ইবনে সিনায় সিজারের পর মায়ের মৃত্যু, অবহেলার অভিযোগ পরিবারের
ঢাকার কল্যাণপুরের ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সিজারের (সি-সেকশন) পর ২৬ বছর বয়সী এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
পরিবারের অভিযোগ, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও চিকিৎসকদের অবহেলার কারণেই মৃত্যু হয়েছে তার।
বুধাবার (২০ মার্চ) নিহত পলি সাহার স্বামী আসিফ রায় দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "আমার স্ত্রীর সি-সেকশনের পরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়া সত্ত্বেও, তাকে শেষ মুহূর্তে আইসিইউতে নেওয়া হয়। ডাক্তারদের অবহেলার কারণে আমার স্ত্রী মারা গেছে।"
তিনি বলেন, পলিকে সোমবার (১৮ মার্চ) বিকেলে সি-সেকশনের জন্য ইবনে সিনায় ভর্তি করা হয়।
"দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে অপারেশন করা হয়। তারপর বিকেল ৫টায় তাকে পোস্ট-অপারেটিভ রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন ডাক্তাররা বলেছিলেন যে পলি ভালো আছে," যোগ করেন আসিফ।
তিনি জানান, পলি গর্ভাবস্থায় ইবনে সিনা হাসপাতালের প্রাইভেট প্র্যাকটিস ডাক্তার শারমিন মাহমুদের তত্ত্বাবধানে ছিলেন।
"সি-সেকশনের পর আমার স্ত্রীর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। যখন তাকে পোস্ট-অপারেটিভ রুমে নিয়ে যাওয়া হয় তখন সে বুকে ব্যথার কথা বলে। রাত ১০টায় পলি নার্সদের জানায় যে, তার রক্তরক্ষণ হচ্ছে; কিন্তু ডাক্তাররা তাকে আশ্বস্ত করে, সে ভালো আছে।"
"ভোর ৪টায় ডাক্তার বলেন, পলির ব্লাডপ্রেশার কমে গেছে এবং তাকে আইসিইউতে নিতে হবে। সেখানে নেওয়ার মিনিট দশেক পরেই ডাক্তার বলেন, কেন রক্তপাত বন্ধ হচ্ছে না তা দেখার জন্য আরও একটি অপারেশন লাগবে; জরায়ু ফেলে দিতে হতে পারে।"
"দ্বিতীয় অপারেশনের পর সকাল ১০টায় তাকে আবার আইসিইউতে নেওয়া হয়। কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বিকেল ৪টায় পলিকে মৃত ঘোষণা করে," বলেন পলির স্বামী।
চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ জানিয়ে আসিফ রায় বলেন, "পলির দুটি অস্ত্রোপচারেই প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। চিকিৎসকরা এটা বন্ধে পদক্ষেপ নেয়নি। তার বুকে ব্যথা ছিল, ব্লাড প্রেশার কমে যাচ্ছিল, এগুলোর জন্যও স্টেপ নেয়নি চিকিৎসকরা। প্রত্যেক জায়গায় গাফিলতি ছিল, তারা কেয়ার করেনি।"
পলির স্বজনদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র এজিএম (অ্যাডমিন ইনচার্জ) মুহাম্মদ নুরে আলম সবুজ টিবিএসকে বলেন, ঘটনাটি জানার পর তারা রোগীর স্বজন ও চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, "প্রাথমিকভাবে আমরা মনে করছি, চিকিৎসায় কোনো গাফিলতি ছিল না। তবে, চিকিৎসায় সম্ভাব্য ত্রুটির বিষয়ে তদন্ত করতে হাসপাতাল চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটি ৭ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবে।"
এ ঘটনায় প্রথমে পলির পরিবার পুলিশে অভিযোগের কথা ভাবলেও পরে তারা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দায়ের কথা জানায়।