ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের জন্য মন্ত্রিসভায় কঠোর আইন অনুমোদন: ভ্রমণ ও রাজনৈতিক পদে নিষেধাজ্ঞা
ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের বিদেশ যাওয়া, বাড়ি-গাড়ি ও কোম্পানি নিবন্ধনে নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ তাদের রাজনৈতিক দলের কমিটিতে না রাখার বিধান রেখে ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধন) আইন, ২০২৩ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এক পরিবার থেকে তিন জনের বেশি ব্যাংক পরিচালক হওয়া যাবে না বলেও বিধান রয়েছে এতে।
সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, অনুমোদিত খসড়া আইনে কোন ব্যাংক চাইলে ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপির বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলাও দায়ের করতে পারবে। খসড়া আইনে জামানত ছাড়া পরিচালকদের ঋণ দেওয়াও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
২০১৯ সালে বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এই আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়ে পরের বছরের মধ্যে খসড়া তৈরি করা হলেও, তা চূড়ান্ত করতে খুবই ধীরগতিতে কাজ চলছিল।
গত ফেব্রুয়ারিতে ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরের সময় আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই খসড়া আইনটিকে পার্লামেন্টে বিল আকারে উত্থাপনে আইএমএফ শর্ত দেওয়ার পর মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা খসড়াটির চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে।
আইনি অস্পষ্টতার জায়গাগুলো দূর করতে এবং মন্দ ঋণের লাগাম টেনে ধরার জন্য অতি-জরুরি এই সংশোধনীগুলো বছরের পর বছর ধরে প্রক্রিয়াধীন ছিল। অংশীজনের মতামত নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০২০ সালেই খসড়া তৈরি করে। এতে ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১' এর বেশ কয়েকটি বিধানের পরিবর্তন এবং কিছু নতুন বিধান অন্তর্ভুক্ত করার প্রচেষ্টা রয়েছে।
৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ পেতে আইএমএফের কাছে আর্থিক খাত সংস্কারের নতুন অঙ্গীকার করে বাংলাদেশ। সেই প্রতিশ্রুতি অনুসরণেই মন্ত্রিসভা খসড়াটির অনুমোদন দিয়েছে। এই অনুমোদনকে ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থান হিসাবে দেখা হচ্ছে।
আগামী ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রত্যাশা রয়েছে; তার আগে কার্যকর হলে ঋণ খেলাপিদের রাজনৈতিক দলের পদে থাকতে বাধা তৈরি হবে। অবশ্য বিদ্যমান আইনেও ঋণখেলাপিদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিধিনিষেধ আছে।
ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদেরা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও বলেছেন, শুধু কাগজেকলমেই বিধান কঠোর করলে হবে না, ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে তার প্রয়োগও নিশ্চিত করতে হবে।
তারা উল্লেখ করেন যে, ২০১৩ সালেও খেলাপি ঋণ এবং ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের জন্য কঠোর বিধান রেখে ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করা হয়; কিন্তু এরপর বিভিন্ন সময়ে এই বিধানগুলি শিথিল করা হয়, যা ব্যাংকের আর্থিক স্বাস্থ্যকে ক্রমে অবনতির দিকে নিয়ে যায়।
'শাস্তিগুলো কার্যকর করতে হবে'
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ টিবিএসকে বলেন, "এটা অনেকটা ফরমায়েশি ব্যাপার মনে হচ্ছে। কেউ চাচ্ছে, তাই সঙ্গেসঙ্গে একটি আইন তৈরি করে ফেললাম। আরেকটু বিস্তারিত ও ব্যাখ্যামুলক ব্যাংক কোম্পানি আইনের দরকার ছিল।"
তিনি বলেন, শুধু আইন প্রণয়ন করলেই হবে না। আইন লঙ্ঘনের কারণে যে শাস্তির বিধান রয়েছে, সেগুলোও কার্যকর করতে হবে।
বিদ্যমান ব্যাংক কোম্পানি আইনে ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের বিষয়ে কিছু বলা নেই। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর আবুল মাল আবদুল মুহিত অর্থমন্ত্রী থাকাকালে ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ অনেক বেশি বেড়ে যায়।
ওই সময় দেখা যায়, অনেক বড় বড় শিল্প গ্রুপ নতুন নতুন বিনিয়োগ করলেও ব্যাংক ঋণ পরিশোধ না করে খেলাপি হয়ে থাকছে এবং উচ্চ আদালত থেকে ঋণ খেলাপি করার বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ নিয়ে নতুন ঋণ নিচ্ছে। তখন থেকেই 'ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি' শব্দটির ব্যবহার বাড়তে থাকে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাসহ ব্যাংক কমিশন গঠনের দাবি ওঠে।
এমন প্রেক্ষাপটে, ২০১৯ সালে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পরই আ হ ম মুস্তফা কামাল ঘোষণা দেন যে, 'খেলাপি ঋণ এক টাকাও বাড়বে না'। এরপরই ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়ে খসড়ায় ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি সম্পর্কিত বিশেষ বিধান যুক্ত করে অর্থমন্ত্রণালয়।
ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি কারা?
