বড় মঞ্চে প্রমাণের অপেক্ষায় বিশ্বজয়ীরা
বিশ্বজয়ী যুব ক্রিকেটারদের চোখে চোখেই রাখছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তরুণ এসব ক্রিকেটারকে কাঠামোর মধ্যে রাখতে অনূর্ধ্ব-২১ দল গঠনের ঘোষণা আগেই দিয়েছে বিসিবি। করোনাভাইরাসের কারণে কার্যক্রম শুরু না হলেও যুব দলের ক্রিকেটারদের প্রতি মাসে ১ লাখ টাকা করে ভাতা দিয়ে আসছে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থাটি।
পাশাপাশি বিভিন্ন টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে তরুণ এই ক্রিকেটারদের। গত মাসে অনুষ্ঠিত বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপে খেলেছেন বিশ্বজয়ী যুব দলের ৯ জন ক্রিকেটার। আসন্ন বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপেও দল পেয়েছেন ৯ জন ক্রিকেটার। বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আসন্ন টি-টোয়েন্টি লিগে নিজেদের প্রমাণ করতে চান তারা। নিজেদের লক্ষ্য নিয়ে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সঙ্গে কথা বলেছেন দল পাওয়া বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার।
মাহমুদুল হাসান জয় (ডানহাতি ব্যাটসম্যান):
বড় একটা টুর্নামেন্ট হতে যাচ্ছে। এটা আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। একটা টুর্নামেন্ট খেলেছি, ওখানে তিনটি দল ছিল। এখানে পাঁচটি দল, খেলোয়াড় বেশি, প্রতিযোগিতা বেশি হবে। এখান থেকে আরও অনেক কিছু শিখতে পারব। কারণ এখানে অনেক সিনিয়র ভাইকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ হবে। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় একটা সুযোগ। এখানে ভালো করতে পারলে ভবিষ্যতে আরও ভালো সুযোগ থাকবে হয়তো আমাদের জন্য।
এই টুর্নামেন্টে ৮০ জন ক্রিকেটার সুযোগ পেয়েছেন। সিনিয়র অনেকেই হয়তো দল পাননি। সেখানে আমাদের মতো তরুণ ক্রিকেটারদের ওপর আস্থা রেখেছেন। এই আস্থার দাম দিতে পারলে ভবিষ্যতে আমাদের জন্য ভালো হবে। নিজে চাপ নিয়ে নিলে খেলায় প্রভাব পড়তে পারে। স্বাভাবিক খেলার চেষ্টা থাকবে, তাহলেই হয়তো ভালো হবে। টুর্নামেন্টে সবারই লক্ষ্য থাকে, আমারও আছে। প্রথম থেকে সুযোগ পেলে আমি বড় ইনিংস খেলতে চাই।
শাহাদাত হোসেন দিপু (ডানহাতি অলরাউন্ডার):
একটা টুর্নামেন্ট খেলার পর আরেকটিতে সুযোগ পেলাম, অবশ্যই ভালো লাগছে। সুযোগ পেয়েছি, এটাকে কাজে লাগাতে পারলে আরও বেশি ভালো লাগবে। অনেকেই হয়তো সুযোগ পায়নি এই টুর্নামেন্টে, এটা সত্যি। সেখানে আমাদের সুযোগ হয়েছে। এটাকে কাজে লাগানো আমাদের জন্য বড় কর্তব্য। আমাদের সময় এখন প্রমাণ করার, প্রমাণ করতে হবে।
ভরসা করেই আমাদেরকে দলে নিয়েছে। তো আমাদের দায়িত্ব এখন প্রমাণ করা। ভালো করতে পারলে ভালো লাগবে। ভালো খেলার চাপ সবখানেই থাকে। কে কীভাবে দেখে, আমি জানি না। তবে আমি এমন কিছু অনুভব করি না। জায়গাটা যেখানেই হোক, আমি আমার সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করি। এর বাইরে আসলে অন্য কিছু নিয়ে ভাবি না কখনও।
রাকিবুল হাসান (বাঁহাতি স্পিনার):
তরুণ ক্রিকেটার হিসেবে ধারাবাহিকভাবে সুযোগ পাওয়াটা খুবই ইতিবাচক একটা বিষয়। কিছুদিন আগে একটা টুর্নামেন্টে খেলেছি, এখন এই লিগে সুযোগ হলো। আগের টুর্নামেন্টে ভালো বোলিং হলেও নিজের লক্ষ্য পূরণ করতে পারিনি, সেভাবে উইকেট পাইনি। এই টুর্নামেন্টে চেষ্টা করব লক্ষ্য পূরণ করার। আগের ভুল শুধরে ভালো করার চেষ্টা করব।
আমাদেরকে ধরাবাহিকভাবে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে মানে আমাদের ওপর আস্থা রাখা হচ্ছে। আমরা তরুণ যারা আছি, তারা চেষ্টা করব আস্থার মর্যাদা রাখতে। নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করব। ঘরোয়া ক্রিকেট যতো ভালো করব, ততো উন্নতি হবে, জাতীয় দলের ঢোকার রাস্তা সহজ হবে। পেশাদার ক্রিকেটে চাপ থাকবেই। এটা জয় করে ভালো করতে হবে। আমরা তরুণরা সেই চেষ্টাই করব। আগের চেয়ে এটা বড় টুর্নামেন্ট হবে। বেশি ক্রিকেটার থাকবেন, আমাদের শেখার ক্ষেত্রটা বড় থাকবে। সব জায়গা থেকেই শেখার চেষ্টা থাকবে।
শরিফুল ইসলাম (বাঁহাতি পেসার):
বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপে খেলেছি। ওখানে মোটামুটি পারফর্ম করেছি। এক ম্যাচ বেশ ভালো হয়েছে, ৪টা উইকেট পেয়েছিলাম। যদিও বাকি দুই ম্যাচে উইকেটশূন্য ছিলাম। এখন সামনে যে টুর্নামেন্টটা পাচ্ছি, এখানেও বোলিংয়ে ভালো করতে চাই। নিজের সেরাটা দিতে চাই।
এটা আমাদের জন্য অনেক বড় সুযোগ। কারণ এই টুর্নামেন্টে সবার খেলার সুযোগ হচ্ছে না। অনেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটারও সুযোগ পাননি। আমাদের ওপর আস্থা রেখে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আমরা যারা দল পেয়েছি, এটার মূল্য রাখার চেষ্টা করব। এখানে অনেক সিনিয়র ক্রিকেটার থাকবেন। তাদের সাথে স্বস্তিতে খেলা যায়। সিনিয়রদের সঙ্গে আগেও যতবার খেলেছি, নির্ভার হয়ে খেলেছি। এবারও একইভাবে খেলে নিজেকে প্রমাণ করতে চাই।