বিশ্বকাপের কোনো ম্যাচ খেলেননি, তারপরও ইংল্যান্ডের সর্বকালের সেরা কে এই রমণীমোহন বরপুত্র?
বিশ্বকাপের মাঠে একবারও না নেমে ফুটবলের বিশ্বজয় করার এমন অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলেছেন যে ফুটবলার, তার নামই জর্জ বেস্ট। অসাধারণ ফুটবল প্রতিভার সাথে যুক্ত হয়েছে সুদর্শন চেহারা। হয়তো মাইকেল মধুসূদন দত্তের আমলে জন্ম নিলে তিনি মেঘনাদ বধের পঙ্ক্তি বদলে দিতেন। হয়তা লেখা হতো, 'আহা, হরকোপানলে কাম যেন রে না পুড়ি দাঁড়ান এসে ময়দানে ফুটবল খেলিতে।'
বারমুখিতা, আসঙ্গলিপ্সা, পানাসক্তি এবং জুয়া তাকে গ্রাস করেছিল। তারপরও ফুটবলকে যে সময় দিয়েছেন, তাতেই নিজেকে ক্রীড়ার এ জগতের শীর্ষ স্থানে নিয়ে গেছেন অবলীলায়।
উত্তর আয়ারল্যান্ডের শ্রমজীবী বাবা রিচার্ড 'ডিকি' বেস্ট এবং মা অ্যান উইদারসের গরিব ঘরে জন্ম নেন তিনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরপর অর্থাৎ ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দের ২২ মে বেলফাস্টে তার জন্ম। শৈশবে লেখাপড়ায় চৌকস ছিলেন। কিন্তু তখন থেকেই তার মন জুড়ে ছিল ফুটবল। মাত্র ছয় বছর বয়সে বাবা তাকে শেখান যে ফুটবল খেলোয়াড় হতে চাইলে দুর্বল পা দিয়ে বল মারা শিখতে হবে। তাকে দুই পায়ে বলকে খেলানো রপ্ত করতে হবে। বাবার এ শিক্ষা তার গোটা ফুটবল জীবনে পাথেয় হয়ে ছিল। এরই গুণে সেরাদের সেরা হয়ে উঠতে পারেন তিনি।
রোগা-পাতলা অল্পবয়সী বেস্টের ফুটবলার হওয়ার স্বপ্নে শীতল পানি ঢেলে দেওয়ার চেষ্টা করেছে আয়ারল্যান্ডের অনেক ফুটবল ক্লাব। তারা বলেছে, পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড় চাইলে গায়ে-গতরে বড় হতে হয়, তুমি সে তুলনায় নেহাৎ রোগা-পটকা!
বেলফাস্টে কাদাভরা মাঠে কিশোর বেস্টের ফুটবল নৈপুণ্য দেখে বাকহীন বনে যান ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এক কর্তা। ফুটবলের খুদে প্রতিভাদের খুঁজে বের করার দায়িত্বে ছিলেন তিনি। তিনি দেরি না করে ক্লাবকে টেলিগ্রাম করলেন, আই থিংক আই হ্যাভ ফাউন্ড আ জিনিয়াস।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে খেলার আমন্ত্রণ পাওয়ার পর আনন্দে আত্মহারা হয়ে চারপাশ মাতিয়ে তোলেন বেস্ট। ব্রিটিশ এক টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দিনটির কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান, আমি রাস্তা দিয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে সব বন্ধুকে খবরটি দিচ্ছিলাম। তারা ভাবল, এবারে আমি পুরাই পাগল হয়ে গেছি।
কিন্তু এ আনন্দ তেমন টেকসই হয়নি। ইউনাইটেডে তার এই আগমন বরং তার জন্য অ-সুখই বয়ে আনে। ঘরে ফেরার জন্য অল্পবয়সী বেস্টের 'পেট পুড়তে' থাকে। ফিরে আসেন তিনি।
ব্যবস্থাপক হিসেবে কিংবদন্তির নায়ক হয়ে উঠেছেন সেই স্যার ম্যাট বাসবি এবারে বেস্টের রক্ষাকর্তা হলেন। বেস্টকে তিনি নিজ ডানার নিচে আশ্রয় জোগালেন। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ফিরিয়ে আনলেন। পাশাপাশি বেস্টের পেশাগত জীবনের দিকনির্দেশিকাও তৈরি করে দিলেন।