কেউ নিজের বা স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ঋণ নেওয়ার পর সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও ঋণের অংশ বা অর্জিত সুদ পরিশোধ না করলে তিনি ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হবেন।
এছাড়া, জাল-জালিয়াতি, প্রতারণা ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে অস্ত্বিত্বহীন প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির নামে ঋণ গ্রহণ, এক উদ্দেশ্যে ঋণ নিয়ে অন্য উদ্দেশ্যে ব্যবহার বা ঋণের অর্থ স্থানান্তরকারীও ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হবেন।
ঋণের শর্ত হিসেবে আইএমএফ আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন-ও সংসদে বিল আকারে উপস্থাপন করতে বলেছে।
এছাড়া দেউলিয়াত্ত (সংশোধন) আইন এবং অর্থঋণ আদালত (সংশোধন) আইন আগামী অর্থবছরে এবং দ্য নেগোসিয়েটেবল ইনস্ট্রুমেন্ট (সংশোধন) আইন পরের অর্থবছরে পার্লামেন্টে বিল আকারে উপস্থাপনের শর্তারোপ করেছে সংস্থাটি। সব ক'টি আইনের খসড়া ইতোমধ্যে তৈরি করে ওয়েবসাইটে মতামতের জন্য প্রকাশ করেছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ।
আইএমএফ বলেছে, এসব সংস্কার আর্থিক খাতের আধুনিকায়নে সহায়তা করবে। ঋণ ও ব্যবসায়িক পরিবেশকে উন্নত করে আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে এবং ঋণ আদায়ের সহায়ক হবে।
সংস্থাটি আরো বলেছে, শক্তিশালী শাসন ও নিয়ন্ত্রক কাঠামো আর্থিক খাতকে শক্তিশালী করবে এবং মধ্যমেয়াদী প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে সহায়তা করবে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর (এসওসিবি) পরিচালকদের মনোনীত এবং নিয়োগের জন্য বিদ্যমান নীতিমালা একটি স্বাধীন কমিটি দ্বারা পরীক্ষা করা হচ্ছে, যা এসব ব্যাংকের কর্পোরেট সুশাসনকে শক্তিশালী করার জন্য নীতি সুপারিশ করবে।
"ব্যাংক ব্যালান্স বা স্থিতিপত্রের দুর্বলতা হ্রাস করতে, বিশেষত রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য – আমরা সুনির্দিষ্ট ব্যাংক-ভিত্তিক পৃথক সমাধানের চেষ্টা করব। ২০২৬ সাল নাগাদ এসওসিবিগুলোর এনপিএল বা মন্দ ঋণের অনুপাত ১০ শতাংশের নিচে এবং বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর (পিসিবি) জন্য তা ৫ শতাংশের নিচে নামাতে আমরা একটি কার্যকর সমঝোতা স্মারক তৈরি করছি"- আইএমএফ জানিয়েছে।
"এসব সমঝোতা স্মারকে ২০২৬ সালের মধ্যে মূলধন পর্যাপ্ততা অনুপাত এবং প্রভিশনিং কভারেজ এসওসিবি-গুলোর ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ ও ১০০ শতাংশ এবং পিসিবি-গুলোর জন্য ১০ শতাংশ এবং ১০০ শতাংশ বাড়ানোর লক্ষ্য থাকবে।"
মাহমুদুল হাসান খান বলেন, ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের তালিকা সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সরবরাহ করবে। "বাংলাদেশ ব্যাংক ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারবে। এছাড়া ট্রেড লাইসেন্স ইস্যুতে নিষেধাজ্ঞা এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও যৌথ মূলধনী কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর (আরজেএসসি) কাছে কোম্পানি নিবন্ধনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারবে।"
"ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি হিসেবে তালিকাভুক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তালিকা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর পাঁচ বছরের মধ্যে কোনো ব্যাংক কোম্পানি বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হতে পারবেন না" জানিয়ে তিনি বলেন, "কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণ খেলাপি হিসেবে পরিগণিত হলে বাংলাদেশ ব্যাংক তার পরিচালক পদ শূন্য ঘোষণা করতে পারবে।"
মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত খসড়া আইনে বলা হয়েছে, ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা সনাক্ত করা ও চূড়ান্ত করার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো দু'টি পৃথক কমিটি গঠন করবে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সময়ে সময়ে ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপির তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠাবে।
তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান চাইলে ৩০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে আপিল করতে পারবে এবং এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
"বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারের বিভিন্ন সংস্থার কাছে ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের তালিকা পাঠাতে পারবে এবং তাদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা, গাড়ি ও বাড়ি রেজিস্ট্রেশনে নিষেধাজ্ঞা, ট্রেড লাইসেন্স ইস্যুতে নিষেধাজ্ঞা, আরজেএসসি এর নিকট কোম্পানি নিবন্ধনে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে"- খসড়া আইনে বলা হয়েছে।
এছাড়া, ইচ্ছাকৃত খেলাপিরা রাষ্ট্রীয়ভাবে কোন সম্মাননা পাবার বা রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের যোগ্য বলে বিবেচিত হবে না এবং কোন পেশাজীবী, ব্যবসায়িক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক বা রাজনৈতিক সংগঠনের কোন কমিটিতে থাকতে পারবে না বলে উল্লেখ রয়েছে এতে।
মাহমুদুল হাসান খান বলেন, ব্যাংক নোটিশ পাওয়ার দুই মাসের মধ্যে ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিরা পুরো পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হলে অর্থঋণ আদালতে মামলা করা যাবে।
তিনি আরও বলেন, কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান যদি ঋণ খেলাপির তালিকা না পাঠায়, সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা জরিমানা করতে পারবে। তারপরও যদি লঙ্ঘন অব্যাহত থাকে তাহলে প্রতিদিনের জন্য এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা যাবে।
ব্যাংক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে লেনদেন, ব্যাংক কোম্পানির পরিচালক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ঋণ প্রদান ও জামানত গ্রহণ- এসব বিষয় নতুন করে খসড়ায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য বা তার আত্মীয় যেই হোক না কেন তাকে অবশ্যই জামানত বা বন্ড বা সিকিউরিটি দিয়ে ঋণ নিতে হবে।
"ব্যাংক কোনো পরিচালক বা পরিচালকের পরিবারের সদস্যকে জামানতি ঋণ বা অগ্রিম ছাড়া অন্য কোনো ঋণ বা অগ্রিম মঞ্জুর করবে না। পরিচালক বা পরিচালকের সদস্য কর্তৃক দায় গ্রহণের ভিত্তিতে জামনতি ঋণ, অগ্রিমঋণ, বা অন্য কোনো আর্থিক সুবিধা দেবে না। এখন এটা নির্দিষ্ট করা হয়েছে যে- সে যেই হোক না কেন প্রত্যেকের ক্ষেত্রে কোলেটারেল থাকতে হবে। এটা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে সবার ক্ষেত্রে'- যোগ করেন মাহমুদুল হাসান।
তিনি বলেন, ব্যাংক কোম্পানির অর্থায়নে পরিচালিত প্রতিষ্ঠান বা ফাউন্ডেশন যেন বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়মিত পরিদর্শন করতে পারে সেই ধারা এখানে সংযোজন করা হয়েছে।
অন্যান্য দেশ কীভাবে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের শাস্তি দেয়?
ভারতে যেসব ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণের মেয়াদ বাড়িয়েছে তাদের মাধ্যমে ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের নাম একটি সরকারি ডেটাবেজে প্রকাশ করা হয়। ফলে খেলাপিদের ক্রেডিট স্কোর বা ভবিষ্যতে ঋণ পাওয়ার সক্ষমতায় গুরুতর প্রভাব পড়তে পারে। কিছু ক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগসহ আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া যায়।
যুক্তরাষ্ট্রে ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে তাদের পাওনাদার বা ঋণদাতারা মামলা করতে পারে। মামলায় খেলাপি বলে প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে একটি রায় দেওয়া যেতে পারে। যার আওতায়- তাদের আয়, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা বা ঋণ সংগ্রহের অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে।
সাধারণ নাগরিকরা যেসব সামাজিক সুবিধা সহজেই ভোগ করে, ঋণ খেলাপিদের ক্ষেত্রে সেগুলোর ওপর বিভিন্ন বিধিনিষেধ দিয়ে শাস্তি দেয় চীন।
যেমন তারা বিমান, উচ্চগতির ট্রেনের টিকেট কিনতে পারে না। আবার বাণিজ্যিক সংস্থার নির্বাহী বা প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করতেও পারে না। এই কালো তালিকায় চীনের অনেক রাজনৈতিক সংস্থা, আইনসভা এবং সরকারি কর্মীও রয়েছে। এই শাস্তিতে কোন ব্যতিক্রম করা হয়নি। এমনকি তারা কোনো আবাসিক সম্পত্তিও কিনতে পারে না।
মালয়েশিয়াও ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। মালয়েশিয়ায় খেলাপিদের দেশ ছাড়ার অনুমতি নেই।