ড. ইউনূসের আবেদন খারিজ, এনবিআরের পাওনা ১২ কোটি টাকা কর দিতেই হবে
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পাওনা বাবদ ১২ কোটি টাকা দানকর পরিশোধ করতে হবে বলে রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
এনবিআরের আরোপিত দানকর বৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে (লিভ টু আপিল) ড. ইউনূসের আবেদন আজ রোববার (২৩ জুলাই) খারিজ করে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন ৪ সদস্যের আপিল বেঞ্চ।
ফলে এনবিআর আরোপিত ১২ কোটি ২৮ লাখ ৭৪ হাজার টাকা দানকর দিতেই হবে তাকে।
উল্লেখ্য, ড. ইউনূসকে ২০১১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ফাঁকি দেওয়া কর বাবদ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে যে ১২ কোটি টাকারও বেশি পরিশোধের রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট, তা স্থগিত চেয়ে চেম্বার আদালতে গত ২২ জুন আবেদন করেন ড. ইউনূসের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান।
এর আগে গত ৩১ মে, বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ড. ইউনূসকে বকেয়া কর পরিশোধের রায় দিয়েছিলেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ১৯৯০ সালের দানকর আইন অনুযায়ী ২০১১-২০১২ করবর্ষে মোট ৬১ কোটি ৫৭ লাখ ৬৯ হাজার টাকা দানের বিপরীতে প্রায় ১২ কোটি ২৮ লাখ ৭৪ হাজার টাকা কর দাবি করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নোটিশ পাঠায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। একইভাবে, ২০১২-২০১৩ করবর্ষে ৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা দানের বিপরীতে প্রায় এক কোটি ৬০ লাখ টাকা দানকর দাবি করে আরেকটি নোটিশ দেয় প্রতিষ্ঠানটি।
এছাড়া, ২০১৩-২০১৪ করবর্ষে ৭ কোটি ৬৫ হাজার টাকা দানের বিপরীতে প্রায় এক কোটি ৫০ লাখ টাকা কর দাবি করে নোটিশ দেওয়া হয়। দানের বিপরীতে কর দাবি করে এনবিআরের ওইসব নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেন ড. ইউনূস। তার দাবি, আইন অনুযায়ী দানের বিপরীতে এনবিআর এই কর দাবি করতে পারে না।
তার এই মামলার শুনানি নিয়ে ২০১৪ সালে খারিজ করে রায় দেন কর আপিল ট্রাইব্যুনাল। এরপর হাইকোর্টে তিনি পৃথক তিনটি আয়কর রেফারেন্স মামলা করেন।
হাইকোর্ট তার মামলার প্রাথমিক শুনানি নিয়ে দানকর দাবির নোটিশের কার্যকারিতা স্থগিত করে ২০১৫ সালে রুল জারি করেন।
সেই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ৩১ মে বকেয়া কর পরিশোধের রায় ঘোষণা করেন আদালত।