রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধিতে সৌদি আরব সফরে যাচ্ছেন শীর্ষ ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধি দল
রপ্তানি বাণিজ্যের সুযোগ বৃদ্ধিতে সৌদি আরব সফরে যাবেন বাংলাদেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধি দল। একইসাথে সফরে প্রতিনিধি দলটি দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়নেও কাজ করবেন।
গত মার্চ মাসে সৌদির বাণিজ্য মন্ত্রী ড. মাজেদ বিন আব্দুল্লাহ আল-কাসাবির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে এসেছিলেন। ঐ সফরে সৌদির বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এবং দ্য ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বারস অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির কর্মকর্তাদের সৌদি সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।
আল-কাসাবির সফরে বাংলাদেশের সাথে বেশ কয়েকটি চুক্তিও স্বাক্ষর হয়েছিল। এই চুক্তিগুলোর মাধ্যমে সৌদি আরব বাংলাদেশের জ্বালানী, সমুদ্রবন্দর ও কৃষি শিল্পের সাথে যুক্ত হবে। একইসাথে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়াতে দুই দেশের চেম্বারস অফ কমার্স একটি যৌথ কাউন্সিল গঠন করেছিল।
মূলত ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট সামির সাত্তারের নেতৃত্বে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধি দলটি সৌদি আরব সফরে যাবেন। এ বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার সামির সাত্তার আরব নিউজকে বলেন, "আমরা সৌদি আরবে সফরের জন্য বর্তমানে একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল তৈরির পরিকল্পনা করছি এবং সেই সংক্রান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছি। ব্যবসায়িক নানা ক্ষেত্র থেকে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ জন প্রতিনিধি এই দলে থাকবেন।"
সামির সাত্তার আরও বলেন, "আমি মনে করি, আমাদের জন্য ব্যবসার ক্ষেত্রে সৌদি আরব একটি বড় বাজার। সাধারণত আমরা রপ্তানির ক্ষেত্রে ইউরোপ কিংবা আমেরিকার দিকেই বেশি জোর দেই। কিন্তু আমরা এলডিসি থেকে উত্তরণ করতে যাচ্ছি। তাই বর্তমানে অন্য অঞ্চলগুলোর দিকেও জোর প্রদানের সময় এসেছে।"
২০২১ সালে নভেম্বরে জাতিসংঘের ঘোষণা অনুযায়ী, অর্থনৈতিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে ২০২৬ সালের মধ্যেই বাংলাদেশে এলডিসিভুক্ত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণ ঘটাবে। এতে করে এতদিন উন্নত দেশগুলোতে বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে পেয়ে আসা অনেক সুযোগ বাংলাদেশ আর লাভ করবে না।
এ বিষয়ে সামির সাত্তার বলেন, "আমাদের রপ্তানির বাজারে বৈচিত্র্য আনতে হবে। এক্ষেত্রে আমাদের শুধু একটি কিংবা দুটি অঞ্চলে মনোযোগ দিলেই চলবে না।"
সামির সাত্তার জানান, সৌদিতে যে ব্যবসায়িক প্রতিনিধি দলটি যাবে, সেখানে বিভিন্ন সেক্টরের ব্যবসায়ীদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এতে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বড় এন্টারপ্রাইজের ব্যবসায়ীদেরও যুক্ত করা হবে। এছাড়াও ইফাদ গ্রুপ কিংবা ইউনাইটেড গ্রুপের মতো বড় দুই কংগ্লোমারেটকেও প্রতিনিধিদেরও দলে যুক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
সামির সাত্তার আরও বলেন, "বড় প্রতিনিধি দলটি নিয়ে আমরা মক্কা, মদিনা ও রিয়াদে যেতে চাই। সৌদি রাষ্ট্রদূত নিজে এবং দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তারাও আমাদের এ সফর নিয়ে বেশ উচ্ছ্বাসিত।"
বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈশা ইউসেফ ঈশা আল-দুহাইলান আরব নিউজ নিউজকে জানান, বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলটি আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সৌদি আরব সফর করবেন।
সৌদির রাষ্ট্রদূত ঈশা আল-দুহাইলান বলেন, "আমি বাংলদেশের ব্যবসায়ী ও কোম্পানিগুলোকে সৌদি আরব সফরে এসে ব্যবসার সুযোগ লুফে নেওয়ার কথা বলেছি। আমাদের ভিশন ২০৩০ অনুযায়ী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সৌদি আরবের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছি।"
সৌদি রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, "সৌদি আরবে ব্যবসার অনেক বড় সুযোগ রয়েছে। এখেন যেকোনো ব্যবসায়িক ক্ষেত্রের কথা শুধু ভাবুন, দেখবেন আপনি সেখানেই বিনিয়োগ করতে পারবেন।"