খেলার মাঠে তার গতিশীলতা, বেগ, ভারসাম্য এবং মাঠে সতীর্থদের অবস্থান সম্পর্কে টনটনে জ্ঞান ফুটবলপ্রিয় দর্শককুলের কাছে তাকে তাৎক্ষণিক প্রিয়পাত্র করে তোলে।
ইউনাইটেড ম্যানচেস্টারের পক্ষে তার অভিষেক হয় মাত্র ১৭ বছর বয়সে। এরপর টানা ১১ বছর খেলেছেন এ ক্লাবের পক্ষে। ১৯৬৮ সালে প্রথম ইউরোপিয়ান কাপ (এখনকার চ্যাম্পিয়নস লিগ) জেতা ইউনাইটেড দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ওই মৌসুমে ইউনাইটেডের পক্ষে ৫৩ ম্যাচে অংশ নেন। গোল করেন ৩২টি। বেস্ট স্ট্রাইকার ছিলেন না। তিনি ছিলেন অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। পরের চার মৌসুমে করেন আরও ৯৪ গোল।
পাশ ঘেঁষে বা মধ্যমাঠ দিয়ে অদম্যভাবে বল নিয়ে এগোতে পারতেন। আক্রমণ কোন পথে করবেন, প্রতিপক্ষ তা আগেভাগে আঁচ করতেই পারতেন না। এক প্রতিযোগিতায় তাকে আটকানোর দায়িত্ব বর্তায় রয় ফেয়ারফ্যাক্স নামের এক ডিফেন্ডারের ওপর। এ বাবদ নিজ অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে রয় বলেন, খেলা শেষে যখন আমরা হাত মেলাচ্ছিলাম, তখনই কেবল বেস্টের কাছাকাছি যেতে পেরেছিলাম।
১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে উত্তর আয়ারল্যান্ড বনাম নেদারল্যান্ডের খেলায় দুই তারকা ফুটবলারের একজন বেস্ট। অপরজন নেদারল্যান্ডের ইয়োহান করুয়েফ। খেলার আগে এক সাংবাদিক বেস্টকে বলেন, তুমি কি মনে করো, করুয়েফ তোমার চেয়েও ভালো ফুটবলার? জবাবে বেস্ট বলেন, আমি করুয়েফকে নাটমেগ করব, তা-ও প্রথম সুযোগেই। বেস্ট কথাটা রেখেছিলেন।
নাটমেগ বলতে বোঝায় প্রতিপক্ষের দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে বল বের করে এগিয়ে যাওয়া। একজন ফুটবল খেলোয়াড়ের জন্য এটা মোটেও সম্মানজনক নয়। করুয়েফের মতো তারকা ফুটবলারের সাথে নাটমেগ করা খুব সহজসাধ্য ছিল না। এ কারণে মাঠে তিনি কতটা অপ্রস্তুত হয়েছিলেন এবং তার সাথে এমন খেলা দেখানোর জন্য কী পরিমাণ দক্ষতা দরকার, তা বুঝতে কারও কষ্ট হওয়ার কথা নয়।
ড্রিবলিংকে ফুটবলের অন্যতম শিল্প হিসেবে গণ্য করা হয়। এই ড্রিবলিংয়ে সর্বকালের সেরাদের মধ্যে একজন হলেন বেস্ট।
১১ বছরের খেলোয়াড়ি জীবনে ৪৭০টি খেলায় ১৭৯টি গোল করেন তিনি। এ ছাড়া টানা পাঁচ বছর ইউনাইটেড ম্যানচেস্টারের শীর্ষ গোলদাতার সম্মান ধরে রাখার কৃতিত্ব রয়েছে তার। দুই দফা লিগের খেলায় বিজয় এনে দিয়েছেন। অন্যদিকে ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে ইউরোপীয় কাপ জয় করেন।
এক ম্যাচে ৬ বল গোলের জালে জড়িয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জন্য অনবদ্য নজির স্থাপন করেন। ছয় সপ্তাহের জন্য মাঠ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল তাকে। সে সময় এত দীর্ঘ শাস্তি এর আগে দেওয়া হয়নি। শাস্তির সে সময় পার হওয়ার পর প্রথমেই মাঠে নেমে এমন তাক লাগানো গোল দিলেন তিনি। ছয় গোল দেওয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, কিছুটা ক্লান্ত ছিলাম। আসলে আমার ৭ বা ৮ গোল করা উচিত ছিল।
