনুরোধ, আপনারা পাশে এসে দাঁড়ায়েন। আপনারা যদি সামাজিক ভাবে পাশে এসে না দাঁড়ান, তাহলে কিন্তু আমরা সমাধান করতে পারব না। এখানে যারা আছেন, তারা একটুকু শিউর থাকেন, আপনারা স্বাভাবিকভাবে বসবাস করছিলেন। সামনেও স্বাভাবিকভাবে বসবাস করতে পারবেন। কোন সমস্যা হবে না।'
এসময়ে মাশরাফির সাথে ছিলেন নড়াইলের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান ও পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায়।
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে একটি ফেসবুকের পোস্টে আকাশ সাহা নামে এক কলেজ ছাত্রের ফেসবুক আইডি থেকে গত বৃহস্পতিবার বিতর্কিত কমেন্ট করার অভিযোগ ওঠে। এর জেরে শুক্রবার বিকেলে হামলা হয় দিঘলিয়া গ্রামের সাহাপাড়ায়।
হামলাকারীরা গোবিন্দ সাহা ও দিলীপ সাহার বাড়ি, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বাবা অশোক সাহার দোকানসহ ১০টির বেশি বাড়ি-দোকান ভাঙচুর করেন। গোবিন্দ সাহার বাড়িতে আগুনও দেয়া হয়। বিক্ষোভকারীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপের পাশাপাশি সাহাপাড়া মন্দিরের প্রতিমা, চেয়ার ও সাউন্ডবক্স ভাঙচুর করে। ফলে ভীতসন্ত্রস্ত হিন্দু পরিবারের অধিকাংশ সদস্য আশপাশের গ্রামে আশ্রয় নিয়েছে।
এ ছাড়া রাতেই ওই ছাত্র আকাশ সাহা ও তার বাবা অশোক সাহাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। বর্তমানে তারা পুলিশ হেফাজতে আছেন।