রেমিট্যান্সের ডলার সংগ্রহে ছোট এক্সচেঞ্জ হাউসের জন্য শর্ত শিথিল করলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক
রেমিট্যান্সের ডলার সংগ্রহে বড় এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর (এগ্রিগেটর) দৌরাত্ব কমাতে ছোট এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর জন্য সিকিউরিটি ডিপোজিট ও ন্যূনতম ব্যালেন্সের শর্ত বাতিল করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে এখন থেকে ছোট এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো সরাসরি যেকোনো ব্যাংকের কাছে রেমিট্যান্সের ডলার বিক্রি করতে পারবে।
এর আগে, যেকোনো ব্যাংকের কাছে রেমিট্যান্স বিক্রি করার ক্ষেত্রে ছোট এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোকে ১০,০০০ ডলার সিকিউরিটি ডিপোজিট এবং নন-রেসিডেন্ট ফরেন কারেন্সি (এনআরএফসি) অ্যাকাউন্টে ন্যূন্যতম ব্যালেন্স রাখতে হতো।
গতকাল রোববার (১৯ জানুয়ারি) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ পিলিসি বিভাগ এ সংক্রান্ত এক সার্কুলার জারি করেছে। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এ নির্দেশনা কার্যকর হবে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, 'প্রি-ফান্ড' পদ্ধতিতে সিকিউরিটি ডিপোজিট এবং ন্যূনতম ব্যালেন্সের শর্ত প্রত্যাহার করা হলো। ব্যাংকগুলোকে তাদের বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করার নির্দেশ দেওয়া হলো, যাদের সঙ্গে এই পদ্ধতিতে লেনদেনের চুক্তি রয়েছে, যাতে করে এনআরএফসি অ্যাকাউন্টে রক্ষিত সিকিউরিটি ডিপোজিট রেমিট্যান্স প্রদানের মাধ্যমে সমন্বয় করা যায়।
বিষয়টি ব্যাখ্যা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, "ব্যাংকগুলো এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে সাধারণত দুই প্রক্রিয়ায় রেমিট্যান্স সংগ্রহ করে। প্রথমটি 'প্রি-ফান্ড', যে অ্যারেঞ্জমেন্ট অনুযায়ী এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর কাছে থেকে রেমিট্যান্সের ডলার পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ব্যাংক এর বিপরীতে টাকা পরিশোধ করে।"
তিনি বলেন, "মূলত ছোট এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো এ প্রক্রিয়ায় ডলার বিক্রি করে। এই হাউসগুলোকে আগে কোনো ব্যাংকের সঙ্গে ট্রান্সেকশন করতে হলে ওই ব্যাংকে ১০,০০০ ডলার সিকিউরিটি ডিপোজিট রাখতে হতো। অর্থাৎ, কোনো ছোট এক্সচেঞ্জ হাউসকে ১০টি ব্যাংকের কাছে রেমিট্যান্সের ডলার বিক্রি করতে হলে ১ লাখ ডলার সিকিউরিটি ডিপোজিট রাখতে হতো, যেটি অনেক হাউসের পক্ষেই সম্ভব ছিল না।"
"ফলে এসব হাউস এগ্রিগেটর এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোর কাছে রেমিট্যান্সের ডলার বিক্রি করে দিতো এবং এগ্রিগেটররা মার্কেটের অধিকাংশ ডলার নিজেদের অধিগ্রহণে নিয়ে দাম বাড়ানোর সুযোগ পেতো। এসব কারণে রেমিট্যান্সের ডলার বাজারে অস্থিরতা বাড়তো। নতুন নিয়ম কার্যকর হলে এগ্রিগেটরদের দৌরাত্ব কিছুটা হলেও কমবে," যোগ করেন তিনি।
নতুন সার্কুলারে এগ্রিগেটর এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোর নন-রেসিডেন্ট টাকা (এনআরটি) অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ব্যালেন্সের শর্তও কমানো হয়েছে। এগ্রিগেটর এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো সাধারণত 'পোস্ট-ফান্ড' প্রক্রিয়ায় রেমিট্যান্সের ডলার বিক্রি করে, এরেঞ্জমেন্ট অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট ব্যাংক টাকা পরিশোধ করার পর এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর কাছে থেকে রেমিট্যান্সের ডলার পায়।
সেখানে বলা হয়েছে, 'পোস্ট-ফান্ড' পদ্ধতিতে বড় এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো রেমিট্যান্স ডলার বিক্রি করে। এই পদ্ধতিতে নন-রেসিডেন্ট টাকা অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ব্যালেন্সের পরিমাণ ২৫,০০০ ডলারের সমপরিমাণ টাকার পরিবর্তে ২০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই পদ্ধতিতে এনআরএফসি অ্যাকাউন্টে সিকিউরিটি ডিপোজিটের শর্ত অপরিবর্তিত থাকবে।