উত্তর আয়ারল্যান্ডের হয়ে ৩৭ দফা আন্তর্জাতিক ফুটবলে অংশ নিয়েছেন তিনি।
নিজ ক্রীড়া প্রতিভা সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি কিছু একটা নিয়ে জন্মেছি এবং এ জন্য আমাকে বেশি খাটতে হয়নি।
খুব দ্রুতই বেস্ট আন্তর্জাতিক ফুটবল নক্ষত্র বনে যান। টেলিভিশনে খেলা সম্প্রচার করার চল বাড়তে থাকে। এতে লাভ হয় বেস্টের। তার খ্যাতির বিস্তারও ঘটে পাল্লা দিয়েই। 'ম্যাচ অব দ্য ডে' নামের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ফুটবলের প্রধান প্রধান দৃশ্য শনিবার প্রচার করত বিবিসি। এতে বেস্টের নাম ঘরে ঘরে পৌঁছে যায়। শিশু-কিশোরেরা তার মতো হতে চাইত। তাকে অনুকরণ করত।
বেস্টকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ক্রীড়া লেখক প্যাট্রিক বার্কলে বলেন: সক্ষমতার বিচারে তিনি ছিলেন বিশ্বের সর্বকালের সেরা ফুটবলার। বল নিয়ে তিনি প্রায় সবকিছুই করতে পারতেন মাঠে। কেবল বল নয়, নিজ শরীরের ওপর পুরো নিয়ন্ত্রণ ছিল। গতি এবং বল নিয়ন্ত্রণের প্রযুক্তিতে দক্ষতা ছিল। হেড করার সক্ষমতা, পাস দেওয়ার দক্ষতা, ড্রিবলিং-এর চাতুর্যে তিনি যেকোনো খেলোয়াড়কে নাকানিচুবানি খাওয়াতে পারতেন।
জর্জ বেস্টকে পেলে সেরা খেলোয়াড় বলে অভিহিত করেছিলেন। অভিভূত বেস্ট বলেন, এটাই আমার জীবনের সেরা সম্মাননা।
বল নিয়ে যেমন খেলতে পারতেন, একইভাবে শব্দ নিয়েও খেলায় ছিলেন পটু। কথায় শিল্পীও ছিলেন তিনি।
নিজ জীবনযাপন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি দেখতে কুৎসিত হলে কেউ আর পেলের নাম জানত না। (অর্থ, খ্যাতি এবং সর্বোপরি কন্দর্পকান্তি হওয়ার কারণে রমণীরা এসেছে তার কাছে। তিনিও লীলায় লিপ্ত হয়েছেন। সেদিকে ইঙ্গিত করেই এ কথা বলছেন।)
ডেভিড বেকহ্যাম প্রসঙ্গে বেস্ট বলেন, তিনি তো বাঁ পায়ে বলই মারতে পারেন না, হেড করতে জানে না, ট্যাকল করাও তার কাজ নয়। এ ছাড়া বেশি গোলও দিতে পারেনি। এসব ছাড়া তিনি ভালো খেলোয়াড়।
ইন্দ্রিয়-তাড়নায় অর্থ ওড়ানো নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি অকপটে বলেন, ৯০ শতাংশ টাকাকড়িই সুরা, সাকি (রমণী), নারী আর দ্রুতগতির গাড়ির পেছনে খরচ করেছি আর বাকি টাকাটা একেবারেই অপচয় করা হয়েছে।
মার্ক টোয়েন নাকি বলেছেন, ধূমপান ছাড়া যায় না কে কহে? আমি কতবার ধূমপান ছেড়েছি! একই কথার সুর পাওয়া যায় বেস্টের কথায়। তিনি বলেন, ১৯৬৯ সালে মদ-নারী পুরোপুরি ছেড়ে দেই। তবে সেই ২০ মিনিট ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে জঘন্য সময়।
আরেকবার বলেন, আমি মদ ছেড়ে দিয়েছি, তবে যখন ঘুমিয়ে থাকি, কেবল তখন।
ফুটবলার পল গ্যাসকোইন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি একবার বললাম গাজ্জেও (গ্যাসকোইনের) আইকিউ তার জার্সির নম্বরের চেয়েও কম এবং গাজ্জা আমাকে পাল্টা প্রশ্ন করল, আইকিউ জিনিসটা আবার কী?
বেস্টকে সংযমী হওয়ার বার্তা দিয়ে অনেকেই বলেন, মোমবাতির দুই প্রান্তের সলতেতে আগুন দিতে হয় না। বেস্ট বলেন, হয়তো তাদের মোমবাতি আকারে-প্রকারে তেমন বড়সড় নয়।
নারী সঙ্গ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি অনেক কিছুই মিস করি, এই যেমন মিস কানাডা, মিস ইউনাইটেড কিংডম, মিস ওয়ার্ল্ড।
একই প্রসঙ্গে আরেকবার বলেন, বলা হয় আমি নাকি সাত সাতজন মিস ওয়ার্ল্ডকে শয্যায় নিয়েছি। না। না। তা আমি করিনি। মাত্র চারজনের শয্যাসঙ্গী হয়েছি। বাকি তিনজনের বেলায় উপস্থিতই হতে পারিনি।
নিজ স্মৃতির তেমন শক্তি নেই বলেই দাবি করে খোলাখুলিই বলেন, আমাকে জিজ্ঞাসা করে কোনো লাভ নেই। গতরাতেই কী ঘটেছে, তা-ই মনে করতে পারি না।
১৯৭৪ থেকে প্রশিক্ষণে গরহাজির হতে শুরু করেন বেস্ট। তখন তিনি ২৭ বছরের টগবগে তরুণ। নতুন ব্যবস্থাপক টমি ডচার্টির সাথে টানাপোড়েনকে কেন্দ্র করে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছাড়েন। অবশেষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। কয়েকটি আমেরিকান ক্লাবে খেলেন। ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দে মডেলকন্যা অ্যাঞ্জি ম্যাকডোনাল্ড-জেনসকে বিয়ে করেন।
প্রথম প্রথম মনে হলো, সরল রাস্তায় চলে এসেছেন তিনি। কিন্তু একটা পানশালা কেনার পর মাত্রাছাড়া মদ্যপান শুরু করেন। ১৯৮২-এ তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এ দুই বছর পর মাত্র ৩৭ বছর বয়সে খেলা থেকে অবসর নেন জর্জ বেস্ট। এবারে মদ পেয়ে বসে তাকে। মাতাল অবস্থায় তার নানা কর্মকাণ্ড এ সময়ে খবরের শিরোনামও হতে থাকে প্রায় নিয়মিতই।
মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো, পুলিশ কর্মকর্তার ওপর হামলা করা এবং জামিনের মেয়াদ শেষে হাজির হতে না পারার দায়ে ১৯৮৪-এ তিন মাসের কারাবাস হয় তার।
১৯৯৫ সালে ২৩ বছর বয়সী বিমানবালা অ্যালেক্স পার্সিকে বিয়ে করেন তিনি। বেস্ট নিয়ে নির্মিত ছায়াছবিতে অ্যালেক্স বলেন, শেষের দিকে লোকটা মদ খাওয়া বন্ধ করতে পারেনি বা চায়নি। নেশাহীন জর্জ হলেন কামনা করা হয় এমন অসাধারণ স্বামী। কিন্তু মদ খাওয়া শুরু করলেই আরেকটি ভিন্ন মানুষ বনে যেত। পেটে মদ পড়লেই জর্জ হিংস্র হয়ে উঠত। মারধরের চোটে অ্যালেক্সকে কয়েকবার হাসপাতালে যেতে হয়েছে বলেও জানান। ২০০২ সালে যকৃত বা লিভার প্রতিস্থাপনের পরও মদপর্ব সমানেই চলতে থাকে। ২০০৫ সালে ৫৯ বছর বয়সে ইহলোক ত্যাগ করেন বেস্ট।
বেস্ট একবার নিজের সম্পর্কে বলেন, আমার জীবনের নোংরা ঘটনাগুলো লোকজন ভুলে যাবে, যখন আমি থাকব না। কেবল একজনও যদি মনে করেন, আমি বিশ্বের সেরা ফুটবল খেলোয়াড় ছিলাম, তাহলে সেটাই আমার জন্য যথেষ্ট।
সত্য বলেই প্রমাণিত হয়েছে কথাটা। বেস্টকে আজকের দিনে স্মরণ করা হয় ফুটবলে অনবদ্য দক্ষতার জন্য। তাকে সেরাদের মধ্যে অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হিসেবে মেনে নিয়েছে দুনিয়া।
ফুটবলে আগ্রহ আছে, ফুটবলের কালজয়ী তারকাদের সম্পর্কে জানেন, এমন অনেককেই দ্বিধাহীন কণ্ঠে বলতে শুনবেন, 'ম্যারোডোনা গুড, পেলে বেটার, জর্জ বেস্ট